শিরোনাম

প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:২৯ দুপুর
আপডেট : ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিরলে কৃষক ভবেশের মৃত্যুর ৪ দিন পর থানায় হত্যা মামলা

এম, এ কুদ্দুস, বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরলে কৃষক ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুর ৪ দিন পর থানায় মামলা দায়ের করেছেন মৃতঃ ভবেশের একমাত্র ছেলে স্বপন চন্দ্র রায় (২৮)। ২১ এপ্রিল সোমবার তিনি বাদী হয়ে ৪জন আসামী করে বিরল থানায় পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২/৩৪  ধারায় মামলা নং-২০  দায়ের করেন।

মামলার আসামীরা হলো- উপজেলার ৪নং শহরগ্রাম ইউপি’র বাসুদেবপুর গ্রামের মৃতঃ আব্দুল কাদেরের ছেলে আতিকুর ইসলাম (৪০) , শহরগ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে রতন ইসলাম (৩০), মুন্না ইসলাম (২৭) ও পাঁচশালা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে রুবেল (২৮)। তবে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই মামলায় ৪ জনের মধ্যে কোন আাসমী গ্রেফতার হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

বাদীর দায়েরকৃত এজাহার সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হলো, বাদী স্বপন চন্দ্র রায় এজাহারে বলেন, আমার বাবা ভবেশ চন্দ্র রায় (৫৫) কৃষি কাজ করতেন এবং সেই সাথে তিনি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, বিরল উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন।

উপজেলার শহরগ্রাম ইউপি’র বাসুদেবপুর গ্রামের মৃতঃ আব্দুল কাদেরের ছেলে ১নং আসামী আতিকুর ইসলাম (৪০) ও শহরগ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে ২নং আসামী রতন ইসলাম (৩০) দীর্ঘদিন যাবৎ তারা নিজ এলাকায় সুদের ব্যবসা করে আসছিল। ১ বছর পূর্বে আমার বাবা সমস্যার কারণে ১নং আসামী আতিকুরের কাছে সুদের উপরে (লাভ দেয়ার কথা বলে) ২৫ হাজার টাকা ঋণ বা ধার নেয় নেয়। আমার বাবা এই টাকার সুদ হিসাবে প্রতি মাসে ৩,২৫০ টাকা আতিকুরকে দিত।

এভাবে চলতে থাকা অবস্থায় গত ১৭-৪-২০২৫ ইং তারিখ বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪ টার সময় উল্লেখিত আসামীদ্বয়সহ নওসিংপাড়া গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে ৩নং আসামী মুন্না ইসলাম (২৭) ও পাঁচশালা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে ৪নং আসামী রুবেল (২৮) দুইটি মোটরসাইকেল নিয়ে আসে এবং প্রয়োজনীয় কথা আছে বলে আমার বাবাকে সু-কৌশলে বাড়ী থেকে নিয়ে যায়। তারা আমার বাবাকে নিয়ে যাবার পর আমার বাবার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মোবাইলে কল দেয়ার জন্য আমি বার বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই।

আসামীরা আমার বাবাকে ডেকে নিয়ে নাড়াবাড়ী এলাকার অজ্ঞাত স্থানে সুদের টাকার জন্য শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হত্যার উদ্দেশে মারপিট করে। ফলে আমার বাবা অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। আমার বাবা অসুস্থ্য হবার পর একই তারিখ রাত আনুমানিক ৭.৪৭ টার সময় আমার বাবার মোবাইল নম্বর ০১৭৩৪৯৯৭০৯৩ থেকে আমার ০১৫২১৭৭২৭৮০ মোবাইল নম্বরে ফোন আসে। আমি ফোনটি বিচ্ছিন্ন করে পুনরায় ফোন দিলে ২নং আসামী রতন ফোনটি রিসিভ করে বলে আমি রতন বলছি তোমার বাবা ভবেশ চন্দ্র রায় নাড়াবাড়ী বাজারে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। তুমি তাকে নিয়ে যাও। আমি রতনকে বলি যে আমি দিনাজপুর শহরে আছি। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে আমার সময় লাগবে। তাই যে ভাবে হোক আমার বাবাকে বাড়ীতে পৌঁছে দেন।

এ সময় ০১৭৮৬৯৮৫১৯৩ নম্বর হতে আমার নম্বরে ফোন আসে এবং একই কথা বলে। আমি একই কথা বললে সকল আসামী একটি ভ্যান যোগে আমার বাবাকে ফুলবাড়ী বাজারে এনে রাস্তার পাশে ফাকা জায়গায় রাখেন। এসময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সকল আসামী পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি ঘটনার বিষয় স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পেরে দিনাজপুর শহর থেকে এম্বুলেন্স ভাড়া করে নিয়ে দ্রুত ফুলবাড়ি বাজারে যাই।

সেখানে গিয়ে আমার মা এবং অন্যান্য স্বাক্ষীগণসহ আমার বাবাকে এ্যাম্বুলেন্স যোগে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার বাবার পালস সস্পর্শ বলেন আমার বাবা আগেই মারা গেছেন। এরপর আমার বাবার ময়না তদন্ত করে পরদিন ১৮-৪-২০২৫ ইং তারিখ অনুমান ৬ টার দিকে আমার বাবার মরদেহ আমাকে হস্তান্তর করলে একই তারিখ রাত ৭ টা হতে ১১ টা পর্যন্ত বাসুদেবপুর তুলাই নদীর পাড়ে থাকা শ্মশান ঘাটে আমার বাবার সৎকার কাজ সম্পূর্ন করি।

উপরোক্ত আসামীগণ আমার বাবাকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে নাড়াবাড়ী এলাকার অজ্ঞাত স্থানে গিয়ে গত ১৭-৪-২০২৫ ইং তারিখ বিকাল ৫.৩০ টা হতে রাত ৭.৪০ টার মধ্যে যে কোন সময় পরিকল্পিত ভাবে মারপিট করে হত্যা করেছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়