শিরোনাম
◈ সিলেটকে হারিয়ে বিপিএলের প্লে-অফে খেলার পথে দুর্বার রাজশাহী ◈ গ্যাসের দাম বাড়ালে পোশাক খাতে খরচ বাড়বে ১৮ হাজার কোটি টাকা ◈ পাকিস্তানের মাটিতে ৩৪ বছর পর টেস্ট জয় করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ◈ কারাগারে সাবেক বিচারপতি মানিকের মৃত্যুর খবর নিয়ে যা জানা গেল ◈ রংপুরের হয়ে খেলতে আসছেন টিম ডেভিড, সুনিল নারাইন ও ডেভিড ওয়ার্নার  ◈ বান্দরবানে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে কেএনএফের দুই সন্ত্রাসী আটক ◈ এবার আল্টিমেটাম দিয়ে নিউমার্কেট থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের ◈ বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নির্ভরশীলতা বন্ধ করা উচিত: নিক্কেই এশিয়ায় মতামত প্রতিবেদন ◈ সংস্কার  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশল পরিবর্তন করতে হবে,তহবিলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান ◈ টেবিলের নিচ দিয়ে টাকা দেওয়া থেকে বাড়তি ভ্যাট ভালো: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৯:৩৪ রাত
আপডেট : ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে না, বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা

মহসিন কবির: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে আস্থা পাচ্ছেন না সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। উল্টো অনেকে লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েও বাজার ছাড়ছেন। ফলে বাজারে চলছে টানা পতন। সপ্তাহে একদিন বাড়ছে, টানা চারদিন কমে। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে মূলধনী মুনাফার ওপর করহার হ্রাস করেছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ-সক্ষমতা বাড়াতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) সরকারের গ্যারান্টিতে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। এরপরও বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরেনি।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছোট, মাঝারি ও বড় সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা ভর করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে কেউ বিনিয়োগে এগিয়ে আসছেন না। উল্টো অনেকে লোকসান মেনে নিয়ে শেয়ার বিক্রি করে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। গত আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যারা নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছিলেন, তারাও এখন আর অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ গণমাধ্যমকে বলে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেছে। ৭ হাজার ২০০ পয়েন্টের সময় যেসব বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করেছেন তারা টাকা বের করে নিয়ে গেছেন। নতুন করে আর বিনিয়োগ করছে না। অন্যদিকে বাজার সুদের হার বেশি। ব্যাংকে আমানত রাখলে ১০ থেকে ১২ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে। ব্যক্তিশ্রেণির বড় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগ বিবেচনায় ব্যাংকে টাকা রাখছেন। এমনকি যেসব ব্যাংকের হাতে অলস টাকা আছে, তারা ট্রেজারি বিল-বণ্ডে বিনিয়োগ করছে। শেয়ারবাজারমুখী টাকার প্রবাহ নেই, উল্টো বড় বিনিয়োগকারী তুলে নিচ্ছে। সুদের হার না কমলে শেয়ারবাজারে গতি ফিরবে না।

কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশের পুঁজিবাজার মানেই দরপতনের ইতিহাস। তবে যখন রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সংস্কার চলছে, অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার আভাস মিলছে তখন এমন দরপতন মেনে নেওয়া যায় না। অর্থনীতির বড় সংকটের মধ্যে থেকেও সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তায় শ্রীলংকার শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। 

শেয়ারবাজার নিয়ে খোদ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেউদ্দিন আহমেদ জানান, পুঁজিবাজারে অস্থিরতার পেছনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বলতা ও ‘প্লেয়ারদের’ ভূমিকা রয়েছে। গত ১৫ বছরে বড় ধরনের তথ্যবিভ্রাট ঘটানো হয়েছে। ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের মতো পুঁজিবাজারের অবস্থাও একই রকমের। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা অস্তিত্ব বা ন্যূনতম কোনো মূল্য নেই এমন কোম্পানির শেয়ার মহাআনন্দে কিনছেন। আবার শেয়ারের দাম কমে গেলে আন্দোলন করেন, এটা ঠিক নয়। তবে পুঁজিবাজারের প্লেয়ার ও রেগুলেটরের অনেক দোষ আছে।

ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, বাজারে ভালো শেয়ারের অভাব রয়েছে। এ জন্য নতুন শেয়ার আনতে হবে। এ ছাড়া শেয়ারবাজারের সবপক্ষের মধ্যে স্বচ্ছতা আনতে হবে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমেছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। মূল্যসূচক কমছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮১টির এবং ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩১২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

রোববারের লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২৫ কোটি ১৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির ২২ কোটি ৬২ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সেন্টাল ইন্স্যুরেন্স। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জিপি এইচ ইস্পাত, ড্রাগন সোয়েটার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ফাইন ফুডস, গ্রামীণফোন, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড এবং বিকন ফার্মা।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫৪ পয়েন্ট। এই বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১০টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়