আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর) : যশোরের শার্শা উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে মানবাধিকার সংস্থা 'রাইটস যশোর' এর কোয়াটারলি ইনফরমেশন শেয়ারিং মিটিং।
বুধবার সকালে শার্শা উপজেলা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ সংস্থাটির তথ্য বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা।
রাইটস যশোরের হোম ম্যানেজার ইউনুছ আলী সরদার এবং ম্যানেজার মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন দেবব্রত ঢালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন, শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজীব হাসান। বিশেষ অতিথি রাইটস যশোরের ডেপুটি ডিরেক্টর এসএম আজহারুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাহান ই গুলসান, উপজেলা আনসার ভিডিপি কমান্ডিং অফিসার শাহিনা আক্তার, গণমাধ্যমকর্মীরা, বেনাপোল ইমিগ্রেশন, পোর্ট থানা ও শার্শা থানার পুলিশ প্রতিনিধিরা এবং উপজেলার বিভিন্ন অধিদপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাসহ রাইটস যশোর সংস্থার প্রতিনিধিগণ।
শার্শা উপজেলার ইউএনও কাজী নাজীব হাসান বলেন, বেনাপোলে গঠিত হাফ ওয়ে শেল্টার হোমে নারী ও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা, ছেলেটারিং, মানসিক উন্নয়নমূলক খেলাধুলা এবং আয়ের উৎস তৈরিতে সহায়ক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।"মানবাধিকার বিষয়ে যেকোনো সহযোগিতায় সরকার সামনের দিনেও পাশে থাকবে।
জানা যায়, রাইটস যশোর ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৩ সালের ২১ মার্চ সমাজসেবা অধিদপ্তরে ও ১৯৯৮ সালের ২৬ অক্টোবর এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধিত হয়। সংস্থাটি দীর্ঘ তিন দশক ধরে দেশের সীমান্তবর্তী ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মানব পাচার প্রতিরোধ, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধে কাজ করছে। রাইটস যশোরের কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে KOICA ও IOM।
সংস্থার ভিশন হলো এমন একটি সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল মানুষ সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে নিরাপদ থাকবে। নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংস্থাটি গঠন করেছে Counter Trafficking Women’s Forum (CTWF), যারা ট্রাফিকিং ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রাইটস যশোর বর্তমানে ৭৭ জন পূর্ণকালীন স্টাফ, ৪ জন পার্টটাইম অ্যাডভোকেট এবং ৩২০ জন স্বেচ্ছাসেবকের সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে। সংস্থার কার্যক্রম বর্তমানে ৬টি জেলায় পরিচালিত হচ্ছে এবং সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, লিবিয়া, লেবাননসহ বিভিন্ন দেশে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
প্রতিষ্ঠানটির সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে জরুরি আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা, মনোসামাজিক কাউন্সেলিং, শিশু ও নারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়, পুষ্টিকর খাবার, বিনোদনমূলক কার্যক্রম, আইনি সহায়তা ও সক্ষমতা উন্নয়ন। গত বছরে সেপ্টম্বর থেকে চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত রাইটস যশোর কর্তৃক সেবাপ্রাপ্ত ভিকটিমের সংখ্যা ১২১ জন, যার মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ, ২৪ জন নারী এবং ৪৮ জন শিশু।