মহসিন কবির: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় আওয়ামী লীগ। দলের নেতারা এমনটাই আশা প্রকাশ করেছেন। তবে জলাই অভ্যুত্থানের নিহতের ঘটনায় এখনো দুঃখ প্রকাশ করেনি দলটি, কিংবা অনুশোচনাও দেখায়নি। তারপরও বদিউল আলম মজুমদার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন নিষিদ্ধ না হলে নির্বাচন করতে বাধা নেই আওয়ামী লীগের।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ২০ ডিসেম্বর রংপুরে বলেছেন, অর্ন্তবর্তী সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে কোনো বাধা দেখছি না।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে নির্বাচন কমিশন সংস্কার থেকে কোনো রকম বাধা দেয়া হচ্ছে না। কিংবা কোনো রকম বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে না। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক সেই সুপারিশ আমরা করব। নির্বাচনে অযোগ্য না হলে সবার অংশগ্রহণের সুযোগ থাকা উচিত। আমরা চাই, সব দলের অংশগ্রহণে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক।
সরকার কিংবা আদালত যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে তাহলে দলটির নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিভাগের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন, কমিশনের উপর কোনো চাপ নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কমিশন।
বাংলাদেশে গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতাদের দাবি, জুলাই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত পতিত আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করার সুযোগ যেন না দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাছিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, তারা নির্বাচনকে স্বাগত জানায় এবং উপযুক্ত পরিবেশ পেলে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলছেন ভিন্ন কথা। তার ভাষায় এই অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কার্যক্রমকে তারা বৈধতা দিচ্ছে না। নির্বাচন নিয়ে এখনও কোনো উৎসাহ বা উদ্বেগ কিছুই নেই আওয়ামী লীগে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, নির্বাচনে সকল গণতান্ত্রিক শক্তি সকল রাজনৈতিক দল, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে। যেখানে সুনির্দিষ্ট কাউকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে অন্তবর্তী সরকার কোনো সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে কাজ করবে না অর্থাৎ সকলকে সমান অধিকার দিতে হবে। জনগণ তার ভোট দেবে। জনগণের ভোট দেয়ার অবাধ সুযোগ থাকতে হবে।
আব্দুর রহমান বলছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে তাদের মধ্যে এত ভীতি কেন। আওয়ামী লীগতো তাদের ভাষায় ফ্যাসিবাদ, তাদের ভাষায় গণধিকৃত; বাংলাদেশের মানুষই ঠিক করবে কোন দল রাজনীতিতে থাকবে কোন দল থাকবে না। কোন দল মানুষ গ্রহণ করবে কোন দল করবে না। যারা ভোটবিহীন, মানুষবিহীন, নির্বাচনবিহীন নেতা হতে চায়, ক্ষমতা দখলে রাখতে চায় তারা আওয়ামী লীগকে ভয় পায়।
আপনার মতামত লিখুন :