শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] দেশের শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকাই ইতোমধ্যে কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে কথা বলেছেন। এবার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অভিমত জানালেন ভারতীয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। বৃহস্পতিবার সকালে দেওয়া ওই পোস্টে সব পক্ষকে হানাহানি বন্ধের অনুরোধ করেছেন তিনি।
[৩] কবীর সুমন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় চুপ করে বসে থাকতে পারি না। থেকেছি কয়েক দিন, আর পারছি না। কিন্তু অবস্থাটা যে ঠিক কী, কী কী কারণে এমন হলো এবং হচ্ছে, কারা যে এতে জড়িত, তা-ও তো ঠিকমতো জানি না। তা-ও করজোড়ে সব পক্ষকে মিনতি করছি, অনুগ্রহ করে হিংসা, হানাহানি বন্ধ করুন। ঢাকা সরকারকে অনুরোধ করছি, বাংলা ভাষার কসম, শান্তি রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। আপনাদের ছাত্রবাহিনী যেন হিংসার আশ্রয় না নেয়।’
[৪] তিনি লিখেছেন, ‘আর কী বলি, আমি তো সশরীর যেতে পারছি না ঢাকায়, পারলে যেতাম। রাস্তায় বসে পড়ে সবাইকে শান্তিরক্ষার জন্য আহ্বান করতাম।
[৫] পোস্টের শুরুতে কবীর সুমন লেখেন, ‘আমি ভারতের নাগরিক। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী। তার বিষয়ে আসলে নাক গলানোর অধিকার আমার নেই। সেটা করতে চাইও না। তবু বাংলাদেশের অনেকের কাছ থেকে যে ভালোবাসা আমি পেয়েছি, তা ভুলে থাকতেও পারছি না। ভুলবইবা কেন। ছবি দেখছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। মিছিল করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। নেপথ্যে শোনা যাচ্ছে কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহ কবাট/ ভেঙে ফেল কররে লোপাট’; মনে হচ্ছে, গানটি এডিট করে বসানো হয়েছে ভিডিওর সঙ্গে। ঠিক কাজই করা হয়েছে। কত সময়ে দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা আমার গানের লাইন লিখে দিয়েছেন দেয়ালে। পশ্চিমবঙ্গে সে তুলনায় কিছুই দেখিনি। বলতে দ্বিধা নেই, মনে মনে আমি বাংলাদেশেরও নাগরিক।’
[৬] কবীর সুমনের ভাষ্য, ‘আমার জীবনের সেরা কাজ এবং আমার জীবন সায়াহ্নের প্রধান কাজ বাংলা খেয়াল বাংলাদেশে চর্চা করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের শিল্পী মরহুম আজাদ রহমান বেশ কিছু বাংলা খেয়াল রচনা করে গেছেন বিভিন্ন রাগে। বাংলা ভাষা আর বাংলা খেয়ালের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে আমি বাঁধা ভালোবাসার বন্ধনে।’
[৭] সবশেষ কিংবদন্তি এই শিল্পী লিখেছেন, ‘হানাহানি বন্ধ হোক। বন্ধ হোক উল্টোপাল্টা কথা বলে দেওয়া। বাঁচুক বাংলাদেশ। বাঁচুন বাংলাদেশের সবাই। জয় বাংলাদেশ, জয় মুক্তিযুদ্ধ, জয় অসংখ্য বাংলাদেশির শাহাদাত ও অপূরণীয় ক্ষতিস্বীকার। জয় বীরাঙ্গনার। জয় বাংলা ভাষার।’
[৮] উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবাম প্রকাশ করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে আসেন কবীর সুমন। একসময় স্থানীয় রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। নন্দীগ্রাম আর সিঙ্গুর আন্দোলনে অংশ নিয়ে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে সংসদ সদস্য হন। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
এসসিডি/এসসি/একে
আপনার মতামত লিখুন :