ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি বিনিময় শুরু হওয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা (লাইন অব কন্ট্রোল) বরাবর যুদ্ধবিমান, ট্যাংক ও সাজোয়া যান মোতায়েন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির ঘোষণা দিয়েছেন, "কাশ্মীরের জন্য দশটি যুদ্ধ হলেও করব, একদিন পুরো কাশ্মীর পাকিস্তানের হবে।"
এর পরপরই সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয়। পাকিস্তানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই গোলাগুলিতে তাদের সেনাবাহিনীর দুই সদস্য ও দুইজন সাধারণ নাগরিক আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তান একতরফাভাবে গুলি চালালে তারা পাল্টা জবাব দেয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চে পাকিস্তানি সেনারা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে। পাল্টা হামলায় পাকিস্তান ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, যদিও পাকিস্তান এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এই সংঘর্ষ এমন এক সময়ে ঘটল, যখন কাশ্মীরে একটি আইইডি বিস্ফোরণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। এর মাত্র দুই দিন আগেই সংঘর্ষবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তবে এই নতুন উত্তেজনার ফলে সেই চুক্তি লঙ্ঘিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমান্তে উচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করেছে। একই সঙ্গে পিটিআই জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানি সেনারা সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে, যার ফলে ভারতীয় বাহিনী পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের আখনুরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় তল্লাশি অভিযানের সময় বিস্ফোরণে নিহত হন দুই ভারতীয় সেনা। এর পরের দিন কৃষ্ণা ঘাঁটি সেক্টরে আবারও যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের সেনারা ভারতীয় সেনাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে এক জুনিয়র কমিশন অফিসার গুরুতর আহত হন। ওই কর্মকর্তা সীমান্তের কাছে টহল দেওয়ার সময় বিস্ফোরণের কবলে পড়েন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এই উত্তেজনা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :