শিরোনাম
◈ মাসে অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার গুনতে হবে মার্কিন শুল্ক থাকলে  ◈ ভারতের সঙ্গে কাশ্মীর নিয়ে দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ বাংলাদেশের কাছে তুলল পাকিস্তান ◈ মেরে না ফেলা পর্যন্ত ভারত, ‘র’ আর আ.লীগের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে: হাসনাত আবদুল্লাহ ◈ ‘চীন সরকারের হাসপাতাল নীলফামারীতে হবে’ ◈ বাংলাদেশ ভ্রমণে মার্কিন নাগরিকদের জন্য সতর্কতা ◈ বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ নিয়ে তিতাসের সতর্কবার্তা ◈ দেশের বাজারে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ◈ প্রশাসন কার পক্ষে,পাল্টাপাল্টি অভিযোগে এনসিপি - বিএনপি ◈ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেলের প্রস্তাব বাস্তবায়নে কাজ চলছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা ◈ জাতীয় সংসদের আসন ৬০০ করার সুপারিশ নারী সংস্কার কমিশনের

প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট, ২০২৪, ১২:১২ রাত
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মার্কিন গণমাধ্যম মুগ্ধর মৃত্যুর বর্ণনা দিয়ে যা লিখল

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বিক্ষোভকারীদের হাতে সেদিন পানির বোতল তুলে দিচ্ছিলেন মীর মাহফুজুর রহমান (মুগ্ধ)। টি-শার্টের হাতা দিয়ে টিয়ার গ্যাসে জ্বলতে থাকা চোখ মুছতে মুছতেই পানি নিয়ে ছুটে যাচ্ছিলেন সবার কাছে। কিন্তু এর মাত্র ১৫ মিনিটের মাথায়, ঢাকায় দুপুরের উত্তাপে বিশ্রাম নেওয়ার সময় একটি বুলেট তার কপালে এসে বিঁধে; শহীদ হন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মুগ্ধ। সূত্র : আরটিভি

মুগ্ধর মৃত্যুর এমন বর্ণনা দিয়ে তাকে নিয়ে সোমবার (১২ আগস্ট) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ঘটনার পরপরই মুগ্ধকে তার বন্ধু এবং অন্য বিক্ষোভকারীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। মুগ্ধর যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সিএনএনকে বলেন, ‘আমি শুধু তাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম এবং কান্নায় ভেঙে পড়ি।’

গত ১৮ জুলাই উত্তরার আজমপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর আগে মুগ্ধর পানি দেওয়ার ভিডিওটি সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা শেয়ার করেন লাখ লাখ মানুষ। এই ভিডিও, ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়ে আরও বেশি মানুষকে রাস্তায় নেমে আসতে উৎসাহিত করে।

স্থানীয় মিডিয়া এবং বিভিন্ন সংস্থার বিশ্লেষণের উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ একপর্যায়ে দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। যার ফলে সৃষ্ট সহিংসতা এবং সংঘর্ষে অন্তত ৩০০ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।

ফারাহ পরশিয়া নামে ঢাকার একটি প্রযুক্তি কোম্পানিতে কর্মরত ২৩ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী সিএনএনকে বলেন, হত্যাকাণ্ড চলছিল এবং সবাই নীরব ছিল। ফলে আমাদের নিজেদের জন্য এবং গণতন্ত্রের জন্য দাঁড়াতেই হতো। আমরা (সাধারণ মানুষ) যে কতটা ক্ষমতা ধারণ করি, তা দেখে আমি বিস্মিত। কারণ, বহু বছর ধরে আমরা সবাই ক্ষমতাহীন বোধ করে এসেছি।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্যদিয়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসার পর, আন্দোলনে নিহত অনেকের পরিবার এখন তাদের প্রিয়জনের মৃত্যুর জন্য জবাবদিহি চাইছে।

খাওয়া, ঘুমানো, একসাথে পড়াশোনা থেকে শুরু করে পোশাক ভাগাভাগি; যমজ দুই ভাই মুগ্ধ এবং স্নিগ্ধ যেন জন্ম থেকেই ছিলেন অবিচ্ছেদ্য।

স্নিগ্ধ বলেন, সে (মুগ্ধ) শুধু আমার ভাই ছিল না, আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিল। সে আমার শরীরেরই একটি অংশ, আমরা একসাথে সবকিছু করতাম।

সিএনএন বলছে, গণিতে স্নাতক মুগ্ধ এমবিএ পড়ছিলেন, আর স্নিগ্ধ আইনে স্নাতক। যমজ এই দুই ভাই তাদের পড়াশুনা আরও এগিয়ে নিতে এবং মোটরসাইকেলে করে ইউরোপ ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। ভ্রমণের জন্য অর্থ সঞ্চয় করতে, তারা অনলাইন ফ্রিল্যান্সার হাব ফাইভারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করছিলেন। কিন্তু মুগ্ধকে ছাড়াই এখন এক অস্থির সময়ের মুখোমুখি স্নিগ্ধ এবং তাদের বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান (দীপ্ত)।

মুগ্ধর মৃত্যুর সময় তার গলায় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড। সেই অন্ধকার দিনের প্রতীক হিসেবে শুকিয়ে যাওয়া রক্তমাখা আইডি কার্ডটি সযত্নে রেখে দিয়েছে তার পরিবার। প্রতিবাদ-আন্দোলনে মুগ্ধ যে প্রভাব ফেলেছে, তা থেকেই সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করছেন তারা।

স্নিগ্ধ বলছিলেন, তার (মুগ্ধ) কারণে অনেক মানুষ প্রতিবাদ করার শক্তি পেয়েছে। সে সবসময় বলত, আমি আমার বাবা-মাকে একদিন গর্বিত করব। সেই মুহূর্তটি এসেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়