শিরোনাম
◈ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে কৌশলের কথা জানালেন ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি নিয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও) ◈ রাখাইন রাজ্যের মিলিটারি সদরদপ্তর আরাকান আর্মির দখলে, সতর্ক উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত ◈ লন্ডন-যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ কোটি টাকা পাচার : হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু ◈ উপসচিব পুলে কোটা: প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান ◈ জাহাজ থেকে ১৯ নাবিক বিদেশে পলায়ন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বার্সেলোনাকে ২-১ গোলে হারালো অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ◈ ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভারতের কাছে এশিয়া কাপের ফাইনালে হেরে গেলো বাংলাদেশ ◈ রাহাত ফতেহ আলী খান ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা  বিপিএল মিউজিক ফেস্টে গান গাইবেন ◈ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দ্বিতীয় দিনে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ!

প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:৫০ রাত
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সুস্বাদু ও সাশ্রয়ী হলেও, পাবদা মাছে আছে স্বাস্থ্যঝুঁকি !

সাশ্রয়ী মূল্য ও পর্যাপ্ত উৎপাদনের কারণে দেশব্যাপী পাবদা মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া দেশের প্রাকৃতিক জলজ চাষ ব্যবস্থায় সাফল্যের কারণে এই মাছ আরও সহজ লোভ্য হচ্ছে। পাশাপাশি দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ফলে মধ্যবিত্তের জন্য সাশ্রয়ী দামে এই মাছের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। তবে, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় পাবদা মাছের মধ্যে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী কিছু উপাদান পাওয়া গেছে।

সায়েন্স ডাইরেক্টে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, পাবদা মাছের মধ্যে ট্রিমেথোপ্রিম (৯৫%), সালফাফুরাজল (৭৫%), অ্যামপিসিলিন (৬০%), অ্যামোক্সিসিলিন-ক্লাভুলানিক অ্যাসিড (৫৫%) এবং সেফ্রাডিন (৫০%) আছে। যা উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আফরিনা হক এই গবেষণা করেছেন। তিনি জানান, দেশে মাছ চাষে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে এই ঝুঁকি বাড়ছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, দেশে বছরে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন পাবদা মাছ উৎপাদিত হয়। যার প্রায় ১,০০০ মেট্রিক টন প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে সংগ্রহ করা হয়।

তিনি আরও জানান, পাবদা মাছের চাষ দ্রুত লাভজনক হওয়ায় চাষিরা এটি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কিন্তু এই মাছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী উপাদান থাকার ফলে মানুষের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

গবেষকেরা বলছেন, মাছ চাষিদের সঠিক স্বাস্থ্যবিধি এবং পুকুর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। এ ছাড়া, পুকুরের কাছাকাছি জমিতে সার বা কীটনাশক ব্যবহারের সময় সতর্ক হওয়া প্রয়োজন, যাতে এগুলো বৃষ্টির পানির সঙ্গে পুকুরে প্রবেশ না করে।

অধ্যাপক আফরিনা হক বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে মৎস্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া এবং চাষিদের সঠিক ডোজ মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া উচিত।’

বাংলাদেশে প্রতি বছর ৪.৭ মিলিয়ন টন মাছ উৎপাদিত হয়, যার মধ্যে ২.৭ মিলিয়ন টন আসে প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে। আর দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ১.০৫ শতাংশ আসে মাছ রপ্তানি করে।

পাবদা মাছ দেশের মোট মাছ উৎপাদনের মাত্র ০.৫ শতাংশ হলেও এর চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। দেশে ২০১১-১২ সালে পাবদার চাষ শুরু হওয়ার পর থেকে এর উৎপাদন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পাবদা মাছের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ও উৎপাদন বাংলাদেশের জলজ চাষ ব্যবস্থার সাফল্যের প্রতীক। তবে, অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে চাষিদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

যদি চাষ পদ্ধতির উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব চর্চা নিশ্চিত করা যায়, তবে পাবদা মাছ দেশের অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং রপ্তানিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এই সমস্যাগুলোর সমাধান দেশের মৎস্য খাতকে টেকসই উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়