ভারতের রাজনীতি রাজাকার ইস্যুতে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিজেপি নেতা ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের মধ্যে রাজাকার ইস্যুতে বিরোধ শুরু হয়েছে। এই কাঁদা ছোড়াছুড়ির লড়াইয়ে যোগ দিয়েছেন খাড়গের ছেলে প্রিয়াঙ্ক খাড়গেও।
মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রচারণা চালানোর সময় যোগী আদিত্যনাথ মল্লিকার্জুন খাড়গের শৈশবের এক ট্র্যাজেডির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, হায়দরাবাদের নিজামের অধীনে থাকা ‘রাজাকারদের’ হামলায় খাড়গের মায়ের মৃত্যু ঘটে। যোগী বলেন, ‘কংগ্রেসের ভোটব্যাংক রাজনীতির জন্য খাড়গে তাঁর অনুভূতি দমিয়ে রেখেছেন।’
যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘খাড়গে জি, আমাকে নিয়ে রাগ করবেন না। আমি আপনার বয়সের প্রতি সম্মান দেখাই। যদি রাগ করতেই হয়, তবে হায়দরাবাদের নিজামের ওপর করুন। রাজাকারেরা আপনার গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছিল, হিন্দুদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। আপনার মা, বোন ও পরিবারকে পুড়িয়ে দিয়েছিল। দেশের সামনে এই সত্য উপস্থাপন করুন।’
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে মল্লিকার্জুন খাড়গের ছেলে ও কর্ণাটকের মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়গে বলেছেন, প্রবীণ নেতা (মল্লিকার্জুন খাড়গে) কোনো দিনই ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেননি এবং কখনো ‘ভিকটিম কার্ডও’ খেলেননি।
প্রিয়াঙ্ক খাড়গে বলেন, ‘আমার বাবা সেই মর্মান্তিক ঘটনার সময় অল্পের জন্য বেঁচে যান এবং পরে তিনি ৯ বার এমএলএ, এমপি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং কংগ্রেস সভাপতি হন। কিন্তু সেই ট্র্যাজেডির পরও তিনি কখনোই এটাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেননি, কখনোই ‘ভিকটিম কার্ড’ খেলেননি এবং কখনোই ঘৃণাকে তাঁর জীবনের সংজ্ঞা হিসেবে বিবেচনা করেননি।’
প্রিয়াঙ্ক আরও বলেন, ‘খাড়গে পরিবারের ওপর হওয়া সেই অত্যাচার রাজাকারেরা করেছিল, পুরো মুসলিম সম্প্রদায় নয়। প্রত্যেক সম্প্রদায়ে কিছু খারাপ মানুষ থাকে, যারা অন্যায় কাজ করে।’ কর্ণাটকের এই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘৮২ বছর বয়সী কংগ্রেস সভাপতি এখনো বুদ্ধ, বাসবান্না, আম্বেদকরের আদর্শ এবং সংবিধান রক্ষার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।’
যোগী আদিত্যনাথকে উদ্দেশ্য করে মল্লিকার্জুন খাড়গের ছেলে বলেন, ‘যোগী জি, আপনার ঘৃণার বাণী অন্য কোথাও নিয়ে যান। আপনি তাঁর নীতি বা আদর্শকে ধ্বংস করতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্জন তুলে ধরে ভোট চেয়ে দেখুন। সমাজে ঘৃণার বীজ বপন করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা বন্ধ করুন।’
এর আগে, যোগীর ‘বাতেঙ্গে তো কাটেঙ্গে’ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছিলেন, ‘অনেক নেতা সাধুর ছদ্মবেশে রাজনীতি করেন...কেউ কেউ আবার মুখ্যমন্ত্রীও হয়ে যান। গেরুয়া কাপড় পরেন, মাথায় চুল নেই...। একদিকে গেরুয়া পরেন, অন্যদিকে বলেন “বাতেঙ্গে তো কাটেঙ্গে”। তাঁরা মানুষের মধ্যে ঘৃণা ছড়াচ্ছে এবং তাদের বিভক্ত করার চেষ্টা করছে।’ উৎস: আজকের পত্রিকা।
আপনার মতামত লিখুন :