শিরোনাম
◈ সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করতে চায় ইসরায়েল ◈ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন : সাড়ে চারশ কোটি টাকার ময়লা-বাণিজ্য হাত বদল ◈ এবার ভয়ংকর সেই আয়নাঘর নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন ◈ নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ নজরুল ◈ পরীক্ষা দিতে এসে আটক রাবি ছাত্রলীগের ২ নেতা ◈ বিশ্বের ১১০ কোটি তীব্র দরিদ্র মানুষের মধ্যে প্রায় ২৫ কোটি থাকেন ভারতেই!  ◈ দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার পথে বরের ওপর সাবেক স্ত্রীর হামলা ◈ এবার শাহবাগে বিক্ষোভ করছে আউটসোর্সিং কর্মচারীরা : চাকরি জাতীয়করণের দাবি ◈ স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ আবার ফিরেছেন বাংলাদেশ দলে ◈ দক্ষিণখানে পুলিশের পোশাক,নকল পিস্তলসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

প্রকাশিত : ০৬ জুলাই, ২০২৪, ০৭:৪০ বিকাল
আপডেট : ১৪ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিশুর ভেতর জন্ম নেওয়া 'শিশু' অপসারণ 

এএইচ সবুজ, গাজীপুর: [২] গাজীপুরে একটি শিশুর ভেতর জন্ম নেওয়া আরেকটি 'শিশু'(ফিটাস ইন ফিটু) অপসারণ করেছেন চিকিৎসকরা। 

[৩] শনিবার (৬ জুলাই) বেলা ১১টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু সার্জরি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শংকর চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে বিরল এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। 

[৪] ৮ মাস বয়সী শিশুটি গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিকেবাড়ি এলাকায় এমরান হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ। এমরান হোসেনের প্রথম সন্তান আবদুল্লাহ। শিশুটির ফিটাস ইন ফিটু সেক্রোকক্সিসিজায়ায় রিজিওন এরিয়ায় পায়ু পথের সঙ্গে যুক্ত ছিল। 

[৫] ডা. শংকর চন্দ্র দাস বলেন, 'ফিটাস ইন ফিটু' একটি জন্মগত সমস্যা যা সচরাচর ঘটে না। প্রতি পাঁচ লক্ষ শিশুর মধ্যে একটি পাওয়া যেতে পারে। বিশ্বজুড়ে এ রকম ঘটনা ঘটেছে প্রায় দুইশ'রও কম। 

[৬] বাস্তবে এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে একটি শিশুর ভেতরে আরেকটি শিশুর অবস্থান। দেশে এ জাতীয় রোগীর অপারেশন হয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ জাতীয় অস্ত্রোপচার এটিই প্রথম।

[৭] প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচারের সময় সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাবিব সেলিম খাজা, সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামসুল হুদা, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মনিরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মইনুল হসেন চৌধুরীসহ সার্জারি, এনেস্থেসিয়া, আইসিইউ বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

[৮] চিকিৎসকরা জানান, মায়ের পেটে যখন বাচ্চা আসে, অর্থাৎ অতি শুরুতে ডিম্ব নিষিক্ত হবার পর কোষ বিভাজন হতে হতে সাধারণভাবে একটি বাচ্চার জন্ম হয়। কিন্তু কোষ বিভাজনের কোনো এক পর্যায়ে যদি কোষগুলি সমান দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়, তবে জমজ বাচ্চার জন্ম হতে পারে। কিন্তু কোষগুলি অসমান দুই ভাগে ভাগ হলে বেশি কোষযুক্ত ভাগ থেকে সাধারণত একটি সুস্থ শিশু জন্ম হয়। কম কোষযুক্ত ভাগ থেকে অপর একটি শিশুও বড় হতে শুরু করে। তবে পরবর্তীতে এই বাচ্চাটির সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে তৈরি হয় না। বাচ্চাটি পরবর্তী সময়ে সুস্থ বাচ্চাটির শরীরের ভিতর ঢুকে পড়ে এবং বেচেঁ থাকার জন্য সুস্থ বাচ্চাটির দেহ থেকে রক্তনালীর মাধ্যমে খাদ্য সংগ্রহ করে। এই দ্বিতীয় বাচ্চাটিকেই বলা হয় 'ফিটাস ইন ফিটু'। 

[৯] ফিটাস ইন ফিটু শিশুটির সাধারণত ব্রেইন তৈরি হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেরুদণ্ডের হাড় তৈরি হয়, ক্ষুদ্র আকারে হাত-পা তৈরি হয়। অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে তৈরি হয় না। 

[১০] শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে ফিটাস ইন ফিটু শিশুটির অবস্থান হয় সুস্থ শিশুটির পেটের ভিতর। বাকি ২০ ভাগ ক্ষেত্রে শিশুটির অবস্থান হতে পারে বুকের ভিতর, তলপেটে, মাথার ভিতর, মুখের ভিতর, অণ্ডকোষের ঝুলির ভিতর অথবা পায়ুপথের পিছনে। 

[১১] শিশুটির পিতা এমরান হোসেন বলেন, গর্ভে আসার পর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। সেখানে শিশুটির এমন অবস্থা নির্ণয় করা যায়নি। পরে ওই হাসপাতালে সিজিারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটি ভুমিষ্ট হলে শিশুটির পায়ু পথ সংলগ্ন একটি মাংস পিণ্ডের মতো দেখতে পাই। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে শিশু সার্জারি বিশেষজ্ঞ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক শংকর চন্দ্র দাসের স্মরণাপন্ন হলে তিনি আমার ছেলের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। আজ তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার সন্তান সুস্থ আছে।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়