শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোল্লা রবিউল আলম রবু মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে আটটার দিকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন এই অভিনেতা ও আবৃত্তিকার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
[৩] শুক্রবার বেলা ১১টায় বাগেরহাটের বাসাবাটি এলাকায় নিজ বাসভবনের সামনে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
[৪] আশির দশকে দক্ষিণবঙ্গের মঞ্চ নাটকে দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন এই অভিনেতা। পাশাপাশি অসংখ্য বেতার ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। নাচোলের রানী, গঙ্গাযাত্রা, অন্তর্ধান এর মতো কালজয়ী বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়া আবৃত্তিতে ছিল তার বিশেষ দক্ষতা।
[৫] আবৃত্তি চর্চা ও বিকাশের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে বাগেরহাটে তিনি ‘স্বরবিন্যাস’ নামে একটি আবৃত্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সারাজীবন অসংখ্য মানুষকে বিনামূল্যে আবৃত্তি শিখিয়েছেন তিনি।
[৬] আবৃত্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী পদক পান তিনি। এছাড়াও অভিনয় এবং আবৃত্তির জন্য অসংখ্যা সম্মাননা পেয়েছেন।
[৭] ১৯৫৪ সালের ১৪ এপ্রিল রাজশাহী শহরে মোল্লা রবিউল আলম রবু জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মোল্লা আকরাম উদ্দিন আহমেদ ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী, মা খবিরা বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬০ সাল থেকে পরিবারের সঙ্গে বাগেরহাট শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন তিনি। বাগরেহাট পি.টি.আই. স্কুল, বাগেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি পি.সি. কলেজে অধ্যয়নকালে মঞ্চনাটক ও আবৃত্তিতে তার সাংস্কৃতিক প্রতিভার তেজদীপ্ত বিচ্ছুরণ ঘটান। বাবার কাছে আবৃত্তি শিক্ষায় হাতেখড়ি, ১৯৭২ সালে তিনি প্রথমবার মঞ্চ নাটকে অভনিয় করেন। এরপর বাগেরহাট শুকলাল সঙ্গীত বিদ্যাপীঠের নাটক বিভাগে নিয়মিত নাট্যচর্চা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে অভিনয়শিল্পী ও আবৃত্তিকার হিসেবে তালিকাভূক্ত হন। মঞ্চ, টেলিভিশন, বেতার ও চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন দেশের খ্যাতনামা অভিনয় শিল্পী ও নির্মাতাদের সঙ্গে।
[৮] ১৯৮০ সালে সামছুন নাহার (টগর) এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে হন রবিউল আলম রবু। পরবর্তী সময়ে স্ত্রীর অনুপ্রেরণা শিল্পীর কর্মজীবনকে সমৃদ্ধ করে।
এসসিডি/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :