মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ সৌদি আরবের ডি-ফ্যাক্টো নেতা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিল ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
স্থানীয় সময় বুধবার (২০ নভেম্বর) এ বিষয়ে ৯৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। সংবাদ সংস্থা এএফপির বরাতে দ্য জাপান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের নামে সৌদির ভিন্ন মতাবলম্বী শীর্ষ ব্যবসায়ী ও ধনকুবেরদের প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি জব্দ করেছেন সৌদি যুবরাজ। ওই বছরই তার বাবা সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের কাছ থেকে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা গ্রহণ করেন তিনি।
এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের নামে সৌদির শীর্ষ ব্যবসায়ী ও ধনকুবেরদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান-সম্পত্তি জব্দ করছেন মোহাম্মদ বিন সালমান, পরে সেসব রাষ্ট্রীয় তহবিল পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (পিআইএফ) আওতায় নিয়ে যান।
ফলে অস্বাভাবিকভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠে পিআইএফের সম্পদের পরিমাণ। এক দশক আগে রাষ্ট্রীয় এই তহবিলে সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। বর্তমানে এটির সম্পদের পরিমাণ ১০ গুণের বেশি বেড়ে হয়েছে ৯২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার (৯২৫ বিলিয়ন ডলার)।
প্রসঙ্গত, পদাধিকার বলে পিআইএফের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ৩৯ বছর বয়সী সৌদি যুবরাজের হাতে। এ তহবিলের অর্থ কোন খাতে কীভাবে ব্যয় হবে সে সম্পর্কেও তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
এইচআরডব্লিউ’র প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, 'পিআইএফের মাধ্যমে সৌদি যুবরাজ রাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে নিজের প্রভাব বিস্তার করেছেন, যা অভূতপূর্ব। এর আগে কখনও কোনো শাসক দেশের অর্থনীতিতে এত প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। তবে দেশের অর্থনীতিতে যুবরাজ মোহাম্মদের এই পরিমাণ প্রভাবশালী হয়ে ওঠা শেষ পর্যন্ত সৌদির জনগণের কোনো উপকারে আসবে কি না তা নিয়ে গভীর সংশয় দেখা গেছে।'
এদিকে সালমানের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগও তুলেছে এইচআরডব্লিউ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিআইএফের আওতাধীন বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মীদের অতিরিক্ত সময় কাজ করতে বাধ্য করা, সেইসঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :