শিরোনাম
◈ শেখ পরিবারের নামে থাকা সেনানিবাসসহ ১৬ সামরিক প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব ◈ আমি বাসায় এসেছি, ভালো আছি তবে বেশ কিছুদিন নিবিড় পরিচর্যায় থাকতে হবে: পিনাকী ভট্টাচার্য ◈ মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: প্রধান আসামি হিটু শেখ ৭ দিনের রিমান্ডে ◈ পুরস্কার বিতরণে জায়গা হয়নি আয়োজক পাকিস্তানের, ক্ষুব্ধ শোয়েব ◈ স্টারলিংক বাংলাদেশে অর্থনীতি ও নারীর ক্ষমতায়নে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে: বিশেষজ্ঞদের মত ◈ বনানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী পোশাক শ্রমিক নিহত, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, তীব্র যানজট ◈ নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার রাউন্ড হবে পাকিস্তানে  ◈ পাকিস্তানে গিয়ে ভারতীয় ব্যাটারদের খেলতে না পারা আক্ষেপের: সৌরভ গাঙ্গুলি ◈ অর্থের উৎস নিয়ে ছাত্রদল-শিবিরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, সংগঠনগুলোর আয়ের উৎস কী? ◈ দুই মাসে নির্যাতিত ২৯৪ নারী, ধর্ষণের শিকার ৯৬

প্রকাশিত : ১০ মার্চ, ২০২৫, ০১:০০ রাত
আপডেট : ১০ মার্চ, ২০২৫, ১২:১২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নির্বাচনী প্রচারণায় শেখ হাসিনার প্রতি জোর: ভারত 'অন্তর্ভুক্তিমূলক' নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে: টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন

বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিষয়ে জোর দিয়েছে ভারত। ‘অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন আহ্বান তাদের। গতকাল প্রভাবশালী অনলাইন ডেইলি টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে। সাংবাদিক দেবাদীপ পুরোহিতের লেখা ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘শেখ হাসিনা থ্রাস্ট ইন বাংলাদেশ পোল প্রোড: ইন্ডিয়া কলস ফর ইনক্লুসিভ ইলেকশন’। এতে আরও বলা হয়, সাত মাস আগে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তারপর থেকে নয়াদিল্লি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন হওয়া উচিত অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক। গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দু’টি খুব তীক্ষ্ণ বিষয়ের ইঙ্গিত দিয়েছে। তা হলো, বর্তমানে ভারতে থাকা শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে রাখা উচিত নয়। অন্যটি হলো বিদ্যুতের বর্ধিত লিজের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগকে হালকাভাবে দেখছে ভারত। পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশী বাংলাদেশ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন- ‘স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন করি আমরা, যেখানে সব সমস্যার সমাধান হতে হবে গণতান্ত্রিক উপায়ে, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে’। 

টেলিগ্রাফ আরও লিখেছে, গত আগস্টে শেখ হাসিনা রাজপথের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তী সরকার। তখন থেকেই বাংলাদেশ টালমাটাল। তাড়াতাড়ি নির্বাচন দেয়ার দাবি জোরালো থেকে আরও জোরালো হচ্ছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই সরকার আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে। অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর  থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচনের একটি টাইমফ্রেম ঘোষণা করেছেন ড. ইউনূস। তবে কোনো রোডম্যাপের বিষয়ে জোর দেননি। কিছু কিছু তরুণ নেতা- যারা নিজেদের ছাত্র বলে দাবি করেন এবং ড. ইউনূসের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব আছে, তারা বলছেন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কার হওয়া উচিত। বার বার তাদের এমন দাবির ফলে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। জামায়াতে ইসলামী এবং নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীর থেকে বেরিয়ে আসা এমন কিছু তরুণ নেতা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দাবি করেন। তাদের একজন সারজিস আলম। তিনি নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার বিচার করে তার ফাঁসি দাবি করেছেন। ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে গভীর সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এখন রাজনৈতিক এই প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূসের নির্বাচন তদারকি করার ক্ষমতা বা ম্যান্ডেট আছে কিনা তাও প্রশ্ন। 

শেখ হাসিনার দলের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্বেষ আছে। দেশ জুড়ে এ দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে যে দমনপীড়ন চলছে, তাতে সেই বিদ্বেষ প্রতিফলিত হয়। ফলে বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে কেউ কেউ বিশ্বাস করছেন নির্বাচন হওয়া উচিত একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তানিয়া আমির বলেন, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে অন্তর্বর্তী সরকারকে শপথ পড়ানো হয়েছিল। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানে সর্বশেষ অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান আছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হওয়া উচিত। জেল থেকে যেসব অভিযুক্ত সন্ত্রাসী মুক্তি পেয়েছেন সারা দেশে তাদের গ্রেপ্তারের পক্ষে পরামর্শ দিয়েছেন তানিয়া আমির। সরকারের আশীর্বাদে থাকা এসব দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পক্ষে তিনি। ওইসব অস্ত্র গত ছয় মাসে বা তারও বেশি সময়ে আইনপ্রয়োগকারী এজেন্সির লোকদের কাছ থেকে লুট করা হয়েছিল। 

রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে একই রকম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যেখানে সব রকমের অপরাধ, বিশেষ করে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে আমরা উদ্বিগ্ন। গুরুতর অপরাধের জন্য সাজা হয়েছিল এমন ভয়াবহ উগ্রপন্থিদের মুক্তি দেয়ার কারণে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহভাবে বেড়েছে। সম্প্রতি বিবিসিকে ড. ইউনূস এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে অপরাধের হার বৃদ্ধি পায়নি। তার এই যুক্তির খণ্ডন হিসেবে দেখা যেতে পারে রণধীর জয়সওয়ালের বক্তব্য। ড. ইউনূসের প্রতি নমনীয় ঢাকার এমন একটি প্রকাশনা সম্প্রতি পুলিশের রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেছে, গত ছয় মাসে বাংলাদেশে ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৫০ ভাগ। পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, বেশির ভাগ অপরাধের রিপোর্ট করা হয় না। ফলে এর প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। 

ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে স্পর্শ করে জয়সওয়াল বলেন, হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষিত রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব। একই সঙ্গে তাদের সহায় সম্পত্তি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষা করাও তাদের দায়িত্ব। জয়সওয়াল বলেন- ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৩৭৪টি ঘটনার মধ্যে মাত্র ১২৫৪টি রিপোর্ট করা হয়েছে। এসব সংখ্যার সত্যতা যাচাই করেছে পুলিশ। এই ১২৫৪টি ঘটনার মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগকে মনে করা হয় ‘রাজনৈতিক প্রকৃতির’। আমরা আশা করি এসব খুন, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবে বাংলাদেশ এবং এর সঙ্গে জড়িতদের কোনো রকম ব্যতিক্রম না করে বিচারের আওতায় আনবে। জয়সওয়াল আরও বলেন, ৬ই মার্চ কলকাতায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা পানি চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে নজরদারি করতে যৌথ কমিটির ৮৬তম বৈঠক হয়েছে। তিনি বলেন, এই বৈঠকের পর দুই পক্ষই গঙ্গা পানি চুক্তি, পানিপ্রবাহ পরিমাপ এবং পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয় সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। অনুবাদ: মানবজমিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়