সালেহ্ বিপ্লব: [২] লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ বেআইনি শক্তি প্রয়োগ করেছে। সারা দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। বুধবার ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে অ্যামনেস্টি।
[৩] সংস্থাটি জানায়, তারা ঘটনার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ শুনেছে। পাশাপাশি ঘটনার ভিডিও-ছবি বিশ্লেষণ করে সত্যতা যাচাই করে দেখেছে অ্যামনেস্টি ও তাদের ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাব। এসব প্রমাণ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের বেআইনি বলপ্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বহু বছরের সহিংসতার ধারাবাহিকতার বিষয়টিও নিশ্চিত করে। এই সহিংসতায় ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
[৪.১] অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে সংস্থার দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক গবেষক তকবীর হুদা বলেন, শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের অন্যান্য ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের দাবি জানানো আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে অ্যামনেস্টি।
[৪.২] তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন ও নিজস্ব সংবিধানের প্রতি অঙ্গীকার অনুসারে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতার অধিকারের প্রতি সম্পূর্ণভাবে সম্মান দেখাতে হবে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের আরও ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে হবে।
[৫] অ্যামনেস্টি বলেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের জানিয়েছেন, ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলা শুরুর আগে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক আবাসিক হল, বিশেষ করে সূর্য সেন হল ও বিজয় একাত্তর হল থেকে ছাত্রলীগের সদস্যদের রড, লাঠিসোঁটা, এমনকি পিস্তল নিয়ে বের হয়ে আসতে দেখা যায়।
[৬] ২০২৩ সালে অ্যামনেস্টি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার বিবরণ নথিভুক্ত করেছিল। সেই সহিংসতার সঙ্গে এই সহিংসতার বিবরণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।
[৭] তকবীর হুদা বলেন, পুলিশের বিক্ষোভ মোকাবিলায় গুলির ব্যবহার অত্যন্ত বিপজ্জনক ও বেআইনি। শটগান থেকে গুলির ব্যবহারকে পুরোপুরি অনুপযুক্ত বলে মনে করে অ্যামনেস্টি। বিক্ষোভ মোকাবিলায় পুলিশের কখনোই এটি ব্যবহার করা উচিত নয়।
[৮] তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে সব আহত ব্যক্তির পুনর্বাসন এবং তাদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত সবার জবাবদিহি অবশ্যই কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। এসব হামলাকারীর ব্যাপারে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও দ্রুত তদন্ত পরিচালনা করতে হবে। একই সঙ্গে পুলিশের যেসব সদস্য সরাসরি জড়িত বা আইনের লঙ্ঘন প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও নিরপেক্ষ, স্বাধীন, দ্রুত তদন্ত করতে হবে।
এসবি/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :