শিরোনাম

প্রকাশিত : ১০ জুলাই, ২০২৪, ০২:৪২ দুপুর
আপডেট : ২০ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

লক্ষ্মীপুরে থাই গোল্ড জাতের কচু চাষ করেছেন চাষী সিরাজুল ইসলাম

জাহাঙ্গীর লিটন, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের উত্তর জয়পুর গ্রামে থাইল্যান্ড থেকে আনা থাই গোল্ড জাতের পানি কচু চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন জেলার সফল কৃষি উদ্যোক্তা সিরাজুল ইসলাম। চলতি বছর সিরাজুল ইসলাম তার বন্ধুর মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে ২৮০ টি থাই গোল্ড জাতের কচুর চারা এনে বাড়ির পাশ্বের ৫ শতাংশ জমিতে চাষ করেন। পরবর্তীতে সে চারা গজিয়ে বর্তমানে একবিঘা জমিতে প্রায় ২ হাজার কচু উৎপাদন করেছেন। 

সিরাজুল ইসলাম জানান, এ জাতের প্রতিটি কচুর উচ্চতা ১২ ফুট পর্যন্ত এবং কাঠের ওজন( ডাল ছাড়া মুল কচু) ৪০ কেজি পর্যন্ত  হয়ে থাকে। এ ছাড়া প্রতিটি লতির দৈর্ঘ ৪ফুট ও বেড় ১২ মিলি মিটার হয়ে থাকে। বর্তমানে তার চাষকৃত একটি কচুর ওজন ৪ মাসে ২০ থেকে ২৫ কেজি ও উচ্চতা প্রায় ৮ ফুট পর্যন্ত হয়েছে এবং ৮ থেকে ১০ পিস লতির ওজন ১ কেজি হয়েছে। 

তিনি আশা করছেন আগামী চার মাসের মধ্যে তার চাষকৃত প্রতিটি কচু ৪০ কেজি ওজন হবে। 

সিরাজুল ইসরামের কচু চাষের সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক চাষী ও সব বয়সী সাধারণ মানুষ এক নজর সিরাজুল ইসলামের কচু ক্ষেতি দেখতে ছুটে আসছেন। 

তিনি জানান, ইতিমধ্যে ১০ জন চাষীকে এ কচুর চাষ করার জন্য চারা দিয়েছেন। তার কচু ক্ষেতে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক লোক ঢুকে হাত উঁচু কররেও বাহির থেকে দেখা সম্ভব হয়না।

লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উত্তর জয়পুর দৌলত বাড়ির স্কুল শিক্ষক মরহুম আজহারুল ইসলাম মাষ্টারের ৩য় পুত্র সিরাজুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এর চাকুরী ছেড়ে বাড়িতে এসে শখের বসে নার্সারী দিয়ে বিভিন্ন জাতের ফলজ, বনজ, ফুল ও সবজির চারা উৎপাদন শুরু করেন। 

পাশাপাশি তিনি এলাকার আগ্রহী যুবকদের হাতে কলমে চারা উৎপাদন করা শিখাতে থাকেন। তার কাছে চারা উৎপাদন শিখে ইতিমধ্যে ৫০ জন বেকার যুবককে স্বালম্বি করেগড়ে তুলেছেন। তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার।

সিরাজুল ইসলাম বর্তমানে লাউ, কলা, লেবু চাষ করে যাচ্ছেন। কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন ফসল চাষ করে স্বাবলম্বী সিরাজুল ইসলাম ইউটিউবে থাইগোল্ড জাতের কচুর চাষ দেখে তিনি তার বন্ধুর মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে এ কচুর চারা সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেছেন। 

সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজারে তার উৎপাদিত কচুর লতি নিয়ে গেলে মানুষ এক নজর তার উৎপাদিত কচুর লতি দেখার জন্য ভীড় জমিয়ে ফেলেন। বর্তমানে তিনি তার ক্ষেতে উৎপাদিত কচু বিক্রি শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ২০টি কচু চার হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর কচু চাষ থেকে তার ৬ লাখ টাকা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এলাকার আরেক সবজি চাষী মো. শরীফ বলেন, সিরাজুল ইসলাম থেকে তিনি ইতি মধ্যে থাই গোল্ড জাতের কচুর চারা নিয়ে লাগিয়েছেন। সিরাজুল ইসলাম একজন সফল উদ্যোক্তা। তার কাছে কৃষি চাষাবাদ বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে অনেকেই আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন।

উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের কৃষি ব্লক সুপার ভাইজার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ জাহান বলেন, সিরাজুল ইসলামের কচুর ক্ষেত আমি সরেজমিনে দেখে এসেছি। এ কচুর চাষ সম্প্রসারণে সহযোগীতা করবো। 

সফল চাষী লক্ষ্মীপুর জেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডির) সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, তার জানা মতে তিনিই প্রথম দেশে থাই গোল্ড জাতের কচুর চাষ শুরু করেছেন। দেশের চাষীদের মধ্যে এ কচু চাষ বিস্তারে তিনি সব ধরনের সহযোগীতা করবেন।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়