আওয়ামী লীগসহ ২৫টি দলের কাছে মতামত না চাওয়ার কারণ সরকারের কাছে জিজ্ঞেস করার পরামর্শ দিয়েছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। কমিশনকে সরকার করণীয় নির্ধারণ করে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবশ্যই সরকারের অভিপ্রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’র (আরএফইডি) সদস্য সাংবাদিকদের সঙ্গে সংস্কার কমিশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য শুধু ২২টি দলের কাছে প্রস্তাব চাচ্ছেন কেন, দল তো ৪৭টি, এটা কি বৈষম্য হলো না— এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটা নিয়ে আমরা আরেকদিন সংবাদ সম্মেলন করবো। আপনারা সরকারকে জিজ্ঞেস করেন। আমরা অনেকের কাছে মতামত নিচ্ছি। আমরা সরকারের অভিপ্রায়… সরকারকে জিজ্ঞেস করেন। আমরা চেষ্টা করছি সব দল ও মতের ঊর্ধ্বে থেকে একটা সুপারিশ যেন করতে পারি।
সরকারের সিদ্ধান্ত যদি আপনার কমিশনের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা কেমন সংস্কার পাবো— এই প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সরকার এই কমিশনগুলো গঠন করেছে। সরকার একটা কার্যপরিধি নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমাদের করণীয় নির্ধারণ করে দিয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অবশ্যই সরকারের অভিপ্রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সব মত ও পথের ব্যক্তির মতামত নেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রত্যেকের মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকবে। কারণ আমাদের কোনও নিজস্ব এজেন্ডা নেই। কারও পক্ষে বা বিপক্ষে কোনও বিশেষ দলের বা বিশেষ গোষ্ঠীর আমরা স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য একত্রিত হইনি। এই যে টিম আমাদের, আমরা বলিষ্ঠভাবে কাজ করছি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বলেন, অনেকের মতামত, সুপারিশ নেওয়ার সুযোগ হবে আমাদের। ওয়েবসাইট ও ই-মেইলে মতামত দেওয়া যাবে। আমরা কোন প্রেক্ষাপটে এখানে এসেছি, প্রেক্ষাপট হলো— দেড় হাজারের মতো প্রাণহানি হয়েছে। ২০, ৩০ হাজার ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা এই সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি। আমরা যেন তাদের রক্তের প্রতি বিশ্বাস ঘাতকতা না করি৷ আমরা তাদের রক্তের ঋণ শোধ করার জন্য বদ্ধ পরিকর। আমাদের কোনও রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা আগামী নির্বাচনের কথা শুধু চিন্তা করছি না। অনেক অন্যায়, অপকর্ম হয়েছে অতীতে— এগুলো যাতে বন্ধ হয়, নির্বাচন ব্যবস্থা যাতে কার্যকর হয়, তার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যাতে দীর্ঘমেয়াদে শক্ত হয় সেই ব্যবস্থা করবো।
তিনি আরও বলেন, ইভিএম ত্রুটিপূর্ণ ও দুর্বল যন্ত্র ছিল। এগুলো এখন অকেজো হয়ে গেছে বোধহয়। সবচেয়ে বড় কথা এটার জন্য রাজনৈতিক ঐক্য এবং আস্থাশীলতা দরকার। রাজনীতিবিদকেই এ বিষয়ে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সভায় আরএফইডি’র সভাপতি একরামুল হক সায়েমসহ অন্য নেতারা ও সদস্য সাংবাদিক এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারবিষয়ক কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :