শিরোনাম
◈ সিলেটকে হারিয়ে বিপিএলের প্লে-অফে খেলার পথে দুর্বার রাজশাহী ◈ গ্যাসের দাম বাড়ালে পোশাক খাতে খরচ বাড়বে ১৮ হাজার কোটি টাকা ◈ পাকিস্তানের মাটিতে ৩৪ বছর পর টেস্ট জয় করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ◈ কারাগারে সাবেক বিচারপতি মানিকের মৃত্যুর খবর নিয়ে যা জানা গেল ◈ রংপুরের হয়ে খেলতে আসছেন টিম ডেভিড, সুনিল নারাইন ও ডেভিড ওয়ার্নার  ◈ বান্দরবানে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে কেএনএফের দুই সন্ত্রাসী আটক ◈ এবার আল্টিমেটাম দিয়ে নিউমার্কেট থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের ◈ বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নির্ভরশীলতা বন্ধ করা উচিত: নিক্কেই এশিয়ায় মতামত প্রতিবেদন ◈ সংস্কার  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশল পরিবর্তন করতে হবে,তহবিলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান ◈ টেবিলের নিচ দিয়ে টাকা দেওয়া থেকে বাড়তি ভ্যাট ভালো: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১১:২৭ দুপুর
আপডেট : ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভোটের রোডম্যাপ নিয়ে উত্তাপ, কাছাকাছি ইসি ও রাজনৈতিক দল 

মহসিন কবির: জাতীয় সংসদ নির্বাচণের রোডম্যাপ ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে অন্তর্বতী সরকার নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করুক। সরকার সেটা না করায় রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে।  

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন দল নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে। সরকারে যুক্ত থেকে নতুন দল গঠন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ভালো চোখে দেখছে না রাজনৈতিক দলগুলো। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কাজে নিরপেক্ষতা হারাতে বসেছে। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ ধরে নেবে এই সরকারের দ্বারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হবে না। তাদের মতে, সরকারের ছত্রছায়ায়া রাজনৈতিক দল গঠন হবে সরকারের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এতে মানুষের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করবে। তাই নির্বাচনের দিনক্ষণ যত সামনে আসবে, সরকারের অবস্থান ততই পরিষ্কার হবে। আর রাজনৈতিক বিভেদও বাড়তে থাকবে।

গত বুধবার বিবিসি বাংলা অনলাইনে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকার যদি পূর্ণ নিরপেক্ষতা পালন করে, তাহলেই তারা আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা পর্যন্ত থাকবে। তা না হলে তো নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে। এর এক দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার আরও কড়া অবস্থানে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষতা পালন করতে পারছে না।

বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্যে গভীরতা অনুধাবন করে কঠোর সমালোচনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মূলত আরেকটি এক-এগারো সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে।

সরকারের এই উপদেষ্টা বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি কয়েক দিন আগে ‘মাইনাস টুর’ আলোচনা করলেও এখন ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম করার জন্য নিরপেক্ষ সরকারের নামে আরেকটি এক-এগারো সরকারের প্রস্তাব করছে। এ ধরনের পরিকল্পনা গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে এবং ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই এটা মেনে নেবে না।

এই রাজনৈতিক বক্তব্যের বাহাসের মধ্যেই ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণার সময়সীমা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ও জুলাই স্পিরিট ধারণকারী ছাত্র-জনতার সম্মিলনে যখন নতুন একটি রাজনৈতিক দলের উত্থান হওয়ার আভাস পেল, ঠিক তখন বিএনপি সেটিকে চিহ্নিত করল তাদের দলীয় স্বার্থের হুমকি হিসেবে।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বিএনপি এ কথা ভুলে গেল, গণ-অভ্যুত্থানের ফলে গঠিত হওয়া সরকারের ম্যান্ডেট ষাট-সত্তর ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়া রাজনৈতিক দলের চেয়েও বেশি। তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশের কাঠামোগত পরিবর্তন করার সময় ও সুযোগ এলো, অথচ বিএনপি দেশ পুনর্গঠনের এই সুযোগকে অবমূল্যায়ন করে হাজির হলো ১/১১ সরকারের ফর্মুলার আলাপ নিয়ে।

এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেছেন, তথ্য উপদেষ্টা এক-এগারো ইঙ্গিত কীভাবে পেলেন? বিএনপি মহাসচিব ঠিকই বলেছেন, যদি সরকার পূর্ণ নিরপেক্ষতা পালন না করে তাহলে নিরপেক্ষ সরকার দরকার হতে পারে; এটাতো সঠিক কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, ছাত্ররা নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। দল তারা গঠন করতেই পারে। গণতান্ত্রিক দেশে দল গঠন হবে, সেটা দোষের কিছু না। তবে সরকারের স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া দরকার, নতুন রাজনৈতিক দলের সরকারের কোনো সহযোগিতা থাকবে না।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আব্দুর রহমানেল মাছউদ আসছে ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীতে এক মতবিনিময় সভায় ব্যালটে ভোট করার কথাও বলেছেন তিনি।
এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচন নিয়ে অনেকটা কাছাকাছি এসেছে বলে মনে করছেন রাজনীতিবিদসহ অনেকে।

এ বিষয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা শুভ লক্ষণ। সরকার ও কমিশন চাইলে নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলো এতে আপত্তি করবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর নিয়মিত যোগাযোগ থাকলে দূরত্ব তৈরি হয় না। দূরত্ব তৈরি হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকে।’

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য তিন-চার মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।’ তিনি বলেন, ‘যদি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্র্বর্তী সরকার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকতে চান, তাহলে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকে সমুন্নত রাখতে আগামী ৫ আগস্টেই সংসদ নির্বাচন করতে পারে।’ তিনি সরকারের প্রতি এমন আহ্বান জানালেও বিএনপি চায় চলতি বছরের মধ্যেই নির্বাচন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে হবে, সে বিষয়ে ধারণা দিতে গিয়ে ইসি আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হবে এবং ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।’ তিনি বলেন, ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য দেশ জুড়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। যারা তথ্য সংগ্রহ করছেন, তাদের আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ভোটার তালিকায় ভুল হচ্ছে, এতে মানুষ সেবা নিতে পারছেন না। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা দরকার।’ তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইউএনডিপির প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, ‘জানুয়ারির ১ তারিখে নির্বাচন করতে হলে ডিসেম্বর থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশনে যতগুলো জিনিস আছে আমরা সবগুলো নিয়েই কাজ করছি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়