শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৫১ দুপুর
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে কারণে বাধ্য হয়ে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে কিডনি বিক্রি করছে!

আর্থিক টানাপোড়েনে অনেকটা বাধ্য হয়ে ভারতে গিয়ে কিডনি বিক্রি করছে মিয়ানমারের গ্রামবাসীরা। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। এই কারণে অনেক গ্রামবাসী বাধ্য হয়ে অবৈধভাবে পাড়ি জমান ভারতে। উদ্দেশ্য একটাই- কিডনি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করা।

এ বিষয়ে মিয়ানমারের একজন কৃষিকর্মী জেয়া বলেন, ‘আমি কেবল একটি বাড়ি কিনতে এবং ঋণ পরিশোধ করতে চেয়েছিলাম। মূলত, সেই কারণেই আমি আমার কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে কয়েক ঘণ্টার দূরত্বে জেয়ার গ্রাম। ওই গ্রামে মোট আটজনের সন্ধান পেয়েছে বিবিসি; যারা কিডনি বিক্রি করার জন্য অবৈধভাবে ভারতে পাড়ি জানান।

মায়ানমার ও ভারত উভয় দেশেই মানব অঙ্গ কেনা বা বিক্রি করা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। কিন্তু জেয়া বলেন যে আর্থিক সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পেতে তিনি একজন দালালের সন্ধান পান, যিনি প্রথমে জেয়ার মেডিকেল পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। এরপর কয়েক সপ্তাহ পরে তাকে ওই দালাল একজন সম্ভাব্য গ্রহীতা পাওয়ার খবর জানান। উভয়ের অস্ত্রোপচারের জন্য ভারতে যেতে হবে বলে জেয়াকে জানান ওই অভিযুক্ত দালাল।

জেয়া আরও বলেন, ‘এরপর ওই দালাল একটি জাল নথি তৈরি করে, যা পরিবারের সদস্যদের বিবরণ তালিকাভুক্ত করে। এরপর ওই নথিতে দেখা যায়, দালাল প্রাপকের বংশতালিকায় আমার নাম লিখেছে।’

জেয়ার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত দালাল বিষয়টিকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছিলো যেন সে বিবাহের মাধ্যমে নিকট সম্পর্কের কাউকে কিডনি দান করছে। এমন কেউ যিনি রক্তের আত্মীয় নন, বরং দূর সম্পর্কের আত্মীয়।

এদিকে, ভারতে কিডনি অস্ত্রপ্রচারে রয়েছে জটিলতা। ভারতে যদি দাতা এবং গ্রহীতা নিকটাত্মীয় না হন, তাহলে তাদের প্রমাণ করতে হবে যে উদ্দেশ্যটি পরোপকারী এবং তাদের মধ্যকার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করতে হবে। যদি ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে অস্ত্রপ্রচার করা হয় না।

তবে জরিপ বলছে, ভারতে অবৈধভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করার জন্য রয়েছে একাধিক চক্র। শুধু ভারতে নয়, অবৈধ মানব অঙ্গ ব্যবসা এশিয়া জুড়ে একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ২০১০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী কিডনি প্রতিস্থাপন ৫০% এরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে জরিপ বলছে যে কিডনি প্রতিস্থাপন বিশ্বব্যাপী চাহিদার মাত্র ১০% পূরণ করে।

প্রায় সব দেশেই মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবসা অবৈধ এবং এটি পরিমাপ করা কঠিন। ২০০৭ সালে ডব্লিউএইচও অনুমান করেছিলো যে প্রতিস্থাপিত কিডনির ৫ থেকে ১০% কালোবাজার থেকে আসে। তবে, প্রকৃত সংখ্যাটি আরও বেশি হতে পারে।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দারিদ্র্যের কারণে অবৈধ কিডনি বিক্রির ঘটনাগুলো নেপাল, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশসহ এশিয়া জুড়ে বেশি হয়েছে। সূত্র : যমুনাটিভি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়