শিরোনাম
◈ কী হয়েছিল জেনেভা বিমানবন্দরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে? ভিডিও ◈ হিলি স্থলবন্দরে একদিনেই এলো ১৮০০ মেট্রিক টন আলু, কিছুটা কমেছে দাম ◈ এমবাপ্পেকে ছাড়াই নেশন্স লিগের জন্য দল ঘোষণা করলো ফ্রান্স ◈ তৃণমূল থেকে ক্রিকেটার বের করার লক্ষ্যে জিয়া টুর্নামেন্ট সোমবার শুরু ◈ ইংলিশ ক্রিকেটার অ্যান্ডারসক কেন ৪২ বছর বয়সে আইপিএলে নাম দিলেন? ◈ বাংলাদেশ সফরে সিরিজের জন্য আয়ারল্যান্ডের দল ঘোষণা ◈ পটপরিবর্তনের পর সরকার থেকে আমার কাছে দিকনির্দেশনা চাওয়া হয়: বুলবুল ◈ পরিকল্পিতভাবে এজলাসে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করা হয়েছে: আইনজীবী (ভিডিও) ◈ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার ব্যবসা বন্ধ হওয়া দরকার: ব্যারিস্টার ফুয়াদ ◈ নারী ফুটবলারের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত : ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:২০ দুপুর
আপডেট : ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ০১:০১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

লাগাম টানা যাচ্ছে না মূল্যস্ফীতির

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা যাচ্ছে না কিছুতেই। বেশ কয়েক ধাপে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়িয়েও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। অক্টোবরে গড় মূল্যস্ফীতি আবারো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশে। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশে ঠেকেছে। গতকাল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। 

অক্টোবরের মূল্যস্ফীতির তথ্যে দেখা যায়, এই মাসে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশে। এটি আগের মাস সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে ঠেকেছিল। 

গড় মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশের অর্থ হলো ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে যে পণ্য ১০০ টাকায় কিনতে হয়েছিল এ বছরের অক্টোবরে তা কিনতে হয়েছে ১১০ টাকা ৮৭ পয়সায়।

এদিকে অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশে ঠেকেছে। যদিও গত জুলাইয়ে ১৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বেড়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ আগস্টের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া বন্যাকে দায়ী করছে অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছে, দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পর উত্তরাঞ্চলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানুষের কৃষি জমি ডুবে ফসল নষ্ট হয়, খামারগুলো নষ্ট হয়ে হাঁস-মুরগির সরবরাহ ব্যবস্থায় ঘাটতি দেখা দেয়। তাছাড়া দেশের সিন্ডিকেট ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় পণ্যের দাম কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

ওদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়িয়ে চলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংক ঋণের সুদহার ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যে সুদের হার প্রায় ১৬ শতাংশে উঠেছে। গত দেড় বছরের কম সময়ে সুদহার বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি লাগাম ছাড়িয়ে গেলেও বিবিএসের তথ্য বলছে, অক্টোবরে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশে নেমেছে, যেটি আগের মাস সেপ্টেম্বরেও ছিল ৯ দশমিক ৫ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতির ধকল শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষের বেশি। তথ্য বলছে, অক্টোবরে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হয়েছে। এ মাসে গ্রামাঞ্চলে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বিপরীতে একই সময়ে দেশের শহর এলাকাগুলোতে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংক ঋণের সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশ বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে মেয়াদি আমানতের সুদহার ৬ শতাংশ বেঁধে দেয়া হয়। এরপর দীর্ঘ তিন বছরের বেশি সময় ধরে ঋণ ও আমানতের সুদহার এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতি নানা সংকটে পড়লে গত বছরের জুলাই থেকে স্মার্ট পদ্ধতির আওতায় সুদের হার বাড়াতে শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর আইএমএফের ঋণের শর্ত পূরণে চলতি বছরের মে মাসে সুদের হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়। সেইসঙ্গে উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির আওতায় নীতি সুদহার কয়েক দফা বাড়ানো হয়। এতে ব্যাংক ঋণের সুদহার ক্রমাগত বাড়তে থাকে এবং গত মাসে তা প্রায় ১৬ শতাংশে উঠেছে।

সর্বশেষ গত ২২শে অক্টোবর নীতি সুদহার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা ২৭শে অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। এতে সব ধরনের ঋণের সুদের হার চলতি মাসে আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি হওয়া অস্বাভাবিক নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, অসময়ে বন্যার কারণেই বর্তমান মূল্যস্ফীতি উচ্চ। বন্যায় সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হয়েছিল। মাছের খামার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ডিমের দাম বেড়েছে। সেক্ষেত্রে এই প্রভাব তো পড়বেই। তবে মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধিটা সাময়িক। তিনি আরও বলেন, জুলাই থেকে মূল্যস্ফীতির ইন্ডিকেটর আর নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। আগে মূল্যস্ফীতির ইন্ডিকেটর নিয়ন্ত্রিত ছিল। সেক্ষেত্রে আগের বছরের সঙ্গে তুলনা করলে মূল্যস্ফীতি বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।  সূত্র : মানবজমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়