শাহীন খন্দকার: গত সপ্তাহে নিত্যপণ্যেও বাজারসহ সবজি মাছ মাংসের দাম কিছুটা কম থাকলেও আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারসহ কাচাঁবাজারের! কিছুতেই স্বস্তি ফিরছে না বাজারে। একদিকে দাম কমলেও অন্যদিকে শুরু হয় বাড়ানোর পায়তারা।
দ্রব্যমূল্য নিয়ে বরাবরই ভোক্তাদের অভিযোগ থাকলেও নানা অজুহাত নিয়ে বিক্রেতারাও থাকেন সদা প্রস্তুত। শুক্রবার সকালে রাজধানীর শেখেরটেক, টাউনহলবাজার, কৃষি বাজারসহ মোহম্মদপুর এলাকা কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৮০ টাকা করে, যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৬৫-১৭০ টাকা।
এদিকে বিক্রেতাদের দাবি, সম্প্রতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সবজির বাগান, মাছের ঘের ও মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৮০-৩০০ টাকার মধ্যে। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। খাসির মাংস ১০৫০-১১০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। এর মুল কারণ বাজারে কমে গেছে পণ্যের সরবরাহ। যার জন্যে দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।
অন্যদিকে মাছের বাজারে পাঙাশ, তেলাপিয়া ছাড়া আর কোনো মাছ-ই স্বস্তির দেখা যায়নি। বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ ১৭০-১৮০ টাকা তেলাপিয়া ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-২৭০ টাকা, চাষের শিং ৩৫০-৪০০ টাকা, সাগরের পোয়া ৪০০-৬৫০ টাকা ও বাইলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৭০০ টাকায়।
কৃষিবাজারের মুরগির মাংস বিক্রেতারা বলেন, গত কয়েকদিনে তুলনায় আজ ব্রয়লার মুরগির দামটা একটু বেশি। গত সপ্তাহেও ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। আজকে ১৮০ টাকা। বাজারে মুরগির চাহিদা বেশি, কিন্তু সে অনুযায়ী সাপ্লাই নেই।
কারণ জিজ্ঞেস করলে ব্যবসায়িরা জানিয়েছেন, বন্যার কারণে অনেক খামারির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যে কারণে সেই চাপটা এসে পড়েছে বাজারে। আরও বলেছেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মাংসের চাহিদাটা একটু বেড়ে যায়। বাজারে যদি সেই পরিমাণে সরবরাহ না থাকে তাহলেই দাম বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার থাকে না।
বাজার করতে আসা গৃহিনী সুষমী আফরোজ বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি কিন্তু আমাদের আয় তো বাড়েনি। তিনি বলেন, যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো মানুষদের কিছুই কিনে খাওয়ার উপায় নেই।
বাজারে শীতকালীন সবজি শিম ২০০ টাকা কেজি, ফুলকপি প্রতিটি ৪০-৫০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১২০-১৫০ টাকা এবং গাজর ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১০-২০ টাকা, ধনে কাঁচা কলার হালি ২০-৪০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫-২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১০০-১২০ টাকা, আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা এবং আলু কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা আরও বলছেন, কচুরমুখীর কেজি ৬০-৭০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপের কেজি ৩০-৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৮০ টাকা আর কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :