শিরোনাম
◈ সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা, যে সব বিষয় নিয়ে হতে পারে আলোচনা  ◈ ঢাকা-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার গ্রেফতার ◈ ঘূর্ণিঝড় ‌‘ডানা’ নিয়ে সর্বশেষ যা জানা গেলো ◈ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পল্লী বিদ্যুতের ৬ কর্মকর্তা রিমান্ডে ◈ নির্বাচন নিয়ে আসিফ নজরুলের বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নয়: ধর্ম উপদেষ্টা ◈ হাওরে সাঁতার কাটতে গিয়ে নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার ◈ ২০২৬ সালের মধ্যেই দেশের প্রথম পাতাল রেল চালু করতে চায় কর্তৃপক্ষ (ভিডিও) ◈ জাতীয় মসজিদের নতুন খতিবকে নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহর মন্তব্য ভাইরাল ◈ শেখ হাসিনাকে কোন প্রক্রিয়ায় ফেরত আনা হবে, জানালেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল (ভিডিও) ◈ এতো দাম দেখে অবচেতনমনেই বলে ফেলি আগেই ভালো ছিলাম : হাসনাত আব্দুল্লাহ (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:০৩ রাত
আপডেট : ১৯ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে ছিল ইসরায়েল, কে এই হামাস নেতা?

গাজা উপত্যকায় এক হামলায় নিহত হয়েছেন হামাসের নতুন নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার। এমনটা দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে এ বিষয়ে এখনও হামাসের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। গত বছরের ৭ অক্টোবর তিনিই ছিলেন ইসরায়েলে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। তাকে ধরার জন্য ইসরায়েল হন্য হয়ে খুঁজতে ছিল। খবর বিবিসি 

তুষার শুভ্র সাদা চুল এবং কালো আইব্রুর অধিকারী সিনওয়ার গত বছর ইসরায়েলে হামলার পর এক প্রকার অদৃশ্য হয়ে যান। ওই হামলায় ১২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে হামাস। 

হামাসের ভয়াবহ হামলার পর ইসরায়েল এক প্রকার বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। সিনওয়ারকে ধরতে তখন তারা হাজার হাজার সৈন্য এবং ড্রোন মোতায়েন করে। এছাড়া ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং বিভিন্ন জনের সহযোগিতা নেয়। 

হামলার পরই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি বলেন, কমান্ডার ইয়াহিয়া সিনওয়ার এক মৃত মানুষ। 

আইডিএফ এর প্রধান হারজি হ্যালেভি বলেন, ইসরায়েলে দুঃসাহসিক হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। শেষ পর্যন্ত তিনি এবং তার সঙ্গে থাকা সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। 

জুলাইতে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসেম ব্রিগেডের নেতা মোহাম্মাদ দাইফ নিহত হয়। 

ইউরোপীয়ান কাউন্সিল অন ফরেইন রিলেশনস এর সিনিয়র ফেলো হাগ লোভাট বলেন, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন দাইফ এবং তাদেরকে হামলায় উদ্ধুদ্ধ করেছিলেন সিনওয়ার। 

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সিনওয়ারকে নিহত ঘোষণার আগে আইডিএফ বিশ্বাস করেছিল, তিনি তার নিরাপত্তা রক্ষীকে নিয়ে গাজায় টানেলের মধ্যে কোথাও লুকিয়ে আছে। ইসরায়েল তার অবস্থান ট্রাক করতে পারে এজন্য তিনি নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। 

জুলাইয়ে তেহেরানে ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার পর হামাসের নেতা হিসেবে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নাম ঘোষণা করা হয়। ইসমাইল হানিয়া কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। 

৬১ বছর বয়সী সিনওয়ার আবু ইব্রাহিম নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি গাজা উপত্যকার দক্ষিণে খান ইউনিসে একটি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা-মা আশকেলন থেকে গাজায় এসেছিলেন। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর অনেক মানুষ আশকেলন থেকে ফিলিস্তিনে এসে শরণার্থী হয়ে পড়েন। আশকেলন মূলত ইসরায়েলের উপকূলীয় অঞ্চলের একটি এলাকা।  

ইয়াহিয়া সিনওয়ার খান ইউনিসের একটি ভয়েস হাইস্কুল থেকে শিক্ষাকগ্রহণ করেন। এরপর গাজার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ভাষার ওপর ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। 

সিনওয়ারের সঙ্গে চারবার কারাগারে সাক্ষাত করা ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির ফেলো ইহুদ ইয়ারি বলেন, ওই সময়ে খান ইউনিসে মুসলিম ব্রাদার হুড সমর্থনের ঘাঁটি ছিল। 

তিনি আরও বলেন, ওই সময়ে দারিদ্রপীড়িত শরণার্থী শিবিরের যুবকরা ব্যাপকভাবে মসজিদ মুখী হয়ে পড়েন। যার ফলে একটা বড় সুবিধা পেয়েছিল ইসলামিক দলগুলো। পরবর্তীতে হামাসের জন্যও এটি একটি বড় সুবিধা নিয়ে আসে। 

১৯৮২ সালে ১৯ বছর বয়সে সিনওয়ার প্রথমবার গ্রেপ্তার হন। ইসলামিক আন্দোলনকারী হিসেবে ১৯৮৫ সালে তিনি আবার গ্রেপ্তার হন। এরপর তিনি হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। 

এরপর ১৯৮৭ সালে হামাস প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এর দুই বছর পর সিনাওয়ার মাত্র ২৫ বছর বয়সে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা আল মজিদ গঠন করেন। 

১৯৮৮ সালে দুই ইসরায়েলি সৈন্যকে অপহরণ এবং হত্যার পরিকল্পনা করে সিনওয়ার। ওই বছরই তিনি গ্রেপ্তার হন। ১২ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যার দায়ে ইসরায়েল তাকে চারটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। 

সিনওয়ার তার জীবনের বড় একটি সময় ইসরায়েলের কারাগারে থাকেন। ১৯৮৮ সালে থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। ধারণা করা হয় দীর্ঘ সময় নির্জন কারাবাস তাকে আরও কঠোর করে তোলে। তিনি সব সময়ই ইসরায়েলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া ফিলিস্তিনে কোনো ইহুদির অস্তিত্ব না থাকে তারও পরিকল্পনা করেন। শেষ পর্যন্ত ২০১১ সালে আরব কারাগার থেকে ইসরায়েলি বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে মুক্তি পান সিনওয়ার।  উৎস: চ্যানেল ২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়