শিরোনাম

প্রকাশিত : ২২ মার্চ, ২০২৫, ০৮:০২ রাত
আপডেট : ২৩ মার্চ, ২০২৫, ০৫:০৫ বিকাল

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধির গণশুনানি রোববার

মনজুর এ আজিজ : দেশে প্রথমবারের মতো রোববার জেট ফুয়েলের (উড়োজাহাজের জ্বালানি) দাম সমন্বয় প্রস্তাবের উপর গণশুনানি গ্রহণ করবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সকাল ১০টায় বিইআরসির কনফারেন্স রুমে এই গণশুনানি গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব এবং একমাত্র বিতরণ কোম্পানি পদ্মা অয়েলের কমিশন বৃদ্ধির প্রস্তাবের উপর শুনানি গ্রহণ করা হবে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি তার প্রস্তাবে বলেছে, সরবরাহ ও বিপণনে ২.১১ টাকা খরচ হয়। সেখানে বিদ্যমান কাঠামো অনুযায়ী মাত্র ৯৫ পয়সা আদায় হয়। অন্যদিকে বিপিসি আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় সমন্বয়ের আবেদন করেছে।

এবারেই প্রথম জেট ফুয়েলের গণশুনানির প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি ৩ মাস পর দাম সমন্বয় করতে চায় বিইআরসি। এলপি গ্যাসের মতো অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত রেখে শুধু আমদানি মূল্য সমন্বয়ের কথা ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি।

গণশুনানির পর ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল থেকে প্রতিমাসে এলপি গ্যাসের দাম ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি। আমদানি নির্ভর এলপি গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজারদর কমবেশি হলে সেই অংশটুকু সমন্বয় করে প্রতিমাসে দর ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি। একই ফর্মুলার কথা বিইআরসি চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ।

তিনি বলেছেন, প্রাথমিকভাবে প্রতি ৩ মাস পর দর সমন্বয় করার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। এলপি গ্যাসের মতো প্রতিমাসে নয় কেনো! এমন প্রশ্নের জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেছেন, জেট ফুয়েলের ব্যবহারকারি খুবই সীমিত। সে কারণে প্রাথমিকভাবে ৩ মাস পরপর সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি বিবেচায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) নিজেরাই এই পণ্যটির আমদানিকারক আবার তারাই দাম নির্ধারণ করে এসেছে। অন্তবর্তীকালীন সরকার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণের এখতিয়ার বিইআরসির উপর ন্যাস্ত করা হয়। এরপর বিপিসির পক্ষ থেকে দাম সমন্বয়ের আবেদন দেওয়া হয়েছে।

বিপিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭৩ লাখ ৪৬ হাজার মে. টন জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়েছে। এরমধ্যে ডিজেল ৬৭.১৯ শতাংশ, ফার্নেস অয়েল ১১.৯৯ শতাংশ, এরপরেই রয়েছে জেট-এ ওয়ান ৬.৪২ শতাংশ। পেট্রোল ৬.১৯, অকটেন ৫.৩৬, কেরোসিন ১.০৫ অন্যান্য ১.৮০ শতাংশ।

২০০৩ সালে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন পাশের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ও আধাবিচারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিইআরসি গঠিত হয়। গ্যাস ও বিদ্যুতের বিতরণ কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা এবং ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত বিইআরসি মূলত ২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করে। আইনে সকল ধরণের জ্বালানির দাম নির্ধারণের এখতিয়ার দেওয়া প্রবিধানমালা ঝুলে থাকায় শুধুমাত্র গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করে আসছিল বিইআরসি। হঠাৎ করেই আইন সংশোধন করে ২০২৩ সালে নির্বাহী আদেশে দাম সমন্বয় (কম/বেশি) করার বিধান যুক্ত করা হয়।

তারপর থেকে কার্যত বেকার হয়ে পড়েছিল আধাবিচারিক প্রতিষ্ঠানটি। অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের ধারা বাতিল করে দিয়েছে। এতে অনেকটা গতিতে ফিরেছে বিইআরসি। এখনও প্রবিধানমালার দোহাই দিয়ে নির্বাহী আদেশে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম নির্ধারণের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ১২টি প্রবিধানমালা অনুমোদনের অপেক্ষায় ঝুলে রাখা হয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের আমলারাও বিষয়টি ঝুলে রাখার পথেই হাটছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়