শিরোনাম
◈ হাসিনার পতন মিয়ানমারের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের উৎসাহিত করেছে ◈ মিরপুরে শাহাদাত বাহিনীর পরিচয়ে মার্কেটে হামলা ও চাঁদাবাজি, গ্ৰেফতার ১  ◈ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন, বাংলাদেশকে কাছে টানছে চীন ◈ অবশেষে পদত্যাগ করেছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ◈ আমি সতর্ক করে দিচ্ছি, কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করুন: সেনাবাহিনী প্রধান (ভিডিও) ◈ চিরতরে ইন্টারনেট শাটডাউন বন্ধে স্টারলিংককে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে: প্রেস সচিব ◈ পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ দায়বদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা ◈ ৫ দফা দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ ভোটারকে ঘুষি মারার দায়ে ব্রিটিশ এমপির কারাদণ্ড (ভিডিও) ◈ ২০০৭ সালে চাকরিচ্যুত ৮৫ নির্বাচন কর্মকর্তাকে পুনর্বহালের নির্দেশ

প্রকাশিত : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৫৪ দুপুর
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৩:৩১ দুপুর

প্রতিবেদক : মহসিন কবির

ডিসেম্বরে নির্বাচন ঘিরে সরব রাজনৈতিক 

মহসিন কবির: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। সেই দিনক্ষণ সামলে রেখে এগুচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তারা বলছেন আগামী জুনে ভোটার তালিকার কাজ শেষে হবে। দলগুলোর ভেতরে চলছে নিজেদের প্রার্থী বাছাইও। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে ৩০০ আসনের সম্ভব্য প্রার্থীদের এলাকায় কাজ করতে বলেছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটও প্রার্থীদের তালিকা করছে। অনেককে এলকায় কাজও করতে বলেছেন দল থেকে। অন্যান্য ইসলামী দলও নড়েচড়ে বসেছেন। 

আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে কোনো পরিস্থিতিগত কারণে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে ভোট হবে বলে মনে করছেন সরকার-সংশ্লিষ্ট অনেকেই। 

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, অক্টোবরের দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। আমি যদি খুব ভুল না করে থাকি তাহলে অক্টোবরের দিকে তফসিল ঘোষণা, ডিসেম্বরে নির্বাচন এবং জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকার গঠন হতে পারে এমন সংকেত পাচ্ছি।

নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চলতি মাসে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ কিছু রাজনৈতিক দল আলাদাভাবে ইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে দলগুলো নির্বাচন প্রশ্নে তাদের অবস্থানও তুলে ধরে। বিএনপি এবং বাম জোট এ বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তারা আগে স্থানীয় নির্বাচন করার বিপক্ষে মত দিয়েছে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য কোনো সময় বেঁধে দেয়নি। তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াত চায় আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন।

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলেরও  আত্মপ্রকাশ ঘটতে হতে চলছে। যেহেতু বর্তমান সরকারের নিয়োগ কর্তা এই ছাত্ররা। তাই তাদের দল দ্রুতই নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেয়ে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) একাধিক নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে, সেই সময় ধরেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে। এ জন্য আগামী অক্টোবর মাসে নির্বাচনের তফসিল দেওয়ার জন্য যা যা করার দরকার, সেসব কাজ এগিয়ে রাখছে কমিশন। তবে এ নির্বাচনে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের মিত্র দলগুলোরও নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে বেশ কয়েকটি নতুন দল অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে, এটা প্রায় নিশ্চিত।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, ঐকমত্য কমিশনের ফলাফল পেলে একটা যৌক্তিক সময়ের ভেতরেই তফসিল ঘোষণা করতে পারবেন তারা। তিনি বলেন, আমরা ডিসেম্বরকে টার্গেট করে নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছি। এ ক্ষেত্রে এ বছরের জুলাই-আগস্ট থেকেই নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি থাকতে হবে কমিশনের- জানান তিনি।

সংসদ নির্বাচনে সাধারণত ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করা হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে কমিশনও বলছে, ডিসেম্বরে ভোট করতে গেলে অক্টোবরে তফসিল করতে হবে। অক্টোবরের মধ্যে আইন-কানুন বিধিবিধান সংস্কার শেষ করতে হবে।

নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মতেও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে কোনো বাধা নেই। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের পরিচালক নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আবদুল আলীম গণমাধ্যমকে বলেছেন, সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশ এখনই বাস্তবায়ন সম্ভব না। কিছু সুপারিশ রয়েছে, যেগুলো অধ্যাদেশ জারি করে অল্প সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে পারবে। ইসি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলমান।

এরপর রয়েছে সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ। সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য আইনের খসড়াও রেডি করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে বড়জোর ছয় মাস সময় প্রয়োজন। তবে যেহেতু একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে এবার নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তাই রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য দরকার। তারা যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়, তাহলে নির্বাচন আয়োজন করতে সরকারের কোনো অসুবিধা দেখছি না।

এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে বড় কোনো বাধা দেখছেন না নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য জেসমিন টুলি। তিনি বলেছেন, সংস্কার কমিশন তিন ধরনের প্রস্তাব দিয়েছে। কিছু সংস্কারকাজ তাৎক্ষণিক করা যাবে অর্ডিন্যান্স জারি করে। কিছু আছে মধ্যমেয়াদি আর কিছু আছে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব। ফলে সামনের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আমি বড় কোনো বাধা দেখছি না।

রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত কমিশনগুলোর মধ্যে এরই মধ্যে ছয়টির পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে এবং তা প্রকাশিত হয়েছে। এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়।

ছয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকও করে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দলগুলোর সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকেরও কথা রয়েছে। গত শনিবার প্রকাশ করা হয়েছে দ্বিতীয় ধাপে গঠিত স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদন। এ ধাপে গঠিত গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনও শিগগির জমা দেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়