শিরোনাম
◈ লজ্জা না থাকলে বাধ্য করেই সরানো হোক কুয়েট ভিসিকে: সারজিস আলম ◈ শেষ মি‌নি‌টের গো‌লে অ্যাস্টন ভিলাকে হারা‌লো ম্যানচেস্টার সিটি ◈ পিএসএল: রিশাদ ২ উইকেট পে‌লেও তার দল লাহোর কালান্দাস হে‌রে গে‌ছে  ◈ বিয়ে করলে বা বাচ্চা হলেই মিলবে টাকা, অঢেল সুযোগ! জন্মহার বৃদ্ধি করতে পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের ◈ অক্সফোর্ড কলেজে শতাব্দীর রীতি: দাস নারীর খুলিতে তৈরি পাত্রে পরিবেশন হতো পানীয়! ◈ বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কম: বাণিজ্যিক ব্যাংকের ওপর সরকারের নির্ভরতা বেড়েছে ◈ বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ চুক্তি নবায়ন করবে কাতার ◈ বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল, গ্রেফতার ১০ ◈ আওয়ামীপন্থি সেই ৬১ আইনজীবীর হাইকোর্টে জামিন ◈ কুয়েট ভিসির অপসারণের দাবিতে দেড় ঘণ্টা অবরোধের পর কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়ল শিক্ষার্থীরা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৯:৩১ সকাল
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গাজায় পুনর্গঠনের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো; সমগ্র বিশ্বের দায়িত্ব

পার্সটুডে-যে সপ্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা পুনর্নির্মাণের অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের "জাতিগতভাবে নির্মূল" করার আহ্বান জানিয়েছেন, তখনই ধ্বংসের পরিমাণ বিবেচনা করে গাজার পুনর্নির্মাণের পদ্ধতি এবং সময়কাল সম্পর্কিত সমস্যাগুলো আগের চেয়ে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাব ফিলিস্তিনি এবং ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের কাছে ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয়েছে। কেননা ওই প্রস্তাবে দুই মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে অন্যান্য দেশে অস্থায়ী পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতিসহ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার কথা বলা হয়েছে। ইসনা'র উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডে আরও জানায়, জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেছেন: গাজা উপত্যকা ফিলিস্তিনি জনগণের এবং এটি কোনও পরিত্যক্ত ভূমি নয় যা কেউ দখল করতে পারবে।

এ প্রসঙ্গে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল লিখেছে: গাজার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হোক বা না হোক, ফিলাডেলফিয়া আকারের বিশাল গাজা পুনর্নির্মাণ ব্যয়ের পরিমাণ ব্যাপক বিশাল।

জাতিসংঘ বলছে: গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২ লাখ ৪৫ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার যুদ্ধ আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক নগর যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা বলেছে তাদের এলাকাগুলো চেনা যাচ্ছে না, রাস্তাঘাট উল্টেপাল্টে গেছে এবং সর্বত্র অবিস্ফোরিত বোমা পড়ে আছে। কয়েক মাস ধরে বোমাবর্ষণের ফলে সৃষ্ট আনুমানিক ৫ কোটি টন ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে এক দশকেরও বেশি সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ কৃষিক্ষেত ধ্বংস

গাজার প্রায় ৪০ শতাংশই কৃষিজমি। যুদ্ধের আগে কৃষকরা গবাদি পশু পালন করতেন এবং স্ট্রবেরি, জলপাই ও বেগুনসহ ফল ও সবজি চাষ করতেন। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুসারে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যুদ্ধের আগে গাজা শহর ছিল একটি ব্যস্ত সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখন ৩৭ হাজার কাঠামো নিয়ে যে গাজা অঞ্চল রয়েছে সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠামোর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

ইউনেস্কোর ভাষ্যমতে, এতে ৭০টি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক স্থাপনা রয়েছে। যেমন গ্রেট উমরি মসজিদ এবং বিশ্বের প্রাচীনতম গির্জাগুলির অন্যতম সেন্ট পোরফিরিউস চার্চ। গাজা বন্দরের আশেপাশে বেশ কিছু হোটেল ছিল যেখানে কিছু বিদেশী সাংবাদিক এবং সাহায্যকর্মীদের আসা-যাওয়া ছিল। গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে। স্যাটেলাইট ছবিতে বন্দর এবং উপকূলের ধ্বংসস্তূপ দেখা যাচ্ছে, যেখানে বোমা বিস্ফোরণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হোটেলও রয়েছে।

গাজার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ধ্বংস

গাজার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ক্ষতির ফলে আবর্জনা জমে উঠেছে। অনুমান করা হচ্ছে যে উত্তর গাজার ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্য সুবিধা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজা শহরে একই সুবিধাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। উপকূলীয় অঞ্চলে নোনা পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা জ্বালানির প্রয়োজনে যে বৈদ্যুতিক পাম্পের ওপর নির্ভর করে, সেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন গাজা পুনর্নির্মাণের জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। জাতিসংঘের অনুমান অনুসারে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা যুদ্ধ-পূর্ব স্তরে ফিরিয়ে আনতে ৩৫০ বছর সময় লাগবে।

গাজায় নির্মাণ সামগ্রী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

২০০৭ সালে আরোপিত ইসরাইলি অবরোধের অন্যতম দিক হলো গাজা উপত্যকায় নির্মাণ সামগ্রী প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা। প্রথম পর্যায়ে ধ্বংসাবশেষ নিয়ে আলোচনা রয়েছে। ইউএন-হ্যাবিট্যাট এবং জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির হিসাব অনুসারে ডিসেম্বরে গাজায় ৫ কোটি টন ধ্বংসাবশেষ এবং আবর্জনা ছিল, যা ২০০৮ সাল থেকে এ অঞ্চলে অন্যান্য সমস্ত যুদ্ধে উৎপন্ন মোট বর্জ্যের চেয়ে ১৭ গুণ বেশি।

জাতিসংঘের অনুমান, এসব বর্জ্য পরিষ্কার করতে ২০ বছর পর্যন্ত সময় লাগবে এবং ৯০৯ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে। গাজা পুনর্নির্মাণে কত সময় লাগবে তা সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভর করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়