সাজ্জাদুল ইসলাম: [২] চার দশক আগে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের এসএস-২০এস ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইউরোপে ক্রুজ ও পেরশিং-২ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে শুরু হয় স্নায়ুযুদ্ধের উত্তেজনা। এর কয়েক বছর পর দুই পক্ষের মধ্যে ঐতিহাসিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি হয়। সূত্র : রয়টার্স
[৩] ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে এই চুক্তির বিষয়ে সম্মত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানকে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ বলেছিলেন, ‘এই চারাগাছ লাগানোর জন্য আমরা গর্ব করতে পারি, একদিন হয়ত এই চারাই শান্তির মহিরুহে পরিণত হবে।’
[৪] চুক্তিতে প্রতিপক্ষকে লক্ষ্যবস্তু করে স্থলভাগে মোতায়েন করা ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার সব ধরনের স্বল্প পাল্লার ও আন্তমহাদেশীয় পারমাণবিক ও প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র সরিয়ে নিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ।
[৫] শান্তির এই চারা গাছটি বেঁচে ছিল ২০১৯ সাল পর্যন্ত। এরপর তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেন। তার অভিযোগ, রাশিয়া এই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, তবে মস্কো তা অস্বীকার করেছে।ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্তের ঝুঁকিপূর্ণ প্রভাব এখন আরও স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে।
[৬] যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয়ই নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনে নিজেদের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছে। গত ২৮ জুন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন, মস্কো স্থলভাগে মোতায়েনের স্বল্প ও আন্তমহাদেশীয় পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন শুরু করেছে। প্রয়োজনে সেগুলো কোথায় মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
[৭] এরপর ১০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে জার্মানিতে এসএম-৬ ও টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন শুরু করবে তারা। এসব ক্ষেপণাস্ত্র আগে মূলত যুদ্ধজাহাজে মোতায়েন করা হতো। এ ছাড়া নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রও মোতায়েন করা হবে।
[৮] এসব ক্ষেপণাস্ত্রে প্রচলিত অস্ত্রের পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্রও সংযুক্ত করা সম্ভব। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ ঘিরে অত্যন্ত উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে পুতিনের হুমকির বিষয়েও নজর রয়েছে পশ্চিমাদের। উভয় পক্ষের মধ্যে নানা পর্যায়ে থাকা জটিল হুমকিগুলোতে এটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এসআই/আইএফ
আপনার মতামত লিখুন :