মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুদ্ধ বন্ধে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ ছাড়া উভয় নেতা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সৌদি আরবে বসবেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার দুই নেতার মধ্যে এ ফোনালাপ হয়েছে। ট্রাম্প ও জেলেনস্কি ফোনালাপে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি ট্রাম্পকে যুদ্ধ বন্ধে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দুই নেতার এ ফোনালাপকে ‘দুর্দান্ত’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
এ ছাড়া ফোনালাপে জেলেনস্কির পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে তার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। সৌদি আরবে শান্তিচুক্তির আলোচনা নিয়ে কারিগরি দলের কাজের ব্যাপারে দুই নেতা একমত হয়েছেন।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের মুখোমুখি বৈঠকে বাগ্বিতণ্ডা হয়েছিল। এরপর এই প্রথম দুই নেতা আবার কথা বললেন।
নতুন করে ট্রাম্পের সঙ্গে কথোপকথনকে ‘ইতিবাচক, অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ও ‘স্পষ্ট’ বলে বর্ণনা করে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা আংশিক যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে সমস্যাগুলো সমাধানের নির্দেশ দিয়েছি। শান্তি আলোচনা অব্যাহত রাখতে ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্র আগামী দিনে সৌদি আরবে বৈঠকে বসতে প্রস্তুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরো যুদ্ধ শেষ করার জন্য প্রথম পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে জ্বালানি অবকাঠামো ও বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধ করা। আমি এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছি এবং আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে প্রস্তুত।’
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউস জানায়, জেলেনস্কির পক্ষ থেকে ট্রাম্পের কাছে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চাওয়া হয়। ট্রাম্প বলেন, তিনি ইউরোপে প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জাম খুঁজে পেতে সাহায্য করবেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে জেলেনস্কিকে জানানো হয়। ওই ফোনালাপে পুতিনের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের দেওয়া ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। ওই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল ইউক্রেন। তবে পুতিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ না করলেও জ্বালানি অবকাঠামো হামলা বন্ধের বিষয়ে রাজি হন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বুধবার অবশ্য আবার জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় ওই যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সুযোগ নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় দুই দেশ ১৭৫ জন করে বন্দী বিনিময়ে রাজি হয়েছে।
মস্কো জানিয়েছে, তারা শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে আরও ২২ জন আহত ইউক্রেনীয়কে মুক্তি দিয়েছে।
অন্যদিকে জেলেনস্কি ট্রাম্পকে রুশ অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধ করার জন্য কিয়েভের প্রস্তুতি ও যুদ্ধবিরতির প্রতি তার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সূত্র: প্রথমআলো