পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরের পরও দেশে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, চলতি এপ্রিল মাসের ১ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১,৯৬৬ মিলিয়ন (১৯৬৬ কোটি) মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
২০২৪ সালের ওই একই সময়ে দেশে এসেছিল ১,৩৯৭ মিলিয়ন ডলার। শুধু ২১ এপ্রিল একদিনেই এসেছে ৮৫ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, এপ্রিলের প্রতিদিন গড়ে ৯ কোটির বেশি ডলার এসেছে।
ব্যাংকারদের ধারণা, এ ধারা অব্যাহত থাকলে পুরো এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন বা ৩০০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এপ্রিলের প্রথম ১৯ দিনে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৯৯ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলো এনেছে ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার।
অর্থবছর ভিত্তিক হিসাবে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (জুলাই ২০২৪ - ২১ এপ্রিল ২০২৫) প্রথম ৯ মাস ২১ দিনে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২৩,৭৫১ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৮,৪৭১ মিলিয়ন ডলার। ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহে ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্রিয় অবস্থান, প্রণোদনার সহজ প্রাপ্তি এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে আস্থা বৃদ্ধির ফলেই প্রবাসীরা বৈধ পথেই বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন।
তারা আরও বলছেন, রেমিট্যান্স হচ্ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার জোগানের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস, যার বিপরীতে কোনও বৈদেশিক ব্যয়ের প্রয়োজন হয় না। ফলে এই প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা রাখছে।
গত মার্চে এক মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন রেকর্ড ৩,২৯০ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ। মার্চের পর প্রবাসী আয়ের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনও অব্যাহত রয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক।