শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ মার্চ, ২০২৫, ০১:৪৩ রাত
আপডেট : ১৬ মার্চ, ২০২৫, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ৩৬টি প্রশ্ন পাঠালো জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থাগুলোর কাছে

জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থাগুলোর কাছে একটি প্রশ্নামালা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই প্রশ্নগুলোর একটিতে জানতে চাওয়া হয়েছে - আপনার কি কমিউনিস্ট সংযোগ আছে? বা আপনার কি যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী সংশ্লিষ্টতা আছে? বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মানবিক সংস্থাগুলো, যেমন: জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) এই প্রশ্নামালা পেয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

 এই ৩৬টি প্রশ্ন বিশিষ্ট ফর্মটি যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট (ওএমবি) পাঠিয়েছে, যা বিবিসির হাতে এসেছে। 

ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক। ইতোমধ্যেই দেশটি বিদেশি সাহায্যের বেশিরভাগ কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছে।

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক কার্যক্রম থেকে পুরোপুরি সরে যাওয়ার কিংবা জাতিসংঘ ত্যাগ করার ইঙ্গিত দিতে পারে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে বেরিয়ে এসেছে।

এ সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা করেছেন যে, ইউএসএআইডি’র অধিকাংশ কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জরিপ অনুযায়ী, বেশিরভাগ আমেরিকান বিশ্বাস করেন যে দেশটি বিদেশি সাহায্যে অতিরিক্ত ব্যয় করে। 

যুক্তরাষ্ট্র তার জিডিপির তুলনায় ইউরোপীয় দেশগুলোর চেয়ে কম ব্যয় করলেও, বিশাল অর্থনীতির কারণে এখনও বৈশ্বিক মানবিক তহবিলের ৪০শতাংশই অর্থায়ন করে।

যে-সব জাতিসংঘ সংস্থা এই ফর্ম পেয়েছে, তারা শুধু ইউএসএআইডি থেকেই নয় সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকেও তহবিল পেয়ে থাকে।

একটি প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে: ‘আপনার সংস্থা কি নিশ্চিত করতে পারে যে এটি কোনও কমিউনিস্ট, সমাজতান্ত্রিক বা স্বৈরাচারী দলের সঙ্গে, অথবা কোনও দল যা আমেরিকানবিরোধী মতবাদ প্রচার করে, তাদের সাথে কাজ করে না?’

অন্য একটি প্রশ্নে সংস্থাগুলোর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, তারা চীন, রাশিয়া, কিউবা বা ইরানের কাছ থেকে কোনও অর্থায়ন পায় কি না? যদিও এসব দেশ ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠ মিত্র নয়, তবুও জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মতো তারাও বড় মানবিক সংস্থাগুলোর অর্থায়নে অংশগ্রহণ করে।

অন্য কিছু প্রশ্নে সাহায্য সংস্থাগুলোকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে যে তাদের কোনও প্রকল্পের মধ্যে ডিইআই (বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি) বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত নেই।
কিছু প্রশ্ন আবার ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রতিফলন ঘটায়।

যেমন: একটি প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে, কোনও প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ চেইন শক্তিশালী করার বা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করে কিনা?
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এক হতাশ মানবাধিকার কর্মী জানিয়েছেন,  এটি এমন, যেন কাউকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, 'আপনি কি আপনার সন্তানকে মারধর করা বন্ধ করেছেন? হ্যাঁ বা না?' 

এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, যেহেতু এগুলো মূলত হ্যাঁ/না ধরনের প্রশ্ন ছিল এবং ব্যাখ্যার খুব সীমিত সুযোগ ছিল, এবং যেহেতু কিছু প্রশ্ন জাতিসংঘের জন্য প্রযোজ্য ছিল না, তাই আমরা সরাসরি অনলাইন প্রশ্নমালার উত্তর দিতে পারিনি। আমরা ই-মেইলের মাধ্যমে যতটা সম্ভব ব্যাখ্যাসহ জবাব দিয়েছি। 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়