শিরোনাম
◈ মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া নিলে সিএনজি চালককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ◈ হাসিনাসহ শীর্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩-৪টি মামলার রায় অক্টোবরে: আসিফ নজরুল (ভিডিও) ◈ বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা নির্বাচন আশা করছে ইউএনডিপি: স্টেফান লিলার ◈ বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত গ্রেফতার ৪৮ ◈ শাহবাগে আজও প্রাথমিকের নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা (ভিডিও) ◈ আধিপত্য থেকে বৈধতার সংকটে আওয়ামী লীগ! ◈ আশুলিয়ায় পোশাক কারখানার ভেতরে  শ্রমিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার  ◈ গাজীপুরে ৮১ জন গ্রেফতার অপারেশন ডেবিট হান্টের ৩য় দিনে ◈ ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি (ভিডিও) ◈ বাধার মুখে ধর্ষণ মামলার আসামি ধরতে গিয়ে ফিরে এল র‍্যাব

প্রকাশিত : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৫ দুপুর
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৬:০৮ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পূর্ণ সক্ষমতায় আদানিকে বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান বাংলাদেশের

রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) প্রতি মাসে আদানিকে ৮৫ মিলিয়ন ডলার করে দিচ্ছে এবং এখন কোম্পানিটিকে দুই ইউনিট থেকেই বিদ্যুৎ পুনরায় সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে।

আদানিকে ভারতে অবস্থিত তাদের ১৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র পূর্ণ সক্ষমতায় চালুর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। খবর: রয়টার্স

তিনি জানান, তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে আদানি বাংলাদেশে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছিল। শীতের মৌসুমে কম চাহিদা ও অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত বিরোধের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নেমে আসে।

২০১৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের চুক্তির অধীনে ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত আদানি তাদের ২ বিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট নিয়ে গঠিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত সম্পূর্ণ বিদ্যুৎই বাংলাদেশে সরবরাহ করা হয়।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মোকাবিলার কারণে বাংলাদেশের বিল পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় আদানি ৩১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে। এর ফলে ১ নভেম্বর একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি মাত্র ৪২% সক্ষমতায় পরিচালিত হতে থাকে।

পরবর্তীতে বাংলাদেশও আদানিকে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বলেছিল।

রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, বকেয়া পরিশোধের জন্য তারা প্রতি মাসে আদানিকে ৮৫ মিলিয়ন ডলার করে দিচ্ছে এবং এখন কোম্পানিটিকে দুই ইউনিট থেকেই বিদ্যুৎ পুনরায় সরবরাহের জন্য বলেছে।

বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম রয়টার্সকে বলেন, "সাম্প্রতিক চাহিদা অনুসারে তারা দ্বিতীয় ইউনিট চালুর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু অনেক বেশি কম্পনের কারণে তা সম্ভব হয়নি।" তিনি জানান, সোমবার ইউনিটটি পুনরায় চালু করতে গিয়ে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, "বর্তমানে আমরা প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছি। আরও বেশি পরিশোধের চেষ্টা চলছে এবং বকেয়া কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখন আদানির সঙ্গে কোনো বড় সমস্যা নেই।"

এ বিষয়ে আদানির একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।

গত ডিসেম্বরে আদানির একটি সূত্র জানায়, বিপিডিবির কাছে কোম্পানির পাওনা প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার। তবে করিম সে সময় দাবি করেছিলেন, বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার।

বিদ্যুতের ট্যারিফ নির্ধারণ নিয়ে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু হলো ২০১৭ সালের চুক্তি, যেখানে দুটি সূচকের গড়ের ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রয়টার্স এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানি থেকে নেওয়া বিদ্যুতের মূল্য ভারত থেকে সরবরাহকৃত অন্য কেন্দ্রের বিদ্যুতের মূল্যের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশের আদালত আদানির সঙ্গে করা চুক্তি পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এর জন্য একটি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পর্যালোচনার ফলাফল চলতি মাসেই প্রকাশ পেতে পারে। এর উপর ভিত্তি করে চুক্তি পুনঃআলোচনার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

গত বছর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আদানিকে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ করেছিল। অভিযোগটি ছিল যে, ঝাড়খণ্ড প্ল্যান্ট ভারতীয় সরকারের কাছ থেকে পাওয়া কর সুবিধা বাংলাদেশকে না দেওয়ায় চুক্তির শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। রয়টার্স গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট নথির উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছিল।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা তখন জানায়, তারা চুক্তিটি পর্যালোচনা করছে।

তবে, আদানির এক মুখপাত্র সে সময় রয়টার্স-কে বলেন, তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে করা চুক্তির সব শর্ত মেনে চলেছে এবং তাদের কাছে চুক্তি পর্যালোচনার কোনো আনুষ্ঠানিক ইঙ্গিত আসেনি।

এদিকে, দুই পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য নিরসন হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে রয়টার্স-এর প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি বিপিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম।

গত নভেম্বরে, মার্কিন প্রসিকিউটররা আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি ও কোম্পানিটির আরও সাতজন নির্বাহীর বিরুদ্ধে ভারতে ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।

তবে, আদানি গ্রুপ এই অভিযোগকে "ভিত্তিহীন" বলে উল্লেখ করেছে।

এর আগে, গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটি, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে স্বাক্ষরিত প্রধান প্রধান জ্বালানি চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে নয়াদিল্লি পালিয়ে যান। অনুবাদ: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়