শাহীন খন্দকার: বাজারে সবজির দাম কমেছে। ব্যবসায়িরা বলছেন, উৎপাদন স্থলে কাঁচামাল কম দামে বিক্রি হচ্ছে । সেই সঙ্গে পণ্য পরিবহনে গত কয়েকদিন ধরে ব্যবসায়ীদেও কোন চাঁদা দিতে হচ্ছে না বলেই সবজির দাম কমেছে।
আজ রাজধানীর বাজারগুলোতে ঘুরে গত সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। একইসঙ্গে বাজারগুলোতে সোনালি কর্ক মুরগি, লাল লেয়ার ও দেশি মুরগির দাম ও কমেছে। কিন্ত ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না!
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর কৃষি বাজার আদাবর বাজারসহ ফুটপাতের এবং ভ্যান বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। ঢাকার পাড়া মহল্লার বাজার ঘুরে দেখা গেছে সরবরাহ বাড়ায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। ইতিমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতের সবজি।
তবে কচুরমুখী ৫০-৬০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৪০-৬০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, কাঁকরোল ৫০-৬০ টাকা, পটল ৩০-৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০-৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৮০ টাকা, ঝিঙা ৫০-৬০ টাকা ও শসা ৪০-- ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
শীতের ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা পিস, পাকা টমেটো ১৫০-২০০টাকা ও গাজর ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১৫-৩০ টাকা, এছাড়া কাজকলা হালি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৩০-৫০ টাকা। লালশাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১৫ টাকা, পালংশাক ১৫-২০ টাকা, কলমি শাক ১০টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা কমে ১১৫ টাকা দরে ও আলু কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর দাম বাড়তি থাকার কারণে অনেক কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা কাঁচামরিচ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগিও কেজিতে ২০ টাকা কমে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ২৯০ টাকা ও সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস কেজি ৬৫০-৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০-৪০০ টাকা ও খাসির মাংস প্রতি কেজি ১ হাজার ১৫০-১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মাছের বাজারে ইলিশের সরবরাহ থাকলেও দাম কমেনি। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১ হাজার ১০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রামের মাছ ১ হাজার ৪০০-১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।
অন্যান্য মাছ আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বাজারগুলোতে প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, চাষের পাঙাস ১৯০ থেকে ২২০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।
তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কই মাছ ২১০ থেকে ২২০ টাকায়, মলা ৬০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়। এছাড়া ৫ কেজি সোয়াবিন তেলের ক্যান ৮১৮ টাকা।
এদিকে বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, রাস্তাঘাটে এখন চাঁদাবাজি নেই। তবে সহিংসতা ও ডাকাতির আশঙ্কায় পণ্য পরিবহনে রাজি হচ্ছেন না, অনেক ট্রাকচালক। ফলে বিভিন্ন উৎপাদনস্থল বা মোকামে ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। এটাও পণ্যের দাম কমার আরেকটি কারণ।
কৃষি বাজার ও ভ্যান ব্যাবসায়িরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের পর বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতাকর্মী ও পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে। তবে গত তিন দিনে নতুন করে চাঁদাবাজির চেষ্টা করেছে কিছু ব্যক্তি।
এসব ব্যক্তি নিজেদের বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী বলে ব্যবসায়ীদের কাছে পরিচয় দিচ্ছেন। কেউ কেউ চাঁদার টাকা পাঠানোর জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে বিকাশ নম্বরও দিয়ে গেছেন। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নিকট নাম বলতে নিষেধ করেও দিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাবসায়ীরা।
আপনার মতামত লিখুন :