গত তিন মাস ধরে ব্যাপক পরিসরে সামরিক মহড়া চালিয়েছে ইরানের সেনাবাহিনী এবং ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড করর্পস (আইআরজিসি)। এ সময়ে তেহেরান নতুন প্রতিরক্ষা এবং আক্রমণাত্মক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। খবর আল জাজিরা
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো এবং সামরিক স্থাপনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বোমা হামলার হুমকির মধ্যে তেহেরান আরেকটি সংকটময় বছরের মধ্যে প্রবেশ করেছে।
গাজায় ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ইরান তৃতীয়বারের মতো ইসরায়েলে ভয়াবহ হামলা চালানোর হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় একতেদার, জিলফাকার এবং গ্রেট প্রোফেটসহ পুরো ইরান জুড়ে সামরিক মহড়া চালানো হয়। ওমান সাগর এবং ভারতীয় মহাসাগরের উত্তরাঞ্চল জুড়েও এর পরিধি বিস্তৃত ছিল।
ইরান সামরিক মহড়ার মাধ্যমে ইসরায়েল ও পশ্চিমাদের একটি বার্তা দিয়েছে। মূলত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তেহেরানের ওপর যে চাপ সৃষ্টি করেছে, তাতে ইরান নত না হয়ে নিজেদের মতো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়।
গড়ে তোলা হয়েছে গোপন ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র
আইআরজিসি মাটির নিচে নির্মাণ করা তিনটি সামরিক ঘাঁটি উন্মোচন করেছে। দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধের জন্য এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে বলে এক কমান্ডার জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মাটির নিচে থাকা সামরিক ঘাঁটিকে ‘মিসাইল মেগাসিটি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেখা গেছে। রয়েছে কিছু মোবাইল লঞ্চারও।
মিসাইল মেগাসিটিতে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র বোঝাই স্পিডবোড দেখা গেছে, এছাড়া জাহাজ বিধ্বংসী অস্ত্রেরও প্রদর্শন করা হয়। আরও প্রদর্শন করা হয় নতুন ক্রুজ মিসাইল এবং জাহাজ বিধ্বংসী প্রেজেক্টটাইল। যেটি কাদের ৩৮০ নামে পরিচিত। এটি ১ হাজার কিলোমিটারের অধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এর অর্থ ইরান তার ভূখণ্ড থেকে জাহাজেও আঘাত হানতে পারে।
আইআরজিসি আরও জানিয়েছে, তাদের তৈরি নতুন জাহাজ বিধ্বংসী সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ২ হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করতে সক্ষম। দ্রুতই এটির উন্মোচন করা হবে।
যু.দ্ধবিমান : সামরিক মহড়ায় ইরান তাদের নিজস্ব যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে। যার মধ্যে ছিল সাঈখ এবং আজারাখশ। এছাড়াও ছিল রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি কিছু পুরাতন মডেলের যুদ্ধবিমান। যেগুলো ইরান ১৯৭৯ সালের আগে ব্যবহার করত।
নতুন যুদ্ধবিমানের মধ্যে ছিল রাশিয়ার তৈরি ইয়াক-১৩০ এবং মিগ-২৯। এগুলোর মাধ্যমে কীভাবে শত্রুপক্ষের ড্রোন আটক করা যায়, সেটিও মহড়ায় দেখানো হয়।