মহসিন কবির : পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে মানববন্দন ও বিক্ষোভ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। সোমবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর পতন হলে রাস্তায় নামেন বিনিয়োগকারী। লাগাতার দরপতনের কারণ খুঁজে বের করতে কমিটি গঠন করেও পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। উভয় মানববন্ধন থেকেই বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করা হয়। কিন্ত কেন বার বার সেই প্রশ্ন বিনিয়োগকারীদের। যাকে পুঁজিবাজার দেখার দায়িত্ব দেওয়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠে দাবি করা হয় পতদ্যাগ। বিনিয়োগকারীদের একটাই প্রশ্ন এর কোন সমাধান নেই।
আগের দিন প্রায় ৩ শতাংশের পর সোমবার ফের ১ দশমিক ৫ শতাংশের মতো সূচক কমেছে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নানা অনিয়মে জর্জরিত পুঁজিবাজার নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করা হলেও তা হয়নি। দরপতনের মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, গত এক মাসের মধ্যেই শতাধিক পয়েন্টের বেশি সূচক কমেছে কয়েকবার।
রোববার (২৭ অক্টোবর) এক দিনেই ১৪৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯১ শতাংশ কমে সূচকের অবস্থান দাঁড়ায় ৪ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে, যা ২০২২ সালের ২ ডিসেম্বরের পরে সর্বনিম্ন। এর প্রতিবাদে রাজধানীর মতিঝিলে বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেন বিনিয়োগকারীরা। এমন দরপতনকে অস্বাভাবিক মনে করে কারণ খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে খোদ বিএসইসি। তবে এতেও রক্ষা হয়নি।
সোমবার লেনদেনের শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬০ পয়েন্টের বেশি কমে যায়। মাঝখানে ঘুরে দাঁড়ালেও দিন শেষে ৬৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে সূচক। সাধারণ সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে, যা ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বরের পর সর্বনিম্ন। ওই দিন ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৪ হাজার ৮৬৬ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১০৫ টির, কমেছে ২৪৬ টির এবং ৪৬ টির দর অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেনের পরিমাণ সামান্য বেড়ে ৩৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা হয়েছে, যা আগের দিনে ছিল ৩০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। দরপতনের কারণে বাজার মূলধন এক দিনেই কমেছে ৩ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে ঐক্য পরিষদের অর্থ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান বলেছেন, পুঁজি রক্ষায় কারও কোনো উদ্যোগ নেই। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের একটাই দাবি, বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ।
পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাওয়ার কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলছেন, দরপতনে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু শেয়ার কেনার লোক নেই। অনেক বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও হিসাব বন্ধ করে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আবার সাইডলাইনে থেকে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। ফোর্সড সেলের মধ্যে পড়তে হচ্ছে অনেককে। এতে প্রতিনিয়ত বিক্রির চাপে দরপতনের সৃষ্টি হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :