শিরোনাম
◈ দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারের সব অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ক্রিকেটে কাজে লাগাতে চাই: কোচ সিমন্স ◈ আমাদের পরামর্শ হয়তো আর দরকার নেই, এজন্য ডাকেনি : মুজিবুল হক চুন্নু ◈ পরামর্শ ইতিবাচকভাবে নিয়েছে সরকার: বৈঠক শেষে গণফোরাম ◈ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্রেসক্লাবের সামনে মারধর ◈ পলাতক পুলিশ সদস্যরা এখন ‘সন্ত্রাসী’ বিবেচিত হবে, দেখামাত্রই গ্রেফতার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ দুই মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক (ভিডিও) ◈ প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন লোক বসাবো : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (ভিডিও) ◈ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ: এবারও ডাক পায়নি জাপা ◈ নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা, বেঁচে গেলেন অল্পের জন্য ◈ সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করতে চায় ইসরায়েল

প্রকাশিত : ২৯ জুলাই, ২০২৪, ০৭:৩২ বিকাল
আপডেট : ১২ অক্টোবর, ২০২৪, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ: শিক্ষার্থীদের গণগ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধের দাবি

মুযনিবীন নাইম: [২] কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘জুলাই হত্যাকাণ্ড’ নামে ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক। গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধসহ আটক শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

[৩] সোমবার দুপুর সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে 'নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ' থেকে এই দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

[৪] সমাবেশ থেকে সারাদেশে হত্যা-গুম-গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ এবং আটকদের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও জুলাই মাস জুড়ে সংঘটিত মৃত্যুর ঘটনাকে 'জুলাই হত্যাকাণ্ড' বলে আখ্যা দিয়েছেন শিক্ষকরা। সমাবেশে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতাও পালন করেন তারা।

[৫] সমাবেশে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. আবদুল হাসিব চৌধুরী বলেন, 'আজকে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে এক মিথ্যার ওপরে। একটা উদাহরণ থেকেই বোঝা যায়, তা হলো আবু সাঈদের এফআইআর। দেশে যা ঘটছে সাধারণ মানুষ এখন মনে করে পুলিশ যা বলে সব মিথ্যা।'

[৬] তিনি আরও বলেন, ‘দুই ধরনের জায়গা দখলের চেষ্টা চলছে। মনোভূমি আর জমিন। মনোভূমি দখলের জন্য সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গন এবং মিডিয়া কাজ করে। এই মনোভূমি থেকে সরকারি লোকজন উচ্ছেদ হয়ে গেছে। সরকারের বয়ান, তাদের রাজনীতির স্থান ছাত্রদের মনোভূমিতে নেই। আর জমিন রক্ষায় চলছে বল প্রয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হলো। কারণ তা না হলে জমিন রক্ষা করতে পারবে না।’

[৭] খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, ১৫ বছর-১৭ বছরের বাচ্চাকে বলেন রাজাকার। আর একাত্তরের পরে যারা জন্ম নিয়েছে তাদের বলেন মুক্তিযোদ্ধা। ছাত্রদের নামে মামলাবাজি বন্ধ করুন। মোবাইল দেখে ঘর থেকে তুলে নিয়ে আসছেন। ৫ কোটি মানুষের মোবাইলে আন্দোলনের কোনো না কোনো ছবি পাওয়া যাবে। ৫ কোটি লোককে জেলে দেবেন? প্রশ্ন করেন তিনি।

[৮] জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসুদ ইমরান বলেন, 'আমি এখানে কোনো বিচার চাইতে আসিনি, আমি ঘৃণা জানাতে এসেছি। এই রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ঘৃণা জানাতে এসেছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্য সমন্বয়কদের নিয়ে রাতে যখন নাটক চলছিল তখন আমি ওই  ছেলেটির মুখটিও খুঁজছিলাম। কিন্তু তাকে দেখা যায়নি। ওকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। ও গেল কোথায়? আরও অনেক শিক্ষার্থীকে পাওয়া যাচ্ছে না। ওরা গেল কোথায়?'

[৯] তিনি আরও বলেন, 'শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার লাল সালাম। তারা যা করেছে ঠিকঠাক করেছে। ডিবি অফিসে তাদের আটকে রেখেছে, বয়ান দেয়াচ্ছে। তারা তো বলেই দিলো আন্দোলন থেকে সরে গেলাম। এটাই তো আপনারা চাচ্ছিলেন। কই এখন পর্যন্ত তো ছাড়া হলো না।'

[১০] ঢাবির আরেক শিক্ষক চৌধুরী সায়েমা ফেরদৌস বলেন, 'বিচার কার কাছে চাইবো, কোথায় চাইবো? আমরা ঘৃণা জানাই। ক্যাম্পাসে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঞ্ছনা হয়েছে। আমি সারারাত ঘুমাতে পারি না। যে বাবা-মা'র বুক খালি হয়েছে তাদের ঘরের কী অবস্থা! আপনারা আমাদের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না। জন্মেছি একবার, মরবও একবার, ভয় দেখাবেন না।'

[১১] সমাবেশে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সংবাদকর্মীদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছেন শিক্ষকরা। সাংবাদিকদের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে দেশের মানুষের কথা বলার আহ্বান জানানো হয়।

[১২] ঢাবি অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেন, 'বিদেশি পত্রিকা, টেলিভিশনে খবর দেখে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এক অধ্যাপক আমাকে ইমেইল করেছে। সে চিন্তিত বাংলাদেশ নিয়ে। আমার দেশের শিক্ষকরা কোথায়? এখানে কেন এই অল্পসংখ্যক শিক্ষক?'

[১৩] সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'চুপ থাকা অন্যায় কিন্তু এর চেয়েও বড় অন্যায় মিথ্যা ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠিত করতে চাওয়া। আশা করি আজকের পর থেকে বাংলাদেশের টেলিভিশনগুলো টেলিভিশন হয়ে উঠবে।'

[১৪] সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সাইমুম রেজা, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ নাহিদ নেওয়াজ, গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রীতু শারমিন, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষক অলিউর সানসহ আরও অনেকে। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়