শিরোনাম
◈ বিভিন্ন মামলায় নিরীহদের আসামি করা হচ্ছে: আইজিপি ◈ কাশ্মীর সংকট নিয়ে চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে ফোনালাপ, কি কথা হলো? ◈ যেভাবে জন্ম নিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি ◈ বজ্রপাতে কুমিল্লায় স্কুলছাত্রসহ ৪ ও কিশোরগঞ্জে ৩ জনের মৃত্যু ◈ ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন, যা বললেন আইন উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ অর্থনীতিকে ফিরিয়ে আনছেন ইউনূস, রাজনৈতিক দলগুলো চায় দ্রুত নির্বাচন ◈ বিএনপির ৩ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা ◈ পাকিস্তানে হামলা করবে ভারত, নিউইয়র্ক টাইমসের চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন ◈ অর্থ কামানোই প্রধান লক্ষ্য, ২০২৪ সালে সাইবার হানার ধরন পাল্টেছে! ◈ রাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্ক্যাবিস ছড়িয়ে পড়েছে, মেডিকেল সেন্টারে মিলছে চিকিৎসা

প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:১৫ রাত
আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফরিদপুরে পৃথক তিনটি স্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত ৫০

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি:ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার, বাসস্ট্যান্ড দখল ও তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে পৃথক তিনটি স্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় নারী পুরুষ সহ কমপক্ষে ৫০ জন গ্রামবাসী আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে প্রায় ২০টি বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও ৫টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে গ্রামবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করেছে। এ ঘটনায় পুকুরিয়া এলাকা থেকে ৮জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া বাজার ও বাসস্ট্যান্ড দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে দুই পক্ষের ১০টি বাড়ি ভাংচুর, লুঠপাট  ও ৫টি বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে প্রতিপক্ষের লোকজন। 

আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ পক্ষের সুলতান মাতুব্বর ও মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর পক্ষের ইয়াকুব মাতুব্বর গ্রুপের মধ্যে পুখুরিয়া বাজার ও বাসস্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিগত ১৭ বছর ধরে প্রতিমাসে বাজার ও বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা ও খাজনা আদায় করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ ভাগবাটোয়ারা করে নেয় । রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে বিএনপির লোকজন তাদের দুই পক্ষের সাথে মিলিত হয়।

এঘটনা নিয়ে শনিবার রাতে ইয়াকুব মাতুব্বর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রে নিয়ে অপর পক্ষে সুলতান মাতুব্বরের দলের জামাল মাতুব্বরের বাড়ি ভাংচুর চালায়। এঘটনার জের ধরে ঘোষণা দিয়ে রবিবার সকালে  দুই পক্ষের শত শত গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র  নিয়ে তিন ঘন্টাব্যাপী  চলা সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় ভাঙ্গা-সদরপুর সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের ১০টি বাড়ি ভাংচুর, লুঠপাট  ও ৫টি বাড়ি  অগ্নিসংযোগ করে প্রতিপক্ষের লোকজন। 

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে ফরিদপুর জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্য এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এসময় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা একজন মহিলা সহ ৮ জনকে আটক করে।

অপর দিকে, রবিবার সকালে ভাঙ্গা উপজেলা আলগী ইউনিয়নের সুয়াদি গ্রামে আমপাড়া নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সুযাদী গ্রামের আলী মিয়া লোকজন ও দেলোয়ার মিয়ার গ্রুপের লোকজন বেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় এলাকায় রণক্ষেত্র পরিনত হয়।  সংঘর্ষে চলাকালে দুই পক্ষের প্রায় ৩০ জন গ্রামবাসী আহত হয়। আহতদের ভাঙ্গা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে আলীমিয়ার দলের শাজাহান মিয়ার আম গাছে দেলোয়ার মিয়া দলের সোহাগের ছেলে তানভীর কয়েকটা আম পাড়ে। আমপাড়া নিয়ে গাছের মালিক শাহজাহান এসে তানভীরকে চড়থাপ্পড় মারে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে দেলোয়ারের লোকজন বেশীয় অস্ত্র নিয়ে আলী মিয়ার লোকজন উপর হামলা চালায়। পরে দুই পক্ষের লোকজন ২ ঘণ্টা ব্যাপী সংঘর্ষে ১০ জন গ্রামবাসী আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

অন্যদিকে, শনিবার রাতে ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নারী সহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০/১৫ জন গ্রামবাসী আহত হয় ।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, আজিমনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর মাতুব্বর ও একই গ্রামের ফারুক ফকিরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিকেলে  বিরোধপূর্ণ জমির মাপঝোপ করার জন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বৈঠক করা হয়। সালিশের  উপস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।  উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র অস্ত্র, লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল  নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। রাতে আহতরা ভাঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় আবারো দুই পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে।  সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০/১৫ জন লোক আহত হয়। আহতদেরকে ভাঙ্গা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে । দুই পক্ষের ২টি মামলা দায়ের করেছে।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, গত দুদিন ধরে পুখুরিয়া, শুয়াদী ও আজিমনগর গ্রামের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশের পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে পুকুরিয়া এলাকা থেকে ৮জনকে আটক করেছি। এঘটনায় ভাঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে। দাঙ্গা হাঙ্গামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়