যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের নিউ অরলিন্স শহরে নববর্ষ উদযাপন করা মানুষের ভিড়ের মধ্যে দ্রুতগতিতে গাড়ি তুলে দেওয়া ও বন্দুক হামলার ঘটনায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৫ জনের মতো। হামলার এই ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন বলে ধারণা করছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই জানিয়েছে, ট্রাকটির চালক ছিলেন ৪২ বছর বয়সী শামসুদ্দীন জব্বার। যিনি একজন মার্কিন নাগরিক এবং টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা। তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য ছিলেন।
সিবিএস নিউজ একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানায়, চালক ব্যারিকেড ভেঙে জনতার ভিড়ের মধ্যে প্রচণ্ড গতিতে পিকআপ তুলে দেয় এবং ট্রাক থেকে নেমে গুলি করা শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানকার পুলিশও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ সঙ্গে গোলাগুলি চলাকালে সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিহত হন।
শামসুদ্দীন জব্বার টেক্সাসের হিউস্টনে বাস করতেন। তিনি জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার ইনফরমেশন সিস্টেমে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন বলে জানা গিয়েছে। মার্কিন সেনাবাহিনীতে ২০০৭ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত মানব সম্পদ ও আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি চাকরিচ্যুত হওয়ার আগে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আফগানিস্তানে মোতায়েন ছিলেন। ২০২০ সালে আর্মি রিজার্ভ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তিনি রিয়েল এস্টেটেও কাজ করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা তার কাছ থেকে ২০২১ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া একটি রিয়েল এস্টেটের লাইসেন্স পাওয়া গিয়েছে। জব্বার এর আগে টেক্সাসে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। ২০০২ সালে চুরি এবং ২০০৫ সালে লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর জন্য তিনি জরিমানা ও প্রোবেশন পেয়েছিলেন।
সিবিএস জানিয়েছে যে তিনি দুইবার বিয়ে করেছিলেন। তার প্রথম বিয়ে ২০১২ সালে বিচ্ছেদ হয় এবং দ্বিতীয় বিয়ে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।
লুইজিয়ানার অ্যাটর্নি জেনারেল লিজ মুরিল জানান, শামসুদ্দীন জব্বার একা নন, এই হামলায় আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। গাড়িটি থেকে যেসব বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে, তা একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বানানো হয়েছে। এর সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। এর আগে বুধবার হামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, হামলার জন্য হামলাকারী জব্বার একা দায়ী নন।
এফবিআই জানিয়েছে, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। হামলার পর গাড়ি থেকে বিস্ফোরক দ্রব্যের পাশাপাশি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পতাকা পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে তারা।
আপনার মতামত লিখুন :