বিদেশি শক্তির মাধ্যমে ব্যবহৃত ভিন্নমতাবলম্বীদের কোনো শাস্তি ছাড়াই দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির স্টেট সিকিউরিটির প্রেসিডেন্ট আবদুলআজিজ আল-হোয়ারিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের দেশে ফিরতে বাধা নেই যদি তারা গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হয়ে থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, সৌদি আরব শাস্তির পরিবর্তে পুনর্বাসনের ওপর জোর দিচ্ছে এবং তাদের ফেরার বিষয়টি গোপন রাখা হবে। খবর সৌদি গেজেটের।
রোববার (২ মার্চ) এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে আল-হোয়ারিনি জানিয়েছেন, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে এই উন্মুক্ত আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, যারা ভুল পথে পরিচালিত হয়ে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, কিন্তু কোনো গুরুতর অপরাধে জড়িত নন, তারা শাস্তি ছাড়াই দেশে ফিরতে পারবে।
কিভাবে দেশে ফেরা যাবে, এ প্রসঙ্গে আল-হোয়ারিনি জানিয়েছেন, দেশে ফেরার ইচ্ছা থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সরাসরি নির্ধারিত নম্বর (৯৯০)-এ যোগাযোগ করে নিজের পরিচয় ও অবস্থান জানাতে পারেন। এছাড়া, পরিবারের কোনো সদস্যের মাধ্যমেও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে।
তিনি আরও জানান, সৌদি আরবের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত দূতাবাসগুলো এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে এবং নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের নিশ্চয়তা দিবে।
নাম প্রকাশ করা হবে না: স্টেট সিকিউরিটির প্রধান স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, যারা দেশে ফিরবে, তাদের নাম বা পরিচয় প্রকাশ করা হবে না। এর মাধ্যমে সৌদি আরব পুনর্বাসনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
সাক্ষাৎকারে আল-হোয়ারিনি আরও উল্লেখ করেন যে, উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সৌদি সমাজ। তিনি জানান, সৌদি আরবে বর্তমানে যে বন্দিরা রয়েছে, তাদের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবার বা পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় আটক করা হয়েছে।
তার মতে, পরিবারের সদস্যরা এখন আরও বেশি সচেতন হয়ে উঠেছে এবং তারা বুঝতে পারছে যে, রাষ্ট্র নাগরিকদের রক্ষা করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে যাতে তারা উগ্রবাদীদের হাতিয়ার না হয়।
জনপ্রিয় টেলিভিশন শো ‘হিকায়াত ওয়াদ’ (প্রমিজ স্টোরি)-এর সর্বশেষ পর্বে সৌদি আরবের সন্ত্রাসবাদবিরোধী কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেখানে দেশের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সৌদি আরবে উগ্রবাদ দমনের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
সৌদি সরকারের এই পদক্ষেপ ভিন্নমতাবলম্বীদের জন্য একটি নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে, যেখানে তারা শাস্তির ভয় ছাড়াই দেশে ফিরে পুনর্বাসনের সুযোগ পেতে পারে।