শিরোনাম
◈ সাত কলেজ ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ: ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনের আহ্বান ◈ মধ্যরাতে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে নীলক্ষেতে ইডেন কলেজের ছাত্রীরা (ভিডিও) ◈ সাত কলেজের ঘটনা ‘দুঃখজনক’, সব পক্ষকে ধৈর্য ধরার আহ্বান প্রো ভিসি ড. মামুনের ◈ ঢাবি-সাত কলেজ সংঘর্ষ, শিবির সভাপতির বক্তব্য ◈ সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গ্রেপ্তার ◈ ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, নীলক্ষেত নিউমার্কেট এলাকা রণক্ষেত্র (ভিডিও) ◈ তাসকিনের রেকর্ড, আবারো রাজশাহীর কাছে রংপুর রাইডার্সের অপ্রত্যাশিত হার ◈ এস কে সুরের লকারে তল্লাশি: ডলার-ইউরো, স্বর্ণসহ আরও যা পাওয়া গেল ◈ নাতির বয়সী ছেলে যদি বিএনপি মহাসচিবের বিরুদ্ধে খোঁচা দিয়ে কথা বলে, তা দু:খজনক : মেজর হাফিজ ◈ শাহবাগে মাদ্রাসার শিক্ষকদের লাঠিপেটা নিয়ে যা বললেন জামায়াত আমির

প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৩:৫৫ দুপুর
আপডেট : ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জেনে নিন পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ ও সমাধান

পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ ও সমাধান: জুতা মোজা খোলার পর নিজের পায়ের গন্ধে নিজেই মূর্ছা যাওয়ার মতো অবস্থা হয় অনেকের। প্রশ্ন জাগে কেনো এই দুর্গন্ধ? আর সমাধানের পথ কী?

বাহুমূল ছাড়াও দেহের যে অঙ্গে বেশি বাজে গন্ধ হয়, সেটা হল পা বা পায়ের পাতা। কারণ জুতা-মোজা পরার কারণে পায়ে আর্দ্রতা ও ঘাম আটকে থেকে সেখানে ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গাস জন্মানোর পরিবেশ তৈরি হয়।

এই তথ্য জানিয়ে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস নিবাসী ত্বক-বিশেষজ্ঞ ডা. এমিলি উড বলেন, “পায়ের আর্দ্রতা বা ঘাম উৎপন্ন হয় ঘাম গ্রন্থি থেকে আর আমাদের প্রতিটি পায়ের পাতায় অন্তত ২ লাখ ৫০ হাজার ঘাম গ্রন্থি রয়েছে।”


তাই পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ উদঘাটনে কয়েকটি বিষয়ের ‍ওপর নজর দেওয়ার প্রতি জোর দেন এই বিশেষজ্ঞ।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব : ‘হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়- পায়ের পাতার তৈরি হওয়া ঘামের সাথে ত্বকের ব্যাক্টেরিয়া মিশে মোজা ও জুতায় দুর্গন্ধ তৈরি করে।

প্রায় সবার পায়েই হালকা গন্ধ হতে পারে, তবে দুর্গন্ধ কড়া হলে নজর দিতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভ্যাসের দিকে- ব্যাখ্যা করেন ডা. উড।

এসবের মধ্যে রয়েছে-

যথেষ্ট পরিমাণে গোসল না করা

ভালো মতো পা পরিষ্কার না করা

প্রতিনিয়ত মোজা না ধোয়া ও পরিবর্তন না করা

যেসব জুতা পরলে ঘাম বেশি হয় সেগুলো ভালো মতো পরিষ্কার না করা

সমাধান: এই ক্ষেত্রে পায়ের পাতা ভালো মতো পরিষ্কার করা ও শুকনা রাখা জরুরি।

ডা. উড পরামর্শ দেন, “প্রতিদিন সাবান-পানি দিয়ে ভালো মতো পায়ের পাতা পরিষ্কার করতে হবে। দরকার হলে দিনে কয়েকবার করা যেতে পারে। ‘অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল সোপ’ এই ক্ষেত্রে কার্যক্রর ভূমিকা রাখবে, মেরে ফেলবে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া।”

‘আমেরিকান পডিয়াট্রিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন’ পরমর্শ দিচ্ছে- দুর্গন্ধ হওয়া সমস্যা নিরসনে পায়ের পাতা আধা কাপ এপসম লবণ গোলানো পানিতে ২০ মিনিট চুবিয়ে রাখতে হবে। এতে শক্তিশালী ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস হবে।

আর ব্যাবহার করতে হবে ঘাম রোধক মোজা। যদি দিনের মধ্যভাগেই পা ঘেমে যায় তবে অতিরিক্ত এক জোরা মোজা ব্যাগের রাখার পরামর্শ দেন, ডা. উড। যাতে পরিবর্তন করে পরা যায়।

প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জুতা পরার অভ্যাস গড়তে হবে। যেমন- চামড়ার জুতা, যা সিনথেটিক বা কৃত্রিম উপাদানের চাইতে বেশি বাতাস চলাচল করতে পারে।

হাইপারহাইড্রোসিস: পায়ের পাতা বা হাতের তালুতে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সমস্যাকে চিকিৎসা-বিজ্ঞানে বলা হয় ‘হাইপারহাইড্রোসিস’। এই সমস্যা থাকলে গরম বা শারীরিক কর্মকাণ্ড না করলেও ঘাম হয়; অর্থাৎ থাকতে পারে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সমস্যা।

এরফলে স্নায়ুর সংকেত পরিবর্তিত হয়ে ঘাম গ্রন্থি অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। আবার শারীরিক অবস্থার কারণেও এমন হতে পারে, যেমন- ডায়াবেটিস, মেনোপজ জনিত ‘হট ফ্ল্যাশেজ’ বা থাইরয়েডের সমস্যা।

সমাধান: সাবান-পানি ব্যবহার করে নিয়মিত পা ধোয়া ভালো অভ্যাস। তবে ‘হাইপারহাইড্রোসিস’ থাকলে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

এক্ষেত্রে গোসলের পর পায়ের পাতায় মাখা যেতে পারে ‘অ্যান্টিপার্সপারেন্ট রোল-অন’। এতেও সমস্যার সমাধান না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ঘাম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। যেমন- ‘অ্যালুমিনিয়া ক্লোরাইড টপিক্যাল’ বা ড্রাইজল ব্যবহার।

ফাঙ্গাসের সংক্রমণ:  পায়ের পাতায় ফাঙ্গাসের সংক্রমণকে বলা হয় ‘টিনিয়া পেডিস’ বা ‘অ্যাথলেট’স ফুট’। বিশেষ করে দুই আঙ্গুলের মাঝের চামড়ায় এই সমস্যা হয়।

লক্ষণের মধ্যে রয়েছে- ভেজাভাব ও চামড়া ওঠা, হলদে বা সবুজে আভার রংয়ের পরিবর্তন, ব্যথাযুক্ত ফাঁটাল, বাজে গন্ধ।

এই সংক্রমণ সাধারণত ষাটোর্ধ মানুষের বেশি হয়। তবে ডায়াবেটি এবং স্থূলতার কারণেও হতে পারে।

সমাধান: যদি মনে হয় ‘অ্যাথলেট’স ফুট’ সমস্যা হয়েছে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এক্ষেত্রে ফাঙ্গাসরোধী ক্রিম, জেল, স্প্রে বা পাউডার ব্যাবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।

ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ: দুর্গন্ধের সাথে চুলকানি, পায়ের ত্বকে ছোট ক্ষত হওয়া বা সাদাটে বর্ণ দেখা দেওয়া লক্ষণ হল ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ। যাকে বলে ‘পিটেড কেরাটোলাইসিস’- জানান ডা. উড।

যাদের পা বেশি ঘামে বা আঁটসাঁট জুতা পরার কারণে অতিরিক্ত আর্দ্রতা কারণে পায়ের পাতায় এই সমস্যা দেখা দেয়।

যেমন- সামরিক বাহিনীর লোক, খেলোয়াড় বা যাদের ‘হাইপারহাইড্রোসিস’য়ের সমস্যা রয়েছে।

সমাধান: প্রথম পদক্ষেপে হল সংক্রমণ সারাতে হবে। এক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা ছাড়াও মাখতে হতে পরে নানান ধরনের ক্রিম ও মলম। পাশাপাশি ব্যবহার করতে হবে বেঞ্জোয়েল পারোক্সাইড। আর এসবই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে করতে হবে।

এছাড়া বাতাস চলাচল করে এমন মোজা ও জুতা পরা, ‘ফুট অ্যান্টিপার্সপিরান্ট’ ব্যবহার সংক্রমণ ফিরে আসা রোধ করতে ভূমিকা রাখে।

একজিমা:  ডা. উড বলেন, “এটা ত্বকের সাধারণ একটি সমস্যা। যা হলে চামড়া স্তরে রং পরিবর্তন ও প্রদাহ হতে পারে। এছাড়াও দেখা দিতে পারে ফুসকুড়ি।”

একজিমা পায়ের পাতায় পৌঁছালে দুর্গন্ধ হয়।

সমাধান: যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল একজিমা সোসাইটি’ পরমর্শ দিচ্ছে- মৃদু পরিষ্কারক দিয়ে পায়ের পাতা পরিষ্কার করে ঘন ময়েশ্চারাইজার যুক্ত মলম ব্যবহারে একজিমা কমানো যায়।

এছাড়া কুসুম গরম পানিতে গোসল, কাপড় ধোয়ার সাবান পায়ে না লাগা, বাতাস চলাচল করতে পারে এমন কাপড় যেমন- সুতি বা সিল্কের মোজা ব্যবহার এবং শুকনা মোজা ও জুতা পরতে হবে।

ঘরোয়া সমস্যায় সমাধান না হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

দুর্গন্ধ দূর ও পায়ের পাতা পরিষ্কার রাখার পণ্য

সঠিক পণ্য ব্যবহারে পায়ের পাতায় ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে রয়েছে-

আর্দ্রতা শোষক মোজা: ‘অ্যাথলেটিক সকস’ সিন্থেটিক তন্তুর মিশ্রণে তৈরি করা হয় যা পায়ের ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নিতে পারে।

অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল সাবান: হাত ধোয়ার ব্যাক্টেরিয়ার ধ্বংস করা তরল সাবান পায়ের পাতা পরিষ্কারে ভালো কাজ করে।

এপসম সল্ট: এই লবণ পায়ের পাতায় ব্যাক্টেরিয়া জন্মানোর রোধ করার পাশাপাশি বাজে গন্ধ হওয়া রোধ করে।

জুতা জীবাণুমুক্ত করার স্প্রে: এই ধরনের জীবাণু ধ্বংস করার স্প্রে বাজারে পাওয়া যায়, যা জুতার ভেতর ব্যবহারে উপকার মেলে।

ফাঙ্গাস-রোধী পাউডার: বা ‘অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার’ পায়ে ফাঙ্গাস হওয়া থেকে বাঁচায়। পাশাপাশি পায়ের পাতা শুকনা রাখে।

ফুট অ্যান্টিপার্সপিরান্ট: ওষুধের দোকানে নানান ধরনের ‘অ্যান্টিপার্সপিরান্ট লোশন’ পাওয়া যায়। এই ধরনের পণ্য পায়ের পাতায় অতিরিক্ত ঘাম হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। উৎস: বিডিনিউজ২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়