যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার পর যুক্তরাজ্য সফরে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের এক দিনের মাথায় তাকে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়েছে ব্রিটেন। সেখানকার প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার জেলেনস্কিকে দেখেই বুকে জড়িয়ে ধরেন।
সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি ইউরোজোনের দেশগুলোর ইউরোপীয় নেতাদের সম্মেলনে যোগ দেবেন জেলেনস্কি।
সম্মেলনটির আয়োজন করছেন কিয়ার স্টারমার। ইউক্রেইন এবং রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধ অবসান নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা চলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেইনের খনিজ সম্পদ চুক্তি করার আগে দিয়ে এই আলোচনা হচ্ছে। এই চুক্তি করা নিয়েই হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বাদানুবাদে জড়িয়েছিলেন জেলেনস্কি। ফলে খনিজ চুক্তি আর সই হয়নি। ট্রাম্পের সঙ্গে এই বিরূপ সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে জেলেনস্কিকে সমর্থন দিচ্ছেন ইউরোপীয় নেতারা। বেশ কিছু সংখ্যক ইউরোপীয় নেতা গত ২৮ ফেব্রুয়ারিতেই জেলেনস্কিকে দৃঢ় সমর্থন দিয়েছেন।
এর মধ্যে আছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টও।
আর যুক্তরাজ্যকে যুদ্ধের শুরু থেকেই মিত্র হিসেবে পেয়েছে ইউক্রেইন। ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের জন্য যুক্তরাজ্য দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্টারমারের পূর্বসূরি ঋষি সুনাক।
এবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বাকবিতন্ডার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও ইউক্রেইনেকে ‘নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন’ দিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ওদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজও বলেছেন, যত দিন প্রয়োজন ইউক্রেইনের পাশে থাকবেন তিনি।
জানা গেছে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একটি ঋণের নথিতেও স্বাক্ষর করেছে ব্রিটেন প্রশাসন।
স্টারমার জানিয়েছেন, তার দেশ ইউক্রেনের পাশেই আছে। কারণ ইউক্রেনে শান্তি ফেরা ব্রিটেনের জন্যও জরুরি। জেলেনস্কিকে তিনি বলেন, ‘এই ডাউনিং স্ট্রিটে আপনাকে স্বাগত। বাইরের রাস্তা থেকে আপনি নিশ্চয় লোকজনের উচ্ছ্বসিত চিৎকার শুনেছেন। ব্রিটেনের পূর্ণ সমর্থন আপনার সঙ্গে রয়েছে। আমরা সবসময় ইউক্রেনের পাশে থাকব।’
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক ব্যর্থ হওয়া এবং হোয়াইট হাউসে তাদের বাদানুবাদের কথা প্রকাশ্যে আসার পর ইউরোপ পাশে দাঁড়িয়েছিল ইউক্রেনের। ইউরোপের একাধিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তার এক দিন পরেই ব্রিটেনে সাদর অভ্যর্থনা পেলেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধান।