ভারতে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠাতে কেন বিলম্ব হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আদালত দেশটির কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলে। আদালত মন্তব্য করে যে, এই ধরনের বিলম্ব দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। অন্য কোনো দেশে এমন শিথিলতা হয়তো সহ্য করা হতো না। খবর দ্য ডেকান হেরাল্ডের।
বিচারপতি জে. বি. পার্দিওয়ালা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে উপস্থিত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটিকে প্রশ্ন করেন, 'এই অবৈধ অভিবাসীদের রাখার জন্য কতগুলো সংশোধনাগার তৈরি করা হবে? কতদিন পর্যন্ত তাদের সেখানে আটকে রাখা হবে?' বিচারক আরও বলেন, 'যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের কারণে আটক রয়েছেন, তাদের আশ্রয় ও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। যদি তারা অন্য কোনো দেশে থাকতেন, হয়তো এতদিনে তারা মারা যেতেন।'
২০১৩ সালের একটি পিটিশনের শুনানির সময় বিচারপতি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি আর. মহাদেবনের বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। পিটিশনে উল্লেখ করা হয় যে, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত অভিবাসীরা তাদের কারাদণ্ড শেষ হওয়ার পরও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী আছেন।
কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের প্রধান মাজা দারুওয়ালা ২০১১ সালে কলকাতা হাইকোর্টের তখনকার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে আটক অভিবাসীদের দুর্দশার কথা জানান। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টে এই আবেদন স্থানান্তরিত হয়, কারণ তখন অন্যান্য রাজ্যেও অবৈধ অভিবাসন ইস্যু নিয়ে বিচার চলছিল।
গত মঙ্গলবার শুনানির শেষ দিনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবী জানান, অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে অন্যতম বড় বাধা হলো বাংলাদেশের সরকারের কাছ থেকে তাদের পরিচয় যাচাই এবং নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া।
এ প্রসঙ্গে বিচারপতি পার্দিওয়ালা বলেন, 'যখন একজন অভিবাসীকে আটক রাখা হয় এবং বিদেশি আইন অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তখন প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে তার জাতীয়তার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা কেন?'
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি জানান, ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এই প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হচ্ছে। তবে সরকার দ্রুত প্রক্রিয়া শেষ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উৎস: অনুবাদ: চ্যানেল২৪
আপনার মতামত লিখুন :