শাহীন খন্দকার: [২] বর্ষার শুরুতেই মশুল ধারায় বৃষ্টি সঙ্গে বেড়ে যায় সাপের উপদ্রব। আবহমানকাল ধরেই এই ধারা চলে এসেছে। এর সঙ্গে বাড়ে সাপে কাটা মানুষের সংখ্যা ।দেশের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সরকারী হাসপাতালে এখন সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হলেও রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসাসেবা সর্ম্পকে কেউ কেউ জানেন , আবার অনেকেই জানেননা।
[৩] এবার আমরা কথা বলবো রাজধানীর কোন কোন হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর প্রায় সব হাসপাতালেই সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা অ্যান্টিভেনম নেই। রাজধানীসহ আশপাশের এলাকার মানুষেরা যদি সাপে কাটার স্বীকার হোন কোথায় যাবেন এবং কোথায় মিলবে চিকিৎসা ? স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানাগেছে ,স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশের সব উপজেলা ও জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাপে কাটার চিকিৎসা হচ্ছে এবং পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম আছে। সে অনুযায়ী রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোতেও অ্যান্টিভেনম থাকার কথা।
[৪] রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে খোঁজ নিতে গিয়ে জানাগেছে, হাতে গোনা দু-একটি হাসপাতালেই আছে সাপে কাটার চিকিৎসা এবং পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম। এরমধ্যে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ,কুর্মিটোল জেনারেল হাসপাতাল ,ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে অ্যান্টিভেনমের সন্ধান মেলেনি।
[৫] সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, অ্যান্টিভেনম নেই, অ্যান্টিভেনমের জন্য আবেদন করা হয়েছে অথবা সাপে কাটা রোগী তেমন একটা আসে না। তাই অ্যান্টিভেনম নেই। এদিকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসা হয় এবং পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম আছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে সলিমুল্লাহ হাসপাতালের কতৃপক্ষ জানিয়েছেন, সাপে কাটা রোগী বেশিরভাগ আশপাশেরএলাকা কেরানীগঞ্জ এবং শরীয়তপুর, মাদারীপুর জেলা থেকে আসে।
[৬] গত এক মাসে সাপে কাটা রোগী এসেছে কিনা এমন প্রশ্নের ডা. তাবিবুর রহমান বলেন, হ্যাঁ এসেছে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছে গেছে। সাপে কাটা রোগী ছাড়াও এখানে কুকুরে কামড়ানো রোগী আসে। সবাই বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নেয়।
[৭] এদিকে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে না পাওয়া গেলেও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার ফার্মেসীতে ঠিকই পাওয়া যাচ্ছে অ্যান্টিভেনম। আর এসব অ্যান্টিভেনম চড়া মূল্যে ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে। মিডর্ফোড হাসপাতাল এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানাগেছে হাসপাতাল সংলগ্ন এমএইচ মেডিক্যাল হলে পাওয়া যাচ্ছে অ্যান্টিভেনম।
[৮] এমএইচ মেডিক্যাল হলের একজন কর্মচারী নাম প্রকাশে অইচ্ছুক জানিয়েছেন, সাপে কাটার ১০ ডোজ অ্যান্টিভেনম ১৪ হাজার টাকা। তবে বেশি বেচাকেনা হয় না। মাঝে মধ্যে কেউ আসে। কেউ বললে আমরা সংগ্রহ করে দিতে পারবো। তিনি আরও জানিয়েছেন, ইনসেপটা কোম্পানির অ্যান্টিভেনমগুলো ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে।
[৯] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম টেলিফোনে জানিয়েছেন, দেশের সব উপজেলা এবং জেলা ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসায় অ্যান্টিভেনম ব্যবহারে সক্ষম। তবে খুব দ্রুত স্পেশালাইজড হাসপাতালগুলোতে দেওয়া হবে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :