শিরোনাম
◈ ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’র নাম পরিবর্তন ◈ হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক ◈ গত ১৫ বছর বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে তাঁবেদারি করেছে : প্রেস সচিব  ◈ উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ ভাতা বৃদ্ধির দাবীতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেছেন চিকিৎসকরা ◈ রাজধানীর যেসব সড়ক কাল বন্ধ থাকবে, বিকল্প পথে চলার পরামর্শ ◈ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে কৌশলের কথা জানালেন ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি নিয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও) ◈ রাখাইন রাজ্যের মিলিটারি সদরদপ্তর আরাকান আর্মির দখলে, সতর্ক উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত ◈ লন্ডন-যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ কোটি টাকা পাচার : হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৪:৪৬ দুপুর
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শ্রমিক অসন্তোষে শতাধিক পোশাক কারখানা ব্ন্ধ

এম এইচ বাচ্চু : দেশের কয়েক জায়গায় পোশাক শিল্প শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তারপরও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করছে। সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও কারখানায় আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। 

টানা কয়েক দিনের সংঘর্ষ আগুন দেওয়ার ঘটনায় পর শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া, সাভার ও জিরানি এলাকায় ১১১টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি কারখানা অনির্দিষ্টিকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুরে বিভিন্ন দাবিতে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্দোলনে নামেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় তারা বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে বিগবস করপোরেশন নামে একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে কারখানার কেমিক্যাল গুদাম ও ওয়্যারহাউসে রাখা মালামাল পুড়ে যায়।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেছেন, বিগবস নামে একটি কারখানায় আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলের দিকে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আমাদের একটি গাড়ি ভাঙচুর করলে কর্মীরা চলে আসেন। ফের কাশিমপুর ও ডিবিএল ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিভাতে কাজ শুরু করে। পরে বিকালের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ন্যূনতম বেতন ১ হাজার ৮০০ টাকা, ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে অভারটাইমের বিল দ্বিগুন, সরকারি সব ছুটির সুযোগ, ছাঁটায়ের ক্ষেত্রে আইন অনুসরণসহ বিভিন্ন দাবিতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা মাঠে নামেন। আন্দোলনের জেরে এরই মধ্যে জেলার পাঁচটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার একদিনের জন্য বন্ধ রাখা হয় ২৫টি কারখানা।

শিল্প পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। পরে সেনাবাহিনী এসে মালিক এবং শ্রমিকদের সঙ্গে বসে দাবির বিষয়ে সমাধানের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।

অন্যদিকে আগস্ট মাসের বেতন দাবিতে সারাবো এলাকায় বিক্ষোভ করেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন তারা। এতে ওই সড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা কোনাবাড়ী থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যদের কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে বিকালের দিকে সেনাবাহিনী গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের (জোন-২) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকে বলেছেন, বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ বলছে তারা বেতন দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের সময়ই দিচ্ছেন না। তবে বুধবারের মধ্যেই সবার বেতন পরিশোধ করা হবে বলে আশা করছি। অন্য যেসব কারখানায় আন্দোলন চলছে, সেখানে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে আশুলিয়ায় প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে বেতন দিতে না পারায় গতকাল বুধবার বন্ধ রাখা হয় সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ৩৩টি কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করেন প্রায় ৪৮ হাজার শ্রমিক। বেতনের দাবিতে গতকাল মহাসড়ক অবরোধ করেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বিএফআইইউ বেক্সিমকোর প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্ট জব্দ করায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবে বুধবার তারা নিশ্চিত হন অবরুদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক হিসাব অবমুক্ত করা হয়েছে। বিকালের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা করেন তিনি।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ৫৪টি পোশাক কারখানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আরও ২৫টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে।

তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, অদৃশ্য শক্তি গোটা শিল্পাঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। তৈরি পোশাক শিল্প দেশের লাইফ লাইন। এ শিল্পের ক্ষতি হলে সেটা দেশের অর্থনীতিকেই মোটা দাগে ক্ষতি করবে। উৎপাদনের পরিবেশ বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়