মনজুর এ আজিজ: [২] দেশে মারাত্নক গ্যাস সংকটের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিতে গ্রিডে শিগগিরই যুক্ত হচ্ছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির কৈলাশটিলা কূপ-৮। এ কূপটি দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রস্তুত। যে কোনোদিন উদ্বোধন করা হবে বলে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
[৩] কৈলাশটিলা-৮ নম্বর কূপ খনন করার জন্য রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্সকে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। বাপেক্স চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি কূপটির খনন কাজ শুরু করে। কূপটির ৩ হাজার ৪৩৮.৪ মিটার গভীরতা থেকে ৩ হাজার ৪৪৬.৫ মিটার পর্যন্ত গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ২৪ মে ডিএসটি (ড্রিল স্টেম টেস্ট) এবং প্রোডাকশন টেস্টিংয়ে কূপ মুখে ফ্লোয়িং প্রেসার ৩ হাজার ৩৮৩ পিএসআই (প্রেসার বর্গ ইঞ্চি) পাওয়া যায়। কূপটি থেকে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয়েছে।
[৪] এসজিএফসিএল জানিয়েছে, কৈলাশটিলার অবশিষ্ট উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুত রয়েছে ১ হাজার ৯শ বিলিয়ন ঘনফুট। ৮ নম্বর কূপে প্রাপ্ত হরাইজোন ৪-এর গ্যাস মজুত ২৪-২৫ বিলিয়ন ঘনফুট, যা নতুন মজুত হিসেবে যুক্ত হলো। নতুন সংযোজিত গ্যাসের দাম ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা (প্রতি ঘনমিটার ২২.৮৭ টাকা বিবেচনায়)। অন্যদিকে কূপটির খনন কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭২ কোটি টাকা।
[৫] গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত উৎপাদন কমে যাচ্ছে। উৎপাদন কমতে কমতে ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। সংকট সামাল দিতে বিদেশ থেকে ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট (এলএনজি আকারে) গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। তারপরও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না ঘাটতি পূরণ করতে। দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে দৈনিক ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি করা হয়।
[৬] ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’-এ সামিট গ্রুপের ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই এফএসআরইউটি (ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট) থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সারাদেশেই তার প্রভাব পড়েছে।
[৭] ১৫ জুলাই নাগাদ এ পাইপ চালু হওয়ার কথা ছিল কিন্তু মেরামত না হওয়ায় এখনো সার্ভিসের বাইরে রয়েছে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি। আমদানি করতে টেকনিক্যাল জটিলতার পাশাপাশি বিদেশ থেকে উচ্চদরে এলএনজি আমদানি ব্যয় সামাল দিতে গিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তেমন একটি সময়ে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া বিশাল স্বস্তির খবর বলে মানতে হবে।
[৮] কৈলাশটিলার পাশাপাশি বন্ধ থাকা সিলেট-৭ নম্বর কূপে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। কূপটির ওয়ার্কওভার কাজ শুরু হয়েছে। দৈনিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এমএএ/কে/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :