শিরোনাম
◈ অক্সফোর্ড কলেজে শতাব্দীর রীতি: দাস নারীর খুলিতে তৈরি পাত্রে পরিবেশন হতো পানীয়! ◈ বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কম: বাণিজ্যিক ব্যাংকের ওপর সরকারের নির্ভরতা বেড়েছে ◈ বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ চুক্তি নবায়ন করবে কাতার ◈ বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল, গ্রেফতার ১০ ◈ আওয়ামীপন্থি সেই ৬১ আইনজীবীর হাইকোর্টে জামিন ◈ কুয়েট ভিসির অপসারণের দাবিতে দেড় ঘণ্টা অবরোধের পর কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়ল শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সংস্কার হচ্ছে, ভাঙচুর নয় ◈ পারভেজ হত্যা: ‘দুই বান্ধবীকে’ খুঁজছে পুলিশ ◈ ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল: এবার নতুন তথ্য দিলেন ভারতের সাবেক বাণিজ্য কর্মকর্তা ◈ সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডিসি নাজমুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

প্রকাশিত : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:০৩ রাত
আপডেট : ২৩ মার্চ, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

খনিজ নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ইউক্রেনের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ৫০ শতাংশ হস্তান্তরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার এক গোপন বৈঠকে এই প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল বলে পাঁচ সূত্র নিশ্চিত করেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এ খবর জানিয়েছে।

দুই ইউরোপীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই অস্বাভাবিক চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সব খনিজ সম্পদ, যার মধ্যে গ্রাফাইট, লিথিয়াম ও ইউরেনিয়াম রয়েছে, তার ৫০ শতাংশ মালিকানা পেতে চেয়েছে। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট রবিবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই খনিজ সম্পদ চায় তাদের দেওয়া সহযোগিতার বিনিময়ে। তবে এই চুক্তি ভবিষ্যতে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।

ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা ও এক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন শুধু ইউক্রেনের খনিজ সম্পদই নয়, তেল ও গ্যাসসহ অতিরিক্ত প্রাকৃতিক সম্পদও চেয়েছে। তারা বলেছেন, এই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সম্পদ আহরণ থেকে অর্জিত আয়ের ৫০ শতাংশ পাওয়ার অধিকার পাবে—যে অর্থ বর্তমানে দেশটির সামরিক ও প্রতিরক্ষা উৎপাদনে বিনিয়োগ করা হয়।

জেলেনস্কি মিত্রদের সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ ব্যবহারের বিষয়ে উন্মুক্ত মনোভাব দেখিয়েছেন। তবে তিনি এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন, কারণ এটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও গ্যারান্টি দেয়নি।

এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রস্তাবের ব্যাপকতা এবং এর পারিপার্শ্বিকতা ঘিরে উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনা কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান মার্কিন সহায়তা এবং যুদ্ধের সম্ভাব্য সমাপ্তি নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিভেদকে তুলে ধরছে।

বুধবার বেসেন্ট কিয়েভে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ৫০ শতাংশ দাবি করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের কোনও কর্মকর্তার এটিই ইউক্রেন সফর। ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট আলোচনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

দ্বিতীয় ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রস্তাবটি দেখার পর ইউক্রেনীয়রা বিশদ পর্যালোচনা করে শুক্রবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জেলেনস্কির মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে. ডি. ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকের সময় একটি পাল্টা প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

জেলেনস্কি শনিবার মিউনিখে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি চুক্তির শর্তাবলি উল্লেখ না করে শুধু বলেছেন যে এতে নিরাপত্তা গ্যারান্টি অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

নিরাপত্তা গ্যারান্টি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ইউক্রেনীয়রা মনে করে যে শীতল যুদ্ধের শেষে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির অধীনে দেশটিকে রক্ষা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ওই সময় ইউক্রেন সোভিয়েত আমলের রুশ পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করেছিল।

ইউরোপীয় কূটনীতিকরা আরও একটি আপত্তি তুলেছেন। তারা অভিযোগ করেছেন যে, এই প্রস্তাবটি ঔপনিবেশিক যুগের মতো, যখন পশ্চিমা দেশগুলো ছোট বা দুর্বল দেশগুলোকে পণ্যের জন্য শোষণ করত।

বেসেন্টের প্রস্তাব সম্পর্কে অবহিত ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, প্রস্তাবটিতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সম্পদ আহরণ থেকে অর্জিত আয়ের ৫০ শতাংশ এবং নতুন আহরণ লাইসেন্স বিক্রি থেকে অর্জিত আয়ের ৫০ শতাংশ পাওয়ার দাবি করেছে।

গত বছরের প্রথমার্ধে ইউক্রেনের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও গ্যাস কোম্পানি নাফ্টোগাজ আধা বিলিয়ন ডলারের বেশি লাভের রিপোর্ট করেছে।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেছেন, প্রস্তাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র যে লাভ পাবে তার একটি অংশ ইউক্রেনের যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠনে পুনর্বিনিয়োগ করবে। প্রস্তাবটিতে আরও বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজ রফতানির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।

কিয়েভ স্কুল অব ইকোনমিক্সের সংকলিত একটি তালিকা অনুযায়ী ইউক্রেনে ১০৯টি উল্লেখযোগ্য খনিজ ভাণ্ডার রয়েছে। যার মধ্যে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্র ছাড়াও টাইটানিয়াম, লিথিয়াম ও ইউরেনিয়ামের আকরিক রয়েছে। তবে কিছু ভাণ্ডার ইতোমধ্যেই রাশিয়ার দখলে বা যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনের কাছাকাছি।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়