শিরোনাম
◈ বাংলাদেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: সেনাপ্রধান ◈ সুযোগ নষ্টের মহড়ায় প্রথমার্ধে গোলশূন্য বাংলাদেশ ◈ সারজিসের শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তাসনিম জারা ◈ আবারও বলছি এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা ◈ রূপপুরে টার্বাইন স্থাপনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ও চূড়ান্ত ধাপ সম্পন্ন ◈ হাসপাতালে এসে সাকিবের বাবা কুটিল বললেন, তামিমের বাবা আমার খেলার বন্ধু ছিলেন ◈ চিকিৎসকরা বলেছেন, তামিম ৩ মাস বিশ্রামের পর  মাঠে যেতে পারবেন  ◈ আল্লাহর অশেষ রহমত আর দেশবাসির দোয়ায় আমি ফিরে এসেছি, হাসপাতাল থেকে ফেসবুকে তামিম ◈ ইন্ডিয়া টুডের তথ্য বিকৃতি প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর প্রতিবাদ ◈ ‘আওয়ামী লিগ’ নামে নতুন দলের নিবন্ধন আবেদন, যা বললেন ইসি সচিব

প্রকাশিত : ২৪ মার্চ, ২০২৫, ১২:০০ রাত
আপডেট : ২৫ মার্চ, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

‘জেট ফুয়েলের দাম কমানোর সুযোগ রয়েছে’

মনজুর এ আজিজ : বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) জেট ফুয়েলের (উড়োজাহাজের জ্বালানি) দাম আন্তর্জাতিক রুটের জন্য লিটারে ১ সেন্টস কমানো এবং অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য ১ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) টেকনিক্যাল মূল্যায়ন কমিটি মনে করছে জেট ফুয়েলের অভ্যন্তরীণ রুটে বিদ্যমান দর ১১০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৫.৫১ টাকা এবং আন্তর্জাতিক রুটে ৭৪ সেন্টস থেকে কমিয়ে ৬৯ সেন্টস করা যেতে পারে। রোববার বিইআরসির গণশুনানিতে এমন প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।

বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদের নেতৃত্বে শুনানিতে অংশ নেন বিইআরসির সদস্য সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, মো. মিজানুর রহমান, মো. আব্দুর রাজ্জাক ও মোহাম্মদ শাহিদ সারওয়ার।

প্রথমবারের মতো জেট ফুয়েলের দাম গণশুনানির মাধ্যমে নির্ধারণের প্রক্রিয়া রোববার থেকে শুরু হয়। এতোদিন বিপিসি নিজেই দর নির্ধারণ করে এসেছে। 

বিইআরসি টেকনিক্যাল কমিটি তার প্রতিবেদনে বলেছে, বিপিসির ফর্মুলায় থাকা পরিচালন ব্যয়, আর্থিক চার্জ, স্টোরেজ চার্জ, বিতরণ ও বিপণন চার্জ, বিপিসির মার্জিন পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। ডিসেম্বর মাসের তথ্য অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের আমদানির খরচ পড়েছে ৭৪.৫২ টাকা। শুল্ক-করাদি ২১.৮৯ টাকা, অপরেশনাল ব্যয় ৭.২৮ টাকা, কোম্পানি পর্যায়ে (বিমানবন্দর খরচ, পরিবহন ও কোম্পানির মার্জিন) ব্যয় ২.৬৪ টাকা এবং বিপিসির মার্জিন ৪.৩৯ টাকা যাচাই করা এবং আমদানি পর্যায়ের অন্যান্য খরচ পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। এসব পর্যালোচনা ছাড়াই তারা উভয় ক্ষেত্রে দর কমানোর পক্ষে মতামত দিয়েছে।

টেকনিক্যাল কমিটি তার সুপারিশে বলেছে, জেট ফুয়েল যেহেতু আমদানি করা হয়, সে কারণে আন্তর্জাতিক বাজারদর, ডলারের রেট, কোস্টাল ব্যয় এবং ট্যাংকলরীর মার্জিন মাসে মাসে সমন্বয় করা যতে পারে। অন্যান্য ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে।

জেরাপর্বে ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলমের নানা প্রশ্নে উত্তর দিতে হিমশিম খেতে হয় বিইআরসি টেকনিক্যাল কমিটি, বিপিসি ও বিপণন কোম্পানি পদ্মা অয়েলের কর্মকর্তাদের।

শামসুল আলম বলেন, আপনারা লেট পেমেন্ট ও ড্যামারেজ খাতে যথাক্রমে ১ টাকা ও ১০ পয়সা হারে মার্জিন চেয়েছেন। এ ব্যয় নিয়মিত হিসেবে দিতে হলে প্রমাণ করে কোম্পানির দক্ষতার অভাব রয়েছে। জবাবে বিপিসির জেনারেল ম্যানেজার এটিএম সেলিম উদ্দিন বলেন, আমরা টাকা দেই, অনেক সময় ডলার সংকটে ব্যাংকগুলো পেমেন্ট দিতে বিলম্ব করে। এমন উত্তরে শামসুল আলম বলেন, এই দুর্বলতার দায় ভোক্তার কাঁধে চাপানো অন্যায়।

শামসুল আলম পদ্মা অয়েল কোম্পানির বোর্ড সভার সম্মানি জনপ্রতি ১২ হাজার টাকা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানতে চান, বছরে কতটি সভা হয়। জবাবে পদ্মা অয়েল কোম্পানির সিএফও বলেন, বছরে গড়ে প্রায় ২৪টির মতো সভা হয়। প্রয়োজনে বেশিও হয়ে থাকে। উত্তরের প্রেক্ষিতে শামসুল আলম বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা সার্ভিস দেওয়ার জন্য বেতন নিচ্ছেন। তারা আবার কোম্পানির বোর্ড থেকে বছরে প্রায় ৩ লাখ টাকার বেশি সম্মানি নিচ্ছেন। এটা রোহিত করা হোক।

নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, পদ্মা অয়েল কোম্পানি মনোপলি ব্যবসার কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেশি। বিদেশি এয়ারলাইন্স এখানে কম তেল কিনছে, আমাদের জ্বালানি খরচ প্রায় ২১ শতাংশ। আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছি না। আমরা লোকসান দিয়ে ঋণ খেলাপী হচ্ছি আর পদ্মা অয়েলের হিসাব ভারি হচ্ছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের সময় হঠাৎ করে একলাফে ৮৭ টাকা থেকে ১৩০ টাকা করা হলো। ২০২৩ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে গেলেও আমাদের দেশে কমানো হয় নি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের মতো এতো বেশি দাম কোথাও নেই। কুয়ালালামপুর ৫৭ সেন্টস, ব্যাংকক ৫৫ সেন্টস, সিঙ্গাপুর ৫৮ সেন্টস, দুবাই ও দোহা ৬১ সেন্টস, কলকাতা ৬৩ সেন্টস, সেখানে আমাদের কিনতে হচ্ছে ৭৫ সেন্টস দরে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটের উচ্চমূল্য নিয়েও আপত্তি তোলেন। তিনি বিইআরসির কাছে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার আবেদন জানান।

শুনানি শেষে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, আমরা সকলের বক্তব্য জানলাম। শুনানি পরিবর্তী কারো কোন মতামত থাকলে ৭ এপ্রিলের মধ্যে লিখিতভাবে জমা দেওয়া যাবে। যারা অংশ নিয়েছেন তারা দিতে পারবেন, আবার অন্যরাও দিতে পারবেন। আমরা এলপি গ্যাসের ফর্মূলার মতো করতে চাই। আন্তর্জাতিক বাজারদর কমবেশি হলে সেই অংশটুকু মাসে মাসে সমন্বয় করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়