নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমান কর ব্যবস্থা বিনিয়োগ পরিপন্থী। কর ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা দরকার বলে মনে করেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
অন্তর্বতী সরকারকে আরও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। এজন্য ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে বাস্তবায়নযোগ্য নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি। শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্টস ফোরামের (বিএলআরজেএফ) দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএলআরজেএফের সভাপতি কাজী আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএলআরজেএফ’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (বিএলএফ) এর ডেপুটি ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস মাহমুদুল হাসান খান এবং বাংলাদেশ ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমবি নিট ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাতেম আরো বলেন, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী চান তাদের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পান। এটি উৎপাদন ও শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ক্রেতারা শুধু ট্রেড ইউনিয়নের কথা বলে। তারা যদি বাংলাদেশী পণ্যের ন্যায্য ও নৈতিক মূল্য না দেয়, তাহলে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা অসম্ভব।
মোহাম্মদ হাতেম বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নীতি বাস্তবায়নের জন্য স্টেকহোল্ডার এবং ব্যবসায়িকদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বা নীতিমালা তৈরি করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, গত ছয় মাসে সরকার ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। সাবেক সরকার রপ্তানি নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছে। তথ্যের ভিত্তিতে এলডিসি পরিকল্পনা নিয়েছে। এলডিসি থেকে স্নাতক হওয়ার সঠিক সময় নয়।
তিনি আরও বলেন, শিল্প ইউনিটে পর্যাপ্ত গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ না করে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো অযৌক্তিক। এতে অনেক শিল্প কলকারখানা বন্ধ বন্ধ হয়ে যাবে।
সেখানে বক্তৃতায় ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের (টিডব্লিউইউ) সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে শ্রমিকদের জন্য ২৫ হাজার টাকা মজুরি নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
"চামড়া শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে কিন্তু পদ্ধতিগতভাবে শিল্পটি ধ্বংস হয়ে গেছে। এক সময় একটি গরুর কাঁচা চামড়া ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও এখন খালে ছুঁড়ে ফেলতে হয় বা মাটিতে পুঁতে দিতে হয়। সরকারের যথাযথ সহযোগিতা এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি সাভারে অপরিকল্পিত ট্যানারি এস্টেটের সমালোচনা করেন, শিল্পের বিকাশ এবং শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে মিডিয়ার সহায়তাও চেয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (বিএলএফ) এর ডেপুটি ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস মাহমুদুল হাসান খান তুলে ধরেন যে, দেশের শিল্পের বিকাশের জন্য শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হলে উৎপাদনও বাড়বে। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। উল্লেখ্য, বিএলআরজেএফ ২০১৫ সালে গঠিত হয়। শনিবার ঢাকার তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্কে ফোরাম তার বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করে।
আপনার মতামত লিখুন :