সালেহ ইমরান: [২.১] প্রথম স্থানে রয়েছে সোমালিয়া, দ্বিতীয় পাকিস্তান।
[২.২] বাংলাদেশে বিভিন্ন চিকিৎসায় প্রয়োজন ছাড়াই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। চিকিৎসক ছাড়াই এন্টিবায়োটিক সেবনের প্রবণতাও এখানে উদ্বেগজনক। বিষয়টিকে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
[৩] বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এক গবেষণায় দেখা যায়, করোনাকালে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ৭৫ ভাগকে বিনা প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়। সেই ধারা এখনো থামেনি।
[৪] ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এক গবেষণায় দেখা যায়, করোনার সময় দ্বিগুণের বেশি রোগীকে বিনা প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়। ২০২০ সালে সারাবিশ্বের মতো করোনার কবলে পড়ে দেশ। সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ না থাকায় তখন নানা ওষুধ দিয়ে চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
[৪] করোনাকালে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার জানতে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রংপুর মেডিক্যালে ভর্তি সাড়ে তিন হাজার রোগীর ওপর চলে এ গবেষণা। দেখা যায়, ৯৪ ভাগ রোগীকেই বিনা প্রয়োজনে দেয়া হয় এন্টিবায়োটিক। অথচ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ছিলো মাত্র ১৯ ভাগের।
[৫] গবেষকদলের প্রধান, বিএসএমএমইউ’র ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা.সায়েদুর রহমান বলেন, যারা হাসপাতালে ভর্তি হননি তারাও বাড়িতে বসে এন্টিবায়োটিক নিয়েছেন। বাংলাদেশে এন্টিবায়োটিক গ্রহণের একটা সংস্কৃতি তৈরি হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় সেফটিয়াক্সন, কোআ্যামক্সিক্লাভ, এজিথ্রোমাইসিন ও মেরুপেনাম। এগুলোর ব্যবহার বাড়ায় জীবাণুর বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স পাওয়ার বা প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। ফলে এন্টিবায়োটিক আর ঠিকমতো কাজ করছে না। এটা চিকিৎসা ব্যবস্থায় মহাসঙ্কট সৃষ্টি করবে।
[৬] উভয় গবেষণায় দেখা যায়, করেনার আগে দেশে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার ছিলো ২৫ শতাংশ আর করোনার পরে এই ব্যবহার বেড়ে হয়েছে ৫৮ শতাংশ।
[৭] বিশিষ্ট ঔষধ বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক ডিন ড. আ ব ম ফারুক বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে তা খুবই উদ্বেগজনক। এতে আগামীতে বিপুল সংখ্যক মানুষ জীবাণু সংক্রমণে মারা যেতে পারে। কারণ তখন আর কোনো এন্টিবায়োটিক কাজ করবে না। ২০১৬ সালে একটা তালিকা করা হয়েছিলো যে ৩৯টি ছাড়া অন্য কোনো এন্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি করা যাবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মূল কোম্পানির ওষুধটা ছাড়া অন্য কোম্পানির একই ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি হচ্ছে। সেজন্য বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করা দরকার। আর ভুল এন্টিবায়োটিক ও ডোজের পরিমাণ ছাড়া এন্টিবায়োটিক ব্যবহার আরো মারাত্মক। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :