অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলায় বাংলাদেশি নাগরিককে জড়িয়ে চলমান তদন্ত সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। অভিনেতার বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা ১৯টি ফিঙ্গারপ্রিন্ট (আঙুলের ছাপ) আটক বাংলাদেশি শরিফুল ইসলাম শেহজাদের সঙ্গে মেলেনি। হাই-প্রোফাইল এই মামলার তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্য। ১৯টি আলাদা আঙুলের ছাপের সেট বলতে বোঝানো হচ্ছে, সাইফ আলি খানের বাড়ি থেকে মোট ১৯টি ভিন্ন বা আলাদা আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিটি সেটে একজনের এক বা একাধিক আঙুলের ছাপ থাকতে পারে। খবর এনডিটিভির।
এটি বোঝায় যে তদন্তকারীরা বিভিন্ন স্থানে (যেমন দরজা, আসবাব, জানালা বা অন্যান্য জায়গা) থেকে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছেন, যা সম্ভাব্য সন্দেহভাজন বা অন্য কোনো ব্যক্তির হতে পারে যারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এরপর প্রতিটি ছাপকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অভিযুক্ত শরিফুল ইসলামের আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, সিআইডি'র ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যুরোতে সাইফ আলি খানের বাড়ি থেকে পাওয়া আঙুলের ছাপ পাঠায় মুম্বাই পুলিশ। একটি 'সিস্টেম-জেনারেটেড' প্রতিবেদন নিশ্চিত করেছে যে ছাপগুলো শরিফুলের সঙ্গে মেলেনি। সূত্র জানায়, মুম্বাই পুলিশকে সিআইডি জানিয়েছে, পরীক্ষার ফলাফল নেতিবাচক। মুম্বাই পুলিশ আরও নমুনা পাঠিয়েছে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য।
৫৪ বছর বয়সী অভিনেতা সাইফ আলী ১৫ জানুয়ারি গভীর রাতে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ভয়াবহ হামলার শিকার হন। সাইফের হামলার ঘটনায় রোববার (১৯ জানুয়ারি) ভোরে একজনকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। আটককারীর নাম শরিফুল ইসলাম শেহজাদ, তাকে অভিনেতার বাড়ির ৩৫ কিলোমিটার দূর থেকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, সাইফের ওপর হামলাকারী বাথরুমের জানালা দিয়ে তার বাসায় ঢুকেছিলেন। আর সাইফের ওপর হামলার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি সেই পথ ধরে পালিয়ে গিয়েছিল। সাইফ-কারিনার ছোট ছেলে জাহাঙ্গীরের ঘর থেকে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তির একটা শীত টুপি উদ্ধার করেছে। টুপিতে পাওয়া চুল ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মুম্বাইয়ের স্কুল অব মেডিসিনে পাঠানো হয়েছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে ডিএনএ রিপোর্ট মিলে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও হামলাকারীর জামায় লেগে থাকা রক্তের দাগ সাইফের কি না, তা পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
সাইফের অ্যাপার্টমেন্টের যে ঘরে ঘটনাটি ঘটেছিল, সেখান থেকে ১৯টি ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাইফ-কারিনার আবাসনের দুজন নিরাপত্তারক্ষী ঘুমিয়ে ছিলেন। আর এই বিলাসবহুল আবাসনের মূল ফটক ও গলিতে সিসিটিভি না থাকার সুযোগ নিয়েছিলেন হামলাকারী।
প্রসঙ্গত, মুম্বইয়ের বান্দ্রার বাড়ীতে সাইফ আলী খান, কারিনা কাপুর এবং তাদের দুই সন্তানের বসবাস। আর গভীর রাতে সেই বাড়িতে ঢুকে এই অভিনেতাকে ছুরিকাঘাত করেছে দুর্বৃত্ত। রক্তাক্ত অবস্থায় অভিনেতাকে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে যান অভিনেতা। পাঁচদিন হাসপাতালে থাকার পর মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বাড়ি ফিরেছেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :