শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট, ২০২৪, ০৩:৫২ দুপুর
আপডেট : ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডায়াবেটিস মরণঘাতী অসংক্রামক ব্যাধির জন্ম দেয়: ডা. এম এ সামাদ

শাহীন খন্দকার: [২] বর্তমানে সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগ হচ্ছে ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস নিরবে দেহের মধ্যে বাসা বাধে এবং বিভিন্ন মরণঘাতী অসংক্রামক ব্যাধির জন্ম দেয়। আমাদের অসচেতনতা ও সুস্থ জীবনধারা মেনে না চলার জন্য দিন দিন এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে।

[৩] বিশিষ্ট চিফ কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান, কিডনি রোগ বিভাগ, আনোয়ার খান মর্ডাণ হাসপাতাল ও কলেজ। তিনি বলেন, ডায়াবেটিস এমন একটি শারীরিক অবস্থা যখন দেহের ইনসুলিন নামক হরমোন রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমান নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।

[৪] এক্ষেত্রে প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ বা চিনি শরীর থেকে বের হতে থাকে যে কারণে রোগীর ঘনঘন প্রস্রাব হয়। সেজন্য একে বহুমুত্র রোগও বলা হয়ে থাকে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে শরীর যথেষ্ট পরিমান ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না। এ ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত বয়স কম থাকা অবস্থাতেই শুরু হয়ে থাকে।

[৫] টাইপ-১ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিন ইনজেকশন জরুরি। সাধারণত ৫ থেকে ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে এ ধরণের ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। টাইপ-২ এধরনের ডায়াবেটিসে শরীরে ইনসুলিন উৎপন্ন হয় ঠিকই কিন্তু শরীর তা ঠিকমত ব্যবহার করতে পারে না। ডায়বেটিস রোগীদের শতকরা নব্বই থেকে পঁচানব্বই ভাগই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

[৬] প্রাথমিক অবস্থায় অনেক ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র ব্যায়াম ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এভাবে নিয়ন্ত্রণ না হলে ঔষধের মাধ্যমে টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। পরবর্তীতে ইনসুলিন ইনজেকশনেরও প্রয়োজন হতে পারে।

[৭] সাধারণত ঝুঁকিতে কারা এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে কেউ যে কোন বয়সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে যাদের ডায়াবেটিসের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে অর্থাৎ যাদের রক্ত সম্পর্কের নিকটাত্মীয় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত,যারা অলস জীবন যাপনে অভ্যস্ত, যাদের ওজন বেশি বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকেন।

[৮] লক্ষণ সর্ম্পকে এই চিকিৎসক বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসের কোন উপসর্গ থাকে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে বার বার পিপাসা পাওয়া, বার বার প্রস্রাব হওয়া (বিশেষ করে রাতে), বার বার ক্ষুধা লাগা, ওজন কমে যাওয়া এবং দূর্বলতা, চুলকানি,পায়ের বোধশক্তি কমে যাওয়া বা পা শির শির করা।

[৯] ডায়াবেটিস পরীক্ষার আগে, ডায়াবেটিস মিটার ব্যবহার করার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। পর হাত মুছে রক্তের প্রথম ফোঁটাটি নিতে হবে। হাতে কিছু লেগে থাকলেই ফলাফল ভুল আসতে পারে। অনেক রোগী একই সুচ পাঁচ থেকে ছয় বার ব্যবহার করেন।

[১০] এটি সংক্রমণের সম্ভাবনা বহু গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণের প্রতি যত্নশীল হওয়াও দরকার। ব্যাটারির দিকে খেয়াল রাখা, প্রতি বার ব্যবহারের আগে যন্ত্রটি ‘রিসেট’ করার বিষয়ে নজর দিতে হবে। খুব বেশি ঠান্ডা জায়গায় যন্ত্রটি রাখবেন না। সূর্যের তাপ যেন যন্ত্রের উপর না পড়ে সে দিকেও নজর রাখবেন।

[১১] সূচ ফুটিয়ে রক্ত পরীক্ষা করলে যথেষ্ট ব্যথা হয়। অনেকেই আঙুলের একেবারে ডগায় সূচ ফুটিয়ে রক্ত পরীক্ষা করেন। সে ক্ষেত্রে ব্যথা আরও বেশি হয়। তিনি বলেন, আঙুলের এক পাশে পরীক্ষা করলে ব্যথা খানিকটা হলেও কম হয়।

[১২] প্রতিদিন একই আঙুলে পরীক্ষা না করে বিভিন্ন আঙুলে পরীক্ষা করুন। প্রত্যেক দিনের ফলাফল এক জায়গায় লিখে রাখা খুব জরুরি। সেই তালিকা দেখেই চিকিৎসক বুঝতে পারবেন, আপনার শরীরে ওষুধ কাজ করছে কি না। কেবল সকালে খালি পেটে কিংবা খাবার দুই ঘন্টা পরে রক্ত পরীক্ষা করলে চলবে না। দিনের বিভিন্ন সময়ে আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ কতখানি তা-ও জানা দরকার বলে জানালেন তিনি। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান

এসকে/কে/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়