জাতিগত সংঘাতে গত ২ বছর ধরে অশান্ত ভারতের মণিপুর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করেছেন। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ইম্ফলে রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লার হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন তিনি।
পদত্যাগপত্রে বীরেন সিং লিখেছেন, ‘মণিপুরের মানুষের সেবা করতে পেরে আমি সম্মানিত। কেন্দ্রকে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ করা, উন্নয়ন, একাধিক জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। আগামীতেও কেন্দ্র যাতে একই পথে হাঁটে সেজন্য অনুরোধ করছি।’
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। তিনি জানিয়েছেন, হাজার-হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ মণিপুরের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখা, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোখা ও অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানো, মাদক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া, দ্রুত সীমান্ত সুরক্ষিত করার মতো বিষয়ের উপরে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের কারণ হিসেবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, খুব শিগগিরই মণিপুরের বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করছিল কংগ্রেস। এছাড়া বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বে খুশি ছিল না বিজেপি বিধায়কদেরই একাংশ। আর এই পরিস্থিতিতে নিজেই পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বীরেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে দেখা করে রবিবারই দিল্লি থেকে ফেরেন বীরেন। শনিবার সন্ধ্যায় দিল্লি যাওয়ার আগে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোটের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
মূলত সোমবার থেকে বিধানসভা অধিবেশন নিয়েই আলোচনা করতে বৈঠক ডাকেন বীরেন। যে অধিবেশনে তার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চাইছিল কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, গত প্রায় দুই বছর ধরে লাগাতার জাতি সংঘর্ষে তপ্ত মণিপুর। একাধিকবার সে রাজ্যের সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবিও করা হয়েছিল। যদিও সে সময়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়াননি বিজেপির এই নেতা। বরং পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সমস্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে, এই বার্তা শোনা গিয়েছিল তার কণ্ঠে।
আপনার মতামত লিখুন :