শিরোনাম
◈ সাড়ে পাঁচ কোটি ভোটার এখনও পাননি  স্মার্টকার্ড  ◈ আজ জাতীয় শহীদ সেনা দিবস: বিডিআর হত্যাযজ্ঞের ১৬ বছর ◈ বেলজিয়ামে আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড, বিধ্বস্ত চেহারায় প্রকাশ্যে হাছান মাহমুদ ◈ সংস্কার হতে হবে নির্বাচনমুখী: আন্দালিব রহমান পার্থ ◈ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন তৌহিদ হোসেন ◈ একদিন ম্যানেজ হলে ঈদে মিলবে টানা ৯ দিনের ছুটি ◈ বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা: কারাগার থেকে পালিয়েছেন ফাঁসির আসামি জেমি ◈ সাজেক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করে প্রশাসনের বার্তা ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক, অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ◈ শুক্রবার আত্মপ্রকাশ করছে ছাত্রদের নতুন দল

প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৮:০০ রাত
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আসায় ক্ষতির মুখে দেশীয় টেক্সটাইল মিলস

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিকৃত ভারতীয় সুতা ডাম্পিং মূল্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় দেশীয় টেক্সটাইল মিলস ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান ক্লাবে বিশেষ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি করেছেন তিনি। 

বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি তথা রপ্তানি আয়ের প্রধান চালিকা শক্তি দেশের টেক্সটাইল সেক্টর দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি, ডলারের সংকট, ব্যাংক সুদের হার ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের শর্তাবলী পূরণের অজুহাতে রপ্তানির বিপরীতে নগদ প্রণোদনার অস্বাভাবিক হ্রাস এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের সংকট ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

টেক্সটাইল শিল্পের উল্লিখিত সমস্যাবলী ছাড়াও ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর/কাস্টমস হাউজ ব্যবহার করে ডাম্পিং মূল্যে সুতা ও কাপড় স্থানীয় বাজারে প্রবেশের ফলে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের চ্যালেঞ্জে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে, বলে দাবি করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

তিনি বলেন, আমরা যেটুকু সুতা উৎপাদন করছি তা বিক্রি করতে পারছি না। এলসি ও বিনা এলসিতে ভারত থেকে সূতা আসছে। অন্যদিকে ভারত যে দামে সুতা বিক্রি করছে তা ডাম্পিং। ফলে আমাদের উৎপাদিত সুতা গুদামে অবিক্রিত পড়ে আছে। বর্তমানে ৮ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার সুতা আমাদের সদস্যদের গুদামে অবিক্রিত পড়ে আছে।

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে গঠিত সরকারের কাছে আমরা সকল বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দেশের স্বার্থে অনতিবিলম্বে দেশীয় টেক্সটাইল খাতের ন্যায্য স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে আমাদের দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার দাবি জানাচ্ছি। সব স্থলবন্দর/কাস্টমস হাউজ ব্যবহার করে সুতা আমদানি বন্ধ করে শুধু সমুদ্র বন্দর দিয়ে সব ধরনের সুতা আমদানির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কর্তৃক গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সাম্প্রতিক উদ্যোগ অবিলম্বে বন্ধ করে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক। সেই সঙ্গে অবিলম্বে বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রক্রিয়া স্থগিত করার দাবি জানান বিটিএমএ সভাপতি।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সহসভাপতি সালেউদ জামান খান অভিযোগ করেন, ভারত প্রতি কিলোগ্রাম সুতাতে ১১ রুপি ভর্তুকি দিচ্ছে। তারা কার্যত রাষ্ট্রীয়ভাবে ডাম্পিংকে সহায়তা করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো সুতার দাম কম হওয়ায় লাভবান হচ্ছে না, শেষ পর্যন্ত এর সুবিধা যাচ্ছে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে।
তিনি গ্যাসের দাম ইউনিট প্রতি ২০ টাকার নিচে নামানোর দাবি জানিয়ে বলেন, চলমান গ্যাস সংকটের কারণে মিলগুলো মাত্র ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ক্ষমতায় চলছে।

বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য সুদের হার একক অঙ্কে নামিয়ে আনার দাবি জানান বিটিএমএ সহসভাপতি মো. আবুল কালাম । তিনি আগামী তিন বছরের জন্য সুদের হার এক অঙ্কে স্থির করার আহ্বান জানান।

বিটিএমএ পরিচালক প্রকৌশলী রাজীব হায়দার মুন্না বলেন, মাটির নিচে গ্যাস মজুত রেখে, কার স্বার্থে এলএনজি আমদানিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে? দেশে এলএনজি আমদানি করে টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক শিল্প টিকে থাকতে পারে না। তিনি বিইআরসির শুনানিতে কারখানার চাবি জমা দেওয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, ৭০ টাকা দিয়ে কারখানা চালানো সম্ভব হবে না, তাই শুনানির দিন আমরা কারখানার চাবি জমা দেব।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিটিএমএ প্রাইমারি টেক্সটাইল সেক্টরের সর্ববৃহৎ সংগঠন, এর সদস্য সংখ্যা এক হাজার ৮৫৪। এর মধ্যে স্পিনিং ৫২৭টি, উইভিং ৯৮৬টি এবং ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং ৩৪১টি মিল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক যা বেসরকারি খাতে একক বিনিয়োগ হিসেবে সর্বাধিক। জিডিপিতে টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেল সেক্টরের অবদান প্রায় ১৩ শতাংশ। দীর্ঘদিন যাবত দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল সেক্টর থেকে অর্জিত হচ্ছে যাতে বিটিএমএ সদস্যরা প্রায় ৭০ শতাংশের জোগানদাতা এবং এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিটেশন হচ্ছে প্রায় ৩০ শতাংশ। বর্তমানে বিটিএমএর সদস্য মিলগুলো তৈরি পোশাক শিল্পের মধ্যে নিট খাতের প্রয়োজনীয় সুতার প্রায় ১০০ শতাংশ এবং উইভিংয়ে ৫০ শতাংশ সরবরাহ করছে। এছাড়াও বিটিএমএর সদস্য মিলগুলো ডেনিম, হোম টেক্সটাইল ও টেরি টাওয়ালের শতভাগ দেশীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি আয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়